Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রিমান্ডে প্রদীপের নীরবতা রহস্য

টানা ১৫ দিন পর কারাগারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি মুখোমুখি হবে আজ

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

চতুর্থ দফায় টানা ১৫ দিনের রিমান্ডেও মুখ খোলেনি মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি টেকনাফের বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। তাই ১৫ দিনের বেশি রিমান্ডের সুযোগ না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে এই সময় নানাভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও মুখ খোলেনি প্রদীপ। লিয়াকত, নন্দ দুলাল হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে দায়-দায়িত্ব স্বীকার করে আদালতে জাবানবন্দি দিলেও প্রদীপের নীরবতা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারের সর্বত্রই এ নিয়ে চলছে কানাঘুষা, বিতর্ক। কেউ কেউ বলছেন, দেশে বিভিন্ন মামলার আসামিদের মাসের পর মাস রিমান্ডে নেয়ার নজির রয়েছে; অথচ প্রদীপকে ১৫ দিনের বেশি রিমান্ডে নেয়ার সুযোগ নেই? সাধারণ মানুষের প্রশ্ন লিয়াকত, নন্দের মতো ব্যাক্তি রিমান্ডে দায় স্বীকার করলেও প্রদীপের স্বীকারোক্তি আদায় করা যাচ্ছে না, রহস্য কোথায়? প্রদীপের খুঁটির জোর কোথায়? প্রদীপের নীরবতা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার র‌্যাবের একটি দল প্রদীপকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) আদালতে হাজির করেন। এর আগে জেলা সদর হাসপাতালে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। বহুল আলোচিত এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি গত এক মাসেও বরখাস্ত ওসি প্রদীপের সাক্ষাৎ না পাওয়ায় ৩১ আগস্টের নির্দিষ্ট সময়ে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেননি। তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তাদের তদন্ত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে ওসি প্রদীপের সাথে তাদের কথা বলার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু ওসি প্রদীপ রিমান্ডে থাকায় তার সাথে কথা বলা যায়নি। তাই প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আজ বুধবার অথবা আগামী কাল বৃহস্পতিবার কারাগারে তদন্ত কমিটি ওসি প্রদীপের সাক্ষাৎকার নিতে পারেন বলে তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খায়রুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিয়াকত এবং নন্দ স্বীকারোক্তি দিলেও ১৫ দিনের রিমান্ডেও বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ স্বীকারোক্তি দেয়নি। ১৫ দিনের পর আর রিমান্ড চাওয়ার আইনগত সুযোগ নেই। তাই নিয়ম মতে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গত শুক্রবার (২৮ আগস্ট) একই আদালত প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক (বরখাস্ত) লিয়াকত আলী, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতের তৃতীয় দফায় ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। তবে লিয়াকত ও নন্দ দুলাল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কিন্তু ওসি প্রদীপ স্বীকারোক্তি না দেয়ায় তাকে সোমবার ৪র্থ বারের মতো একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চতুর্থ দফায়ও স্বীকারোক্তি দেয়নি প্রদীপ কুমার দাশ।

অন্যদিকে এই মামলায় গ্রেফতার এপিবিএন-এর তিন সদস্যও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কিন্তু স্বীকারোক্তি না দেয়ায় পুলিশের মামলার সাক্ষী তিনজনকে গতকাল মঙ্গলবার চতুর্থ দফায় আরো তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর মেরিনড্রাইভের তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। তিনি মারিশবনিয়ার একটি পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে ফিরছিলেন। এ সময় তার সাথে থাকা ক্যামেরাম্যান সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে আটক করে পুলিশ। পরে নীলিমা রিসোর্ট থেকে শিপ্রা দেবনাথকে আটক করা হয়। দুজনই এখন জামিনে মুক্ত।

মেজর (অব.) সিনহা খুনের ঘটনায় গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মো. রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়। এরপর সাত অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাদেরকে বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন এপিবিএন সদস্য এবং পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে গ্রেফতার করে মামলার তদন্ত সংস্থা র‌্যাব।



 

Show all comments
  • ইমরান ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১:৫৮ এএম says : 0
    ন্যায় বিচার নিয়ে আমরা শংকিত
    Total Reply(0) Reply
  • Md Sajib Hossain ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:০৫ এএম says : 0
    মনে হচ্ছে প্রদীপ এর নয় হিটলার এর রিমান্ড চলছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Golam Rahman ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:০৬ এএম says : 0
    মাইর দিলে কথা না বলে পারে কেমনে
    Total Reply(0) Reply
  • Salim Ahmmed ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:১৫ এএম says : 0
    এটা কি‌ রিমান্ড চলছে নাকি জামাই আদর চলছে
    Total Reply(0) Reply
  • Soboj Hossain ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:১৬ এএম says : 0
    রিমান্ডের নামে কি জামাই আদর করা হয় নাকি অন্যো আসামিদের এক দিনের রিমান্ডে সব তথ্যো বের করে আর ওসি প্রদিপ ১৫ দিনের রিমান্ডেও কথা বের করে না সত্যিকারের রিমান্ডে নেন জামাই আদর বাদ দিয়া টাকার কাছে বিক্রি না হয়ে সত্যো কথা বের করেন
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Rasell ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:১৬ এএম says : 0
    রিমান্ডের নামে বাঙালী দের বোকা বানানো হচ্ছে এক দিন ই যথেষ্ট হয়ে যায়
    Total Reply(0) Reply
  • Anowar Hossain ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:১৭ এএম says : 0
    এটা কেমন রিমান্ডে নেওয়া, এটা লোক দেখানো রিমান্ড।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ismail Shiraj ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:২০ এএম says : 0
    সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে যে-ধরনের রিমান্ড দেওয়া হয়, তা দেওয়া হউক, দেখবেন দুইদিনের মধ্যে মুখ খুলে দিবে
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Ebrahim Mia ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ২:২২ এএম says : 0
    শিবির কর্মী হলে তাদের কে তিন দিনের রিমান্ড শেষে মারা যাবার উপক্রম হয়ে যায়। আর প্রদীপ দাদাদের বংশধর তো তাই জামাই আদর করতেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • zannath ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:৫৩ এএম says : 0
    May be India is saving prodip. It is impossible not to give statement in remand.If govt fail to judge prodip people will judge.
    Total Reply(0) Reply
  • এ খালেক ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৬:৩৩ এএম says : 0
    ১৫ দিনের রিমান্ডে ও স্বীকারোক্তি না পাওয়া খুবই রহস্যজনক !
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮:৫৭ এএম says : 0
    বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা নজীর সৃষ্টি করলো র্যাতব ও বরখাস্ত ওসি প্রদীপ বাবু। র্যা ব ১৫ দিনেও প্রদীপ বাবুর মুখ খোলাতে পারেনি এটাই হচ্ছে র্যা বের ব্যার্থতার ইতিহাস। অপরদিকে ১৫ দিন রিমান্ডে থেকেও একটা কথা বলেনি ওসি প্রদীপ বাবু এটাও একটা ইতিহাস বটে। এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার সেটা হচ্ছে কথা বের করার জন্যে রিমান্ড চলাকালে বিভিন্ন পন্থা অবলম্ব করেই আসামীর মুখ থেকে সত্য বের করা হয়। কিন্তু প্রদীপ বাবুর বেলায় সেটা করা হয়নি এটা স্পষ্টভাবেই বুঝা যাচ্ছে। এখন কিভাবে প্রদীপ বাবুর বিচার হবে সেটাও প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিন্দুকেরা বলছেন, এই যদি হয় অবস্থা তাহলে বলা যায় প্রদীপ বাবু নিশ্চিত খালাশ পেয়ে যাচ্ছেন। লিয়াকত মিয়ার স্বীকারোক্তিতে বুঝা যাচ্ছে সেই প্রকৃত আসামী তাঁর বক্তব্যে প্রদীপ বাবুর কথা আসেনি। কিন্তু এরপরও কথা থাকে সেটা হচ্ছে প্রদীপ বাবু ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত্য মেজর (অবঃ) সিনহাকে শেষ গুলীটা করেছিলেন এটাই আমরা বিভিন্ন সংবাদে পড়েছি। এখন মামলাটা খুবই কঠিন ভাবে জটপাকিয়ে গেল...... নিন্দুকেরা আরো বলছেন, দেশের সকল ক্ষমতা ধরেরাই প্রদীপ বাবুর পক্ষে কাজ করছে এটাই ফুটে উঠেছে র্যা বের তদন্তের মাধ্যমে। এখন একমাত্র মহান আল্লাহ্‌ই পারবেন ন্যায় বিচার করতে নয়ত প্রদীপ বাবু এই মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Monir Bhuiyan ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮:৫৯ এএম says : 0
    মাইরের উপর নাকি কোন ঔষধ নাই। জামাই আদরে মুখ খুলবে না প্রদীপ। শক্ত পিটুনি দিতে হবে মনে হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • saadman ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৯:৫৩ এএম says : 0
    This Govt. is pro-Indian, So it is very much clear that RAW is involved in this killing. So this Govt. has nothing to do,because the foreign minister has "blood relation" with India.
    Total Reply(0) Reply
  • সৈয়দ আদনান ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৫৫ পিএম says : 0
    প্রদীপ সব বাহিনীর ঘোল খাওয়ালো?যুগে যুগে এ রকম অফিসারদের কাছে এ রকম পপ্রদীপের বিজয়...জয় প্রদীপ,জ---য়--ই বাংলা!!!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিনহা হত্যা

১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৩০ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ