পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাধারণত ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় কৃষি কাহিল হওয়ার কথা। কিন্তু না, ক্ষণিক থেমে গেলেও মুহূর্তে আবার ঘুরে দাঁড়িয়ে কর্মবীর কৃষক কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আনছেন বিস্ময়কর সাফল্য ও অভাবনীয় উন্নতি। কোনকিছুতেই কৃষকদের দমাতে পারে না এটি প্রমাণিত। কৃষি বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদের কথা, বহুমুখী সমস্যা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলা করে ক্রমাগত স্বচ্ছলতার সোপানে পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। এর মূল কারণ কৃষিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ এর ধাক্কা সামলিয়ে কৃষক ও কৃষি এগিয়ে যাচ্ছে। মাঠে মাঠে বিভিন্ন ফসলের সবুজের অপরূপ সৌন্দর্য তৈরি করার ধারক কর্মবীর কৃষক উৎপাদনে বিরাট সফলতা এনে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তিনি বলেন, বৃষ্টি, কুয়াশা বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, বন্যা, নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখন ঘন ঘন হতে শুরু করেছে। এতে চাষাবাদের কৃষি সূচি অনেকটাই পাল্টে যাচ্ছে। তারপরেও বহুমাত্রিক কৃষির সাফল্য আসছে।
সূত্র মতে, অর্থনীতির প্রাণশক্তি কৃষি। কৃষকদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হয়েছে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ও কলাকৌশল। দেশে অল্প জমিতে বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় বিশ্ব অর্থনীতিবিদদের অবাক করে দিয়েছে। কৃষি শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নয়, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিরও বুনিয়াদ।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস এ প্রসঙ্গে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কৃষিই হচ্ছে দেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর প্রভাবে ভৌগলিক অবস্থার কারণে বাংলাদেশ ‘ভিকটিমাইজ’। কৃষি পরিবেশ স্বাস্থ্য সবকিছুই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রকৃতি তার ভারসাম্য ধরে রাখতে পারছে না। শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষাসহ ষড়ঋতুর প্রচলিত সময়কাল অনেটাই ‘শিফটিং’ হয়ে যাচ্ছে। তারপরেও আবহাওয়ার জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণশক্তি কৃষিখাতের উন্নতি আসলেই বিস্ময়কর। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য ফসলের সংখ্যা বেড়ে গেছে। খরা সহিঞ্চু ও লবন সহিঞ্চু জাত উদ্ভাবন করে উপক‚লীয় অঞ্চলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে। বিজ্ঞানীদের নিত্যনতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন কৃষিকে করেছে সমৃদ্ধ।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের প্রায় সবার মধ্যেই কৃষিসত্ত্বা বিরাজমান। মাঠে ফসল আবাদ ছাড়াও বাড়ির আঙিনায়, ছাদে তারা ফলমুল ও ফুল চাষ করে থাকেন। মাঠপর্যায়ের একজন কৃষি কর্মকর্তা জানালেন, চীন, জাপান, মালয়েশিয়া ও কোরিয়াসহ উন্নত দেশের অনুকরণে বাংলাদেশে ছাদ কৃষি এবং ‘বটমআপ’ পদ্ধতি অর্থাৎ আবহাওয়ার ভিত্তিতে যে এলাকায় যে ফসল প্রযোজ্য ও ‘মাল্টিস্ট্রাটা’ পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন সর্বোপরি বহুমাত্রিক কৃষির দিকে জোর দিয়ে সফলতা পাচ্ছে। এছাড়াও ‘হাইড্রোপনিক’ পদ্ধতি যা মাটিবিহীন পানিতে পরিমিত পুষ্টি উপাদান যোগ করে সারাবছরই সবজি ও ছোট ফল উৎপাদনের চেষ্টা চলছে।
ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, গত ৭ বছরে বাংলাদেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনের হার বেড়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বর্তমানে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪০ দশমিক ৬০ ভাগ কৃষিতে সরাসরি নিয়োজিত। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, দেশের ৬৪টি জেলা, ৪শ’ ৮৫টি উপজেলা ও ১২ হাজার ৬শ’ ৪০টি বøক রয়েছে। এর মাধ্যমে কৃষি স¤প্রসারণ কার্যক্রম জোরদার হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র আরো জানায়, কৃষি মন্ত্রণালয় জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে কৃষিকে রক্ষায় কয়েক বছর আগে জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি প্রকল্প (এনএটিপি) গ্রহণ করে। প্রথম পর্যায়ে দেশের ১শ’ ২০টি উপজেলার কৃষকদের সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণ দেয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১শ’ ৫০টি উপজেলায় প্রকল্পের কাজ চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।