পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার রেল ভবনে রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন এবং চীনের প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (সিআরইসি) ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ঝ্যাং শুকাই এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে কুষ্টিয়া হয়ে যশোর থেকে খুলনা পর্যন্ত রেল যোগাযোগ রয়েছে। মাওয়ায় পদ্মা সেতু হলে ফরিদপুর হয়ে ট্রেন যাবে যশোরে। ভিন্ন একটি প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হবে। রেলপথ সচিব মো. ফিরোজ সালাহ উদ্দিন জানান, ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ’ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর মূল কাঠামোর নির্মাণ কাজ চলছে এখন। ২০১৮ সাল নাগাদ এই সেতু চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া যাবে বলে আশা করছে সরকার। ওই সময় পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলও শুরু করা সম্ভব হবে আশা প্রকাশ করে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কম সময়ে এই রেলপথ নির্মাণ করে দেবে বলে আশা করি। রেলওয়ের মাহপরিচালক আমজাদ হোসেন জানান, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপনে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ ২৭ হাজার ৬৫২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা নেবে। গত ৩ মে একনেকে অনুমোদিত এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০ বছর মেয়াদে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা ঋণ দেবে চীন। যার জন্য সুদ গুণতে হবে ২ শতাংশ হারে। বাকি ১০ হাজার ২৪০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ ছাড়াও ১৪টি নতুন স্টেশন ভবন ও ছয়টি স্টেশন পুনর্নির্মাণ, ৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু এবং ২৪৪টি ছোট সেতু নির্মাণ, ১০০টি নতুন রেলকোচ কেনা এবং আধুনিক সিগন্যাল সিস্টেমের জন্য অপটিক্যাল ফাইবার লাইন স্থাপন করা হবে। চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংকিয়াং, সিআরইসি গ্রুপের চেয়ারম্যান লি চ্যাংজিনসহ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হবে। এ রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ ও সরকারের ১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনে সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তাবনায় প্রায় ৯ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৭ সালের জুলাইতে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চায় রেলওয়ে। ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করে পায়রা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের নির্দেশনা দেন। এরপরই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় রেলপথ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয়ের একটি খসড়া তৈরি করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এতে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ২ হাজার ৫০০ কোটি, রেলপথ ও উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ বাবদ ৬ হাজার ৫০০ কোটি, সিঙ্গেল লাইন ও যোগাযোগ বাবদ চারশ’ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে। এছাড়া জনবল নিয়োগ ব্যয় বাবদ ২০ কোটি, পরামর্শক বাবদ ২০০ কোটি এবং স্টেশন নির্মাণ বাবদ ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
এই প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হলে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে ঢাকা থেকে বরিশালের দূরত্ব কমবে ১৮৫ কিলোমিটার এবং ভ্রমণে সময় কমবে তিন ঘণ্টা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অধিকাংশ মানুষ ঢাকায় এসে তাদের প্রতিদিনের কাজকর্ম শেষে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন। তাছাড়া প্রস্তাবিত রেললাইন নির্মিত হলে খুলনা, যশোর, বেনাপোল, দর্শনা, মংলাবন্দর, রাজশাহী এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও আধুনিক হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।