পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুর্নীতির দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত সাময়িক বরখাস্ত হওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা মেট্রোপলিটন জোন) প্রদীব কুমার বসু এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন এবং দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বিরুদ্ধে নতুন করে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবকে দেয়া হয়েছে। দুর্নীতির দায়ে একাধিক বার শাস্তিপ্রাপ্ত এই অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনে অতিরিক্ত প্রদান প্রকৌশলী হিসাবে যোগ দিয়ে এসব অপকর্ম করছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। জানা গেছে, গত ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহিদুল্লাহ খন্দকার স্বাক্ষরিত নং-স্বারকে২৫.০১৮.০০৫.০০২.০২১.২০১৬.৩৪৬ এক পত্রের মাধ্যমে তাকে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। গোপালগঞ্জে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত থাকাকালীন প্রদীপ কুমার বসুর তত্বাবধানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে প্রতিষ্ঠিত চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের কিছু কাজ ত্রু টিপূর্ণ সম্পূর্ণ করা হয়। অভিযোগ ছিল যে, প্রদীপ কুমার বসু শেখ ফজিলাতুন্নেছা চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের বাউন্ডারী ওয়াল, মাটি ভরাট, ভবনের ছাদ, ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, রিজার্ভ ট্যাংকির কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ঠিকাদারকে বিল প্রদান করেন।
এছাড়া ওই প্রকল্পে সোলার প্যানেল স্থাপনে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে প্রদীপ কুমার বসুর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সুস্পস্ট প্রমাণ পেলে ২০১৬ সালের ২৩ জুন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহিদুল্লাহ খন্দাকর স্বাক্ষরিত অন্য একটি পত্রের মাধ্যমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় যার স্মারক নং- ২৫.০০.০০০০.০১৩.৯৯.০০৯.১৬-৭৯ এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এছাড়া তার ইনক্রিমেন্ট স্থগিত রাখা হয়। পরবর্তীতে কোন এক অদৃশ্য হাতের ইশারায় দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃত প্রদীপ কুমার বসুর চাকরি পূর্ণ বহাল করা হয়।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা মেট্রোপলিটন জোন) প্রদীব কুমার বসু ইনকিলাবকে বলেন, আমি কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি করিনি। অভিযোগের বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই।
অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, প্রদীপ কুমার বসু গণপূর্ত বিভাগ-১, খুলনায় উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায়ও ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মে যুক্ত হয়ে পড়েন। খুলনা মেডিকেল কলেজের আইসিইউ এবং ক্যাজুয়ালিটি ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মে তার সংশ্লিষ্ঠতার প্রকাশ পাওয়ায় তৎকালীন গণপূর্ত খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মনজুর মোর্শেদ আনোয়ার, খুলনা গণপূর্ত সার্কেলের তৎকালীন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সহিত পরামর্শ করে তাকে খুলনা জেলার বাইরে শাস্তিমূলক বদলীর জন্য ২০০৭ সালের ৬ জুন প্রধান প্রকৌশলী বরাবর একটি পত্র দেন যার স্মারক নং-১৪-৪০/৮৩৪। প্রদীপ কুমার বসুর মত দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসাবে পদায়ন করা হয়। যেখানে রয়েছে গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বঙ্গভবন, সচিবালয় ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারী কার্যালয়। বিসিএস ১৫তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা তার ব্যাচে নবম হলেও শক্তিশালী তদবিরবাজ চক্র তাকে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বানানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
অভিযোগে বলা হয়, প্রদীপ কুমার বসু খুলনা জোনে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় দূর্নীতির মাধ্যমে কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। এসব সম্পদের একটি বড় অংশ প্রদীপ কুমার বসু স্ত্রী, সন্তান ও শ্বশুর বাড়ীর আত্মীয় স্বজনের নামে করেছেন বলে অভিযোগ আছে। খুলনায় তার শ্বশুর বাড়ীতে গত কয়েক বছরে শত কোটি টাকার সম্পদ তিনি কিনেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। দূর্নীতির দায়ে গ্রেফতারকৃত গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমের সাথে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে জানা যায়। জি কে শামীম গ্রেফতার হলেও তার সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের সাথে প্রদীপ কুমার বসুর যোগাযোগ রয়েছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে গত ৩১ আগস্ট দূদকে ওয়াহিদুর রহমান নামে জনৈক ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেন।
সাবেক যুবদল নেতা গোল্ডেন মনির, জি কে শামীমের অবর্তমানে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে কুক্ষিগত করতে মরিয়া। মূলত, গোল্ডেন মনির সিন্ডিকেট এখন প্রদীপ কুমার বসুর চাকুরি পুনরুদ্ধার, ঢাকা মেট্রোপলিটন জোনে বদলী ও প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার রক্ষাকবচ। গোল্ডেন মনির সিন্ডিকেটের সাথে প্রদীপ কুমার বসুর সমন্বয়কারী হিসাবে আছেন তার ভায়রা বিআইডব্লিটিএর রেকর্ড কিপার সঞ্জিব দাস। অন্যায় ও দুর্নীতির অভিযোগে তাকে বিআইডব্লিটিএ সদর দপ্তর থেকে মাদারীপুর, বিআইডব্লিউটিতে (ডিইপিটিসি) শাস্তিমূলক বদলী করা হলেও তিনি বেশীর ভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করে ভায়রা প্রদীপ কুমার বসুর জন্য তদবীর নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।