পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রেণুপোনা উৎপাদনের ভরা মৌসুমে করোনার থাবা। এখন সামাল দিয়ে উৎপাদনের সূতিকাগারে বিরাট কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছে। পেয়েছে নতুন মাত্রা। ‘মাছের পোনা-দেশের সোনা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে যশোরের মাছ চাষিরা হারিয়ে যাওয়া কালবাউসসহ বিভিন্ন প্রজাতির রেণুপোনা উৎপাদনে দেশের মধ্যে এক অবিশ্বাস্য রেকর্ড স্থাপন করেছেন। শাক-সবজির মতো রেণু পোনাও দেশের মোট চাহিদার সিংহভাগ উৎপাদিত হচ্ছে যশোরে। নদ-নদী, খাল-বিলে পানি শূন্যতায় প্রাকৃতিকভাবে মাছের রেণুপোনা আহরণ হচ্ছে না বললেই চলে। মাছের উৎপাদন ধরে রাখার জন্য বিকল্পপন্থায় শূন্যস্থান পূর্ণ করে থাকে হ্যাচারি ও নার্সারি। রেণুপোনা উৎপাদনের সূতিকাগার যশোরে দেশের মোট চাহিদার ৭০ ভাগ উৎপাদন হয়।
করোনায় অবশ্য মৎস্যপল্লী খাঁ খাঁ করছিল। সংশ্লিষ্টরা জানায়, মার্চ মাসটি রেণুপোনা উৎপাদন ও বিপণনের ভরা মৌসুম। করোনাভাইরাস ভরা মৌসুমে একেবারে ধস নামিয়ে দেয়। এখন অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে পুরোদমে। কথাগুলো দৈনিক ইনকিলাবকে জানালেন, যশোর জেলা মৎস্য হ্যাচারি মালিক সমিতির সেক্রেটারি জাহিদুর রহমান গোলদার। তার কথা, ভরা মৌসুমের বিপর্যয়ে পুষিয়ে নেয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা চলছে।
রেণুপোনার ইতিহাস হচ্ছে, পানির মধ্যে সোনা। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য। রেণুপোনা উৎপাদনকারীরা পানি নেড়েচেড়ে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। সক্ষম হয়েছেন বিস্ময়কর সাফল্য আনতে। কোন তত্ত্ব বা প্রযুক্তি জ্ঞান নয়। বাস্তব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ওরা বিরাট অর্জন করেছেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অর্থনীতির চিত্র বদলে দিয়েছেন। প্রতিদিন পানি থেকে সোনার দামের রেণুপোনা তুলছেন। চালান করছেন দেশের বিভিন্নস্থানে। আয় করছেন কাড়ি কাড়ি টাকা। দ্রুত ভাগ্যের চাকা ঘুরাচ্ছেন। চলছে বিশাল এক কর্মকান্ড। লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান। পানি নেড়ে চেড়ে মাছের রেণুপোনা উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাচ্ছে যশোর।
মৎস্য বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা জানান, নদ-নদীতে পানি যখন থৈ থৈ করতো তখন প্রাকৃতিকভাবে পর্যাপ্ত মাছের রেণুপোনা উৎপাদন হতো। নার্সারি ও হ্যাচারির প্রয়োজন হতো না। বর্তমানে নদ-নদীতে পানি নেই। একসময় দেশে কমপক্ষে ৩০ হাজার কেজি প্রাকৃতিকভাবে রেণুপোনা আহরণ হতো। এখন বড়জোর আহরণ হয় মাত্র ১২শ’ কেজি। অথচ দেশে মোট চাহিদা প্রায় ৪ লাখ কেজি রেণুপোনা। প্রায় পুরোটাই সরবরাহ করে নার্সারি ও হ্যাচারি।
মৎস্য বিশেষজ্ঞ অলিয়ার রহমানের মতে, প্রতি কেজি রেণুপোনা থেকে প্রায় ৫ লাখ মাছ উৎপাদন হয়। রেণুপোনা হ্যাচারির মালিকরা জানান, স্ত্রী মাছ থেকে ডিম বের হবার পর ওই ডিমের মিগ্রপিলার ছিদ্রে মুরগির পাখনা দিয়ে পুরুষ শুক্রানু ছোঁয়ায়ে জারে রাখার পর ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টার মধ্যে বাচ্চা ফোঁটে। পরে উৎপাদিত হয় মাছের রেণুপোনা। যশোর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাছের রেণুপোনা উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত মাছের রেণুপোনা খুবই উন্নতমানের। যশোর জেলা মৎস হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ খান দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, কিছুদিন থমকে থাকলেও রেণুপোনা উৎপাদনে বিরাট গতি এসেছে।
মৎস্য চাষি আনিসুর রহমান বলেন, নার্সারি ও হ্যাচারিতে রেণুপোনা উৎপাদন না হলে মাছ হবে দুষ্প্রাপ্য। কারণ নদ-নদী, খাল বিল পানিশূন্য, প্রাকৃতিকভাবে রেণুপোনা আহরণ হচ্ছে না বললেই চলে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গুরুত্বপুর্ণ খাতটি করোনাভাইরাস অপূরণীয় ক্ষতি করলো। আমিষের চাহিদা পুরণ ও জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখা যশোরের মৎস্যপল্লীর নার্সারি ও হ্যাচারিতে কাজকর্ম এখন জমজমাট।
##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।