পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট আয়োজিত ‘জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস প্রতিরোধে সম্মানিত ইমাম, খতিব, ওলামা-মাশায়েখদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় অনুষ্ঠান গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলহাজ শেখ আব্দুল্লাহ বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতি এখন ইসলামের দিকে ঝুঁকছে। ইসলামবিদ্বেষী কথা এখন জনগণ শুনতে চায় না। রাজনৈতিক সভায় মানুষ এখন ইসলামের কথা বেশি শুনতে চায়। আর তাই আলেম-ওলামা এবং ইসলামী ব্যক্তিত্ব ছাড়া রাজনৈতিক দল করলে সেই দলকে জনগণ মূল্যায়ন করছে না। সম্প্রতি জঙ্গি হামলার পর এ প্রবণতা আরো বেশি বেড়ে গেছে। আরো বাড়বে, ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, কোনো কোনো ইসলামী দল মুসলমানদের নামে ইসলাম ধ্বংসে কাজ করছে। এ বিষয়টি জনগণকে বুঝতে হবে। সর্বক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও নির্দেশদাতাদের নির্মূল করতে যা যা করা দরকার তাই করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের কারণে বিশ্ব এখন অশান্ত। এ জন্য বিশ্বের বৃহৎ নেতারা দায়ী। মধ্যপ্রাচ্য খনিজসম্পদ লুট এবং মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করে ইসলামের নাম ব্যবহার করে জঙ্গি হামলা করে ইসলামকে বিতর্কিত করছে। অধুনা বিশ্বনেতারা তাদের বাংলাদেশের এজেন্টদের দিয়ে এদেশেও জঙ্গিবাদ বিস্তারে পরিকল্পনা নিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। আর এ কাজে সহায়তা নিচ্ছে ইসলামের নামে ভ্রান্ত ব্যক্তি ও মতাদর্শের দল জামায়াতে ইসলামী ও সালাফীদের।
তিনি বলেন, বিদেশী শক্তির এসব দালালেরা মাদরাসা, স্কুল ও কলেজে তাদের মতাদর্শের বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে জান্নাতের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে জঙ্গি হামলা চালিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করাচ্ছে। ইসলামে এদের কোনো ক্ষমা নেই। এরা এখন দেশকে অস্থিতিশীল করে সরকার উৎখাত এবং শেখ হাসিনাকে হত্যার টার্গেট নিয়ে মিশন চালাচ্ছে। এ ভ্রান্ত মতবাদীরা বাংলাদেশের আলেমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে মুসলমানদের বিভ্রান্ত করছে। এদেরকে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে হবে।
দেওবন্দের আল্লামা আসাদ মাদানীসহ আরো কোনো কোনো উস্তাদ জামায়াতের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি করে গেছেন। অথচ কওমি অঙ্গনের কিছু আলেম ও নেতা জামায়াতের সাথে গাঁটছড়া বেঁধে সরকার উৎখাতের আন্দোলন করছে। এভাবে তারা তাদের দেওবন্দের উস্তাদদের নির্দেশ অমান্য ও অবহেলা করছে। এ বিষয়ে সকল উলামায়ে কেরামকে অত্যন্ত সচেতন থেকে অগ্রসর হতে হবে। অন্যথায় তারা মুসলমানদের ঈমান হরণ করে নেবে। ক্ষমতার জন্য এরা সবকিছু করতে পারে। আন্দোলনের নামে তারা আগুন সন্ত্রাস, গাছকাটা সন্ত্রাস ও সম্পদ ধ্বংসের সন্ত্রাস করছে। গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনা জামায়াতিদের টেস্ট কেস। মূল পরিকল্পনা তাদের সামনে রয়েছে। জনগণকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদসহ এদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে। তিনি জামায়াতিদের সাথে আওয়ামী ৩০-৩৫ নেতার ব্যবসায়ের কথা উল্লেখ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় মাওলানা গোলাম মাওলা নকশবন্দি বলেন, বিশ্বের মুসলমানদের দুরবস্থা চলছে। এ জন্য যারা দায়ী তাদের পৃথিবী থেকে নির্মূল করে ফেলতে হবে। মানুষ হত্যা করে জঙ্গি ও তাদের নির্দেশদাতারা জাহান্নামী হচ্ছে। দেশের শতভাগ আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখদের এটাই ফতোয়া। সন্ত্রাস ও জঙ্গিদের ব্যাপারে বহু আলোচনা ও টকশো হচ্ছে, কিন্তু এসব আলোচনা জনগণকে সেভাবে প্রভাবিত করছে না। জনগণ এসব বিষয়ে পীর-মাশায়েখ, ওলামায়ে কেরামদের বক্তব্য হৃদয়ে গেঁথে নেয়। তাই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে জনমত তৈরি করতে হলে আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখদের দিয়েই সম্ভব। আলোচনা সভায় অন্য বক্তারা বলেন, দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা, দেশ থেকে জঙ্গিবাদ উৎখাত করতে হলে বর্তমান কুফরি সিলেবাস পরিবর্তন করে ইসলামভিত্তিক সিলেবাস প্রণয়ন করে শিক্ষার সর্বস্তরে তা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী, মুফতি বশির উল্লাহ, মুফতি শিব্বির আহমদ কাসেমী, মুফতি মাহবুবুর রহমান, মাওলানা মনিরুজ্জামান রব্বানী, মাওলানা মাসুদুর করিম, হাফেজ মাওলানা মোশাররফ হোসাইন মাহমুদ, মুফতি বোরহান উদ্দিন, মুফতি সাঈদ হুসাইন, মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।