পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম নগরীর ও আর নিজাম রোডে প্রকাশ্যে দিনের আলোতে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। বিগত ২০১৬ সালের ৫ জুন সংগঠিত ওই খুনের ঘটনার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। শিশুপুত্রের সামনে কেন এই গৃহবধূকে নির্মমভাবে খুন হতে হলো-তার উত্তর এখনও অজানা।
২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি চকবাজার তেলিপট্রিতে নিজ বাসার সামনে খুন হন চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের শিক্ষিকা অঞ্জলি রানী দেবী।
চিকিৎসক স্বামী রাজেন্দ্র লাল চৌধুরী মামলার বাদী হয়েছিলেন। আশা ছিলো খুনিদের বিচার হবে। খুনি চক্রের সদস্যরা চিহ্নিত এবং মামলার তদন্তে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। নিরাপত্তাহীনতায় ছেড়ে গেছেন এই শহর।
বিগত ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর নগরীর নালাপাড়ার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে। এই মামলার তদন্তও শেষ হয়নি। পুত্র হত্যার বিচারের আশা ছেড়ে দিয়ে এই শহর ছেড়ে গেছেন সুদীপ্তের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পিতাও। মাহমুদা মিতু, অঞ্জলী রানী এবং সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যার মতো চট্টগ্রামে আলোচিত বেশ কয়েকটি হত্যাসহ চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্তে কোন গতি নেই। আলোচিত শতাধিক মামলার তদন্ত ও বিচারকাজ থেমে আছে।
দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টিকারী কয়েকটি হত্যা মামলার তদন্ত এখন হিমাগারে। আদৌ এসব মামলার তদন্ত শেষ হবে কিনা, খুনিরা ধরা পড়বে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আর তাতে হতাশ হয়ে পড়ছেন বিচার প্রার্থীরা। স্বজনের খুনিদের বিচারের আশায় তারা ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। তাদের দুর্ভোগের কোন শেষ নেই। মামলা তদন্তে ধীরগতির পাশাপাশি গাফিলতিরও অভিযোগ আছে। নানা অজুহাতে প্রকৃত অপরাধীদের বাদ দিয়ে মামলার চার্জশিট জমা দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। তবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) নতুন কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলছেন, পেশাদারিত্বের সাথে মামলার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি নগরীতে সংগঠিত বেশ কয়েকটি আলোচিত হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। ক্লুলেস অনেক মামলার আসামিরাও ধরা পড়েছে। তবে বেশ কয়েকটি মামলার তদন্ত এখনও অন্ধকারে ঘুরপাক খাচ্ছে। এতে খুনি চক্রের সদস্যরা আড়ালে থেকে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত। তদন্তে বছরের পর বছর পার হয়ে যাওয়ায় সাক্ষ্য প্রমাণও হারিয়ে যাচ্ছে। বিচার পেতে স্বজনহারাদের প্রতীক্ষা দীর্ঘরত হচ্ছে।
২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাসা থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ করা হলেও পুলিশ এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়। ময়না তদন্তেও আত্মহত্যা বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। পরে তার মায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা ময়না তদন্ত শেষে নিশ্চিত করেন দিয়াজকে খুন করা হয়েছে। দিয়াজ খুন হয়েছেন-এটা নিশ্চিত করতে পার হয়ে গেছে প্রায় এক বছর। মামলার তদন্ত চলছে সম্ভুক গতিতে।
২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর নগরীর আসকার দীঘির পাড়ের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন কাস্টমস কর্মী রিপেন সিংহ। পরে পতেঙ্গার চরপাড়া বেড়িবাঁধ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। মামলাটির তদন্ত করছে পিবিআই। এ হত্যাকাÐের রহস্য উদঘাটন হয়নি। অবসরপ্রাপ্ত কাস্টম কর্মচারী বাবা ক্ষুদিরাম সিংহ ছেলের খুনিদের বিচারের আশায় আছেন।
বিগত ২০১৮ সালের ১ আগস্ট নগরীর চান্দগাঁও ফরিদার পাড়ায় নিজ বাসায় শিশুপুত্রের সামনে খুন হন আইনজীবী এহতেশামুল পারভেজ সিদ্দিকীর স্ত্রী রহিমা। তার খুনের রহস্য এখনও অজানা। এক বছর আগে নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজের সামনে স্কুলছাত্র সানিকে ছুরিকাঘাতে খুন করে কয়েকজন কিশোর। নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। তবে নিহত স্কুলছাত্রের পরিবারের দাবি, তদন্ত থেমে আছে।
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাসিম আহমেদ সোহেল, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেল এবং সিআরবিতে রেলের টেন্ডারবাজির ঘটনায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের দুই পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে শিশু আরমানসহ জোড়া খুনের মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও বিচার শুরু হয়নি।
এদিকে জীবিত এক আসামিকে মৃত দেখিয়ে চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়েছে। জানা যায় ২০১৮ সালে আমিন জুট মিল এলাকায় জনৈক শাহ আলম ও তার পরিবারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় জয়নালসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন শাহ আলম। এসআই দিপংকর রায় মামলা তদন্ত করতে গিয়ে প্রধান আসামি জয়নাল বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে বাদ দেন এবং অপর ৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ২ সেপ্টেম্বর এসআই দিপংকরকে সাময়িক বরখাস্ত করার পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে একজন উপ-কমিশনারের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে সিএমপির পক্ষ থেকে।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে সিএমপির নতুন কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, মামলা তদন্তে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।