Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাড়ছে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডের অবৈধ ব্যবহার

কামাল আতাতুর্ক মিসেল | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

‘পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ ফ্ল্যাগ রুলস’ অমান্য করে সরকারি ও ব্যক্তিগত গাড়িতে ব্যবহৃত হচ্ছে জাতীয় পতাকা স্ট্যান্ড। আইন অমান্য করে ব্যবহৃত হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের স্টিকারসহ জাতীয় সংসদের সদস্যের স্টিকারও। 

সড়কের দিকে তাকালে চোখ আটকে যাবে ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড সজ্জিত গাড়িতে। দেখা যায়, বেশকিছু নতুন মডেলের জিপ গাড়ির ও প্রাইভেটকারের বাঁ পাশে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড লাগানো। কিন্তু ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড কি যে কোনো গাড়িতে বা যার ইচ্ছা তিনিই এ ব্যবহার করতে পারেন? ফ্ল্যাগ ব্যবহার করার অধিকার আছে কাদের ? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খায় অনেকের মনে। কিন্তু কোনো সদুত্তর নেই মাঠ পর্যায়ে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের কাছে। কেউ কেউ আবার গাড়িতে সাইরেন লাগিয়ে দাপিয়ে বেড়ান শহরে। ঠেকাতে সড়কে কোন রকম অভিযান পরিচালনা না হওয়ায় দিনদিন এসবের অবৈধ ব্যবহার বাড়ছেই।
পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ ফ্ল্যাগ রুলস ১৯৭২ সালে তৈরি করার পর বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী বিধিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। তবে পরিবর্তনের পরও যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার নিচের কোনও কর্মকর্তা সরকারের স্টিকার ব্যবহারের সুযোগ পেলেও ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড ব্যবহারের অনুমতি নেই । তবে প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে মন্ত্রীর মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের ক‚টনৈতিক/কনস্যুলার, মিশনসমূহের প্রধানগণ তাদের যানবাহনে বা জলযানে পতাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
এছাড়া প্রতিমন্ত্রী এবং সমপদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ, উপমন্ত্রী এবং সমপদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ রাজধানীর বাইরে দেশের অভ্যন্তরে অথবা বিদেশে ভ্রমণকালে তাদের যানবাহনে পতাকা উত্তোলন করতে পারবেন। তবে আইনের কঠোর প্রয়োগ না হওয়ার সুযোগে সরকারি কর্মকর্তাদের বাইরেও এক শ্রেণির ক্ষমতাধর ব্যক্তি তাদের ব্যক্তিগত গাড়িতে ব্যবহার করছেন পতাকা স্ট্যান্ড এবং প্রজাতন্ত্রের স্টিকার।
জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশের আলোকে গাড়িতে পতাকা ও স্টিকার লাগানোসংক্রান্ত একটা গাইডলাইন প্রস্তুতের জন্য ২০১৭ সালে সেপ্টেম্বরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উদ্যোগে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাও হয়েছিল। সে সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে সিদ্ধান্তগুলো বেশি দূর এগোয়নি। এখনো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যেক বিভাগ, জেলা এমনকি উপজেলা ও পৌর শহরে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রাইভেটকার ও জিপ গাড়িতে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড দেখা যায়। পৌরসভার মেয়র থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধির গাড়িতে এ স্ট্যান্ড লাগানো রয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান বলেন, পতাকা স্ট্যান্ড গাড়িতে থাকা এমন গাড়ি আমরা সড়কে দেখি। স্ট্যান্ড লাগিয়ে তারা হয়ত প্রমাণ করতে চান তারা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
এই বিষয়ে পূর্বাঞ্চলীয় হাইওয়ে পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, জাতীয় পতাকা স্ট্যান্ড ও প্রজাতন্ত্রের স্টিকারের অবৈধ ব্যবহার আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। তবে তিনি জাতীয় পতাকা স্ট্যান্ড এবং প্রজাতন্ত্রের স্টিকারের অবৈধ ব্যবহার উদ্বেগজনক বেড়েছে স্বীকার করে বলেন, এটা কোনও সচেতন মানুষের করা উচিৎ নয়। এসব নিয়ে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথাও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ