পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটার মানচিত্র বদলে যাচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ে ভাঙন বেড়েই চেলছে। প্রতিদিনই পরিবর্তন হচ্ছে সৈকতের পুরনো দৃশ্য। সাগরে বিলীন হচ্ছে নারিকেল ও ঝাউবনে পর্যটকদের জন্য নির্মিত পিকনিক স্পটের অবশিষ্ট অংশ।
গত কয়েক দিন সাগর প্রচন্ড উত্তাল থাকায় সৈকতের ওপর আছড়ে পড়া ঢেউ সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। সৈকতের লাগোয়া একটি আবাসিক হোটেলের একাংশ উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে পাবলিক টয়লেট ও ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। ঢেউয়ের তাÐবে গাছপালা উপড়ে পড়ে রয়েছে। ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সৈকতের দৃষ্টিনন্দন ছাতা বেঞ্চ ও অস্থায়ী ঝিনুক মার্কেটটিও।
গত ৩/৪ দিন ধরে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় সৈকতে থাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নাভিশ্বাস উঠেছে। একই সাথে ধ্বংসে পরিণত হয়েছে বনবিভাগের রিজার্ভ ফরেস্ট ও কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান ইকোপার্ক। কুয়াকাটায় অবস্থিত সম্প্রীতির নিদর্শন হিসেবে খ্যাত মসজিদ ও মন্দিরটি ঝুঁকিতে।
এছাড়া আবাসিক হোটেল, ট্যুরিস্ট পুলিশবক্স ও জেলা প্রশাসনের ট্যুরিজম পার্কটিও ঝুঁকিতে। স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় ছাড়া সমুদ্রের এমন রুদ্র মূর্তি গত ১০ বছরে আর দেখা যায়নি। গত তিন দিনে ২০ থেকে ২৫ ফুট ভূভাগ ভেঙে সমুদ্রের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কুয়াকাটা পৌর কর্তৃপক্ষ জিও বস্তা ফেলে পাবলিক টয়লেটটি রক্ষার বথ্য চেষ্টা করছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা ঢেউ অব্যাহত থাকলে পাবলিক টয়লেটসহ অন্যান্য স্থাপনা সমুদ্রে গর্ভে বিলীন হতে পারে।
সৈকত পাড়ের ঝিনুকের দোকানদার মো. রাসেল খলিফা বলেন, রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় যান। গতকাল সকালে এসে দেখতে পান মালামালসহ দোকানের একাংশ সাগরে ভাসছে। শুধু তার দোকান নয়, এমন প্রায় অর্ধশত দোকান ও দোকানের মালামাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলেও দাবি ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রাসেলের।
গতকাল শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢেউয়ের আঘাতে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে গেছে। অবশিষ্ট অংশ দোকানিরা সরিয়ে নিয়ে যান। সমুদ্রের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে মহসড়কের শেষ সীমানায়। কোথাও দাঁড়ানোর স্থান নেই। পর্যটকরা সৈকতে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। ঢেউ এসে তাদের ওপর আছড়ে পড়ছে।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা ডকুমেন্টারি ফ্লিম মেকার সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, তিনি ১২ বছর ধরে কুয়াকাটায় আসেন। ১২ বছর আগে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে সৈকত দেখেছেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেভরা কুয়াকাটার এখনকার চিত্র দেখে তিনি হতাশ। তার মতে, সৈকত রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। অন্যথায় সূর্যোদয় সূর্যাস্তের এই বিরল সৌন্দর্য মÐিত কুয়াকাটা হারিয়ে যাবে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আ. বারেক মোল্লা বলেন, সমুদ্র ভাঙননরোধে পদক্ষেপ নেবার সক্ষমতা তাদের নেই। দরকার দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা, যা পাউবো কর্তৃপক্ষ নিতে পারে। পৌরসভার পক্ষ থেকে জিরো পয়েন্টে কিছু জিও বস্তা ফেলে সাময়িকভাবে রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে, যা দিয়ে সৈকত রক্ষা করা সম্ভব নয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (কলাপাড়া সার্কেল) মো. ওলিউজ্জামান জানান, ভাঙনরোধের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।