Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

৯ সেপ্টেম্বর রায়

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

থানায় নিয়ে ইশতিয়াক হোসেন জনি নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদসহ ৫জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য ৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ২৪ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। মামলার অন্য আসামিরা হলেন-পল্লবী থানার এএসআই রাশেদুল, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু, সোর্স সুমন ও রাশেদ। আইনজীবী মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেনকে থানায় নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করে এই মামলার অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তা। আমরা আশা করি, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে। রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) তাপস কুমার পাল বলেন, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন হওয়ার পর এই প্রথ কোনো মামলার রায় ঘোষণার দিন ঠিক করলেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি আদালতের কাছে চাওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা আশা করি, আদালত আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা দেবেন। এই আইনের সর্বোচ্চ সাজা হচ্ছে যাবজ্জীবন কারাদন্ড। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে সহযোগিতা করছেন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, এই আইনের প্রথম কোনো মামলার রায় হতে যাচ্ছে। তারা আদালতের কাছে দাবি করেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। তারা আশা করেন, এই মামলায় তার মক্কেল বেকসুর খালাস পাবেন। নিহত গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেনের ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ৬বছর ধরে আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছিলেন ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায়। অবশেষে তার ভাইয়ের হত্যা মামলাটি রায়ের জন্য দিন ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আশা করেন, এই মামলার আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর-১১ নম্বর সেক্টরে স্থানীয় সাদেকের ছেলের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় জনি ও তার ভাই সুমনকে চলে যেতে বলেন। সুমন চলে গেলেও পরদিন এসে আবার আগের মতো আচরণ করতে থাকেন। তখন জনি ও তার ভাই তাকে চলে যেতে বললে সুমন পু্লশিকে ফোন করে তাদের ধরে নিয়ে যান। তাদের নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার লোকজন ধাওয়া দিলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। পরে থানায় নিয়ে জনিকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে জনির অবস্থা খারাপ হলে ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে পল্লবী থানার ওসি জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি। ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রæয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম মারুফ হোসেন ৫জনকে অভিযুক্ত এবং ৫জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তকালে পুলিশের এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ৯ সেপ্টেম্বর রায়

২৫ আগস্ট, ২০২০
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ