পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মেজর (অব.) সিনহা হত্যার তদন্ত কী একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে? র্যাব কর্মকর্তাদের ছোটাছুটি, অক্লান্ত পরিশ্রম, গোয়েন্দা ইউনিটের অব্যাহত তথ্য সহায়তা সত্তে¡ও তদন্ত ক্ষেত্রে দৃশ্যমান সাফল্য দেখতে পাচ্ছেন না মনে করছেন দেশবাসী। কক্সবাজারের সর্বত্রই সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে চলছে আলোচনা-বিতর্ক। অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলছেন, শেষ পর্যন্ত সবকিছু থেমে যাবে না তো? কারণ ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে’ শব্দের মধ্যেই র্যাবের প্রেসব্রিফিং সীমাবদ্ধ থাকায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়ছেন মামলা সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে হত্যাকান্ডের ২৮ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলার অন্যতম প্রধান আসামী বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সাথে কথা বলতে পারেনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব তৃতীয় দফায় আরো তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে প্রদীপ-লিয়াকত ও নন্দ দুলালকে। এই কারণে ৩১ আগস্ট তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। গতকাল পুলিশের মামলার ৩ সাক্ষী নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোঃ আয়াছকে আরো চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে র্যাব। এসব কারণে হত্যাকান্ডের যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করা গেলেও ‘ কেন এ হত্যাকান্ড’ সেই মোটিভ সম্পর্কে এখনো তদন্ত কর্মকর্তারা অন্ধকারে বলই মনে করা হচ্ছে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, তদন্ত কর্মকান্ডের সকল পয়েন্টে প্রভাবশালী কোন একজনের প্রভাব আর নানা কৌশলী ভূমিকার কারণে পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তদন্ত। ঘটনার দিন ওসি প্রদীপের সঙ্গি হয়ে আর কারা কারা উর্ধ্বশ্বাসে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছিলেন তাদের তালিকাটা র্যাব কর্মকর্তাদের পেতে নাকি অনেক গলদঘর্ম করতে হয়েছে। ঘটনাস্থলে যাওয়া দুই সাব ইন্সপেক্টর ও এক কনস্টেবলকে তাৎক্ষণিক ভাবে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে রহস্যজনকভাবে। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করা হলেও তারা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
ওদিকে টেকনাফ থানার সিসিটিভি ফুটেজ ও হার্ডড্রাইভ গায়েব হওয়াটাই সিনহা হত্যার মূল মোটিভ উদঘাটনে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাছাড়া ওসি প্রদীপ বা লিয়াকতের মতো কয়েকজনের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ এলেও তাদের বিরুদ্ধে এতদিন বড় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কেন জেলা পুলিশ, তদন্তে তাও বিবেচনায় এসেছে বলে জানা গেছে।
তিন সাক্ষীর আবার রিমান্ড সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের মামলার ৩ সাক্ষীকে আরো চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে র্যাব। গতকাল শনিবার কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে র্যাবের একটি দল তাদেরকে নিজেদের নিয়ে যায়। রিমান্ডে নেয়া তিন আসামী হলেন- টেকনাফ মারিশবনিয়া এলাকার নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোঃ আয়াছ।
গত ২৫ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম তাদেরকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে তাদের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন।
শুনানী শেষে দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক তামান্না ফারাহ্। এর আগে গত ২০ আগস্ট প্রথম দফায় তাঁদের সাত দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছিল। সিনহা খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে ১১ আগস্ট মারিশবনিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
৩১ জুলাই মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার পর সিনহা ও তার সঙ্গে থাকা সিফাতের বিরুদ্ধে মাদক ও পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানায় মামলা করে পুলিশ। উপপরিদর্শক নন্দ দুলাল রক্ষিতের দায়ের করা ওই মামলায় এই তিন জনকে সাক্ষী দেখানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ দিয়ে হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মোঃ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ৩টি মামলা হয়। ২টি মামলা হয় টেকনাফ থানায়। সরকারি কাজে বাধা দানের মামলার আসামি করা হয় সিফাতকে। হত্যাচেষ্টা মামলায় সিফাত ও নিহত সিনহাকে আসামি করা হয়। আপরদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয় সিনহার অপর সহযোগী শিপ্রা দেবনাথকে।
একই ঘটনায় ৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
পরের দিন ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ মামলার অপর দুই আসামি এসআই টুটুল ও মো. মোস্তফা আদালতে হাজির হননি। পুলিশের দাবি, এই নামে জেলা পুলিশে কেউ নেই। তবে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
সিনহা হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আসামীদের র্যাব হেফাজত জিজ্ঞেসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।