পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী পল্লবীর ডিওএইচএসের ৭ নম্বর সড়কের ১০৬০ নম্বর বাসা থেকে ৪৪ জন নেপালি নাগরিককে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল ভোরে তাদের আটক করা হয়। পরে এসবির কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন নেপালি এম্বাসির কর্মকর্তারা। সরকারের নির্দেশে নেপালি এম্বাসির মাধ্যমে আটককৃত ৪৪ জনকে আজ শনিবার দেশে ফেরত পাঠানোর কথা রয়েছে। যদি ফেরত না পাঠানো যায়, তাহলে ফরেন অ্যাক্টে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। নেপালি নাগরিকদের আটকের পর ওই বাসাতেই
রাখা হয়েছে। তাদের যিনি বাসাভাড়া নিয়ে দিয়েছিলেন, তাকেও পুলিশ আটক করেছে। আটকের পর নেপালি এম্বাসিতে জানানো হয়। পরে তাদের সঙ্গে শুরু হয় আলোচনা।
জানা যায়, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণেই তাদের আটক করা হয়েছে। এছাড়া আর কোনো বিষয়ে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির জানান, আটক ৪৪ জনকে তাদের দেশে ফেরৎ পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। প্রথমে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আটককৃত ৪৪ নেপালিকে পুশব্যাক করার কথা ছিল।
এদিকে, মিরপুরে ডিওএইচএস পরিষদের কর্মকর্তা কাজী এলেম হোসেন জানান, নেপালিদের সব তথ্য বাড়ির মালিক পুলিশকে দিয়েছে। আইনি প্রক্রিয়াতেই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর মিরপুর ডিওএইচএস পরিষদ ওই এলাকা থেকে সব মেসবাসার ভাড়াটিয়াদের বাসা ভাড়া না দেওয়ার জন্য বাড়িওয়ালাদের চিঠি দিয়ে অনুরোধ করে। এরপর গত ২৯ জুলাই ডিওএইচএস ৭ নম্বর সড়কের ১০৬০ নম্বর বাসার মালিক ব্রি. জে. (অব.) আশরাফুল ইসলাম খান তার বাসা থেকে ৪৭ নেপালিকে বাসা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। কিন্তু ১ আগস্ট তারা বাসা না ছেড়ে যাওয়ায় বাড়ির মালিক বিষয়টি পরিষদকে ফের জানান। ডিওএইচএস পরিষদ বিষয়টি পল্লবী থানাকে জানায়। এরপরই বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় পল্লবী থানা পুলিশ ওই বাড়িতে যায়। এর আগে বৃহস্পতিবার তিন নেপালি চলে যান। তাদের তিনজনের ভিসার মেয়াদ থাকায় তারা যেতে পেরেছেন বলে পুলিশ জানায়।
কেয়ারটেকার জালাল মিয়া বলেন, গত ২ মে তারা বাংলাদেশে আসেন। ২২ মে একটি বাসে করে ডিওএইচএস গেটে নেমে পায়ে হেঁটে এই বাসায় আসেন। ওয়ালিউল্লাহ নামে এক ব্যক্তি এই বাসাটি আমার স্যারের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছেন। তাদের সব কাগজপত্র স্যারের কাছে দেওয়া আছে। তবে ডিওএইচএস পরিষদ মেসবাসা ভাড়া না দেওয়ার অনুরোধ করলে, স্যার মেসবাসা তুলে দেন। নেপালিদের সবাইকে গত ২৯ জুলাই চলে বাসা ছেড়ে যেতে বলেন। তাদের ১ আগস্ট চলে যাওয়ার কথা থাকলেও যাননি। কারণ তাদের কারও ভিসার মেয়াদ নেই। গত জুলাই মাসে তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তিনজনের মেয়াদ থাকায় তারা গতকাল বৃহস্পতিবার চলে যান। বাকিরা এখানেই আছেন। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ আসে। তাদের আটক করে নিয়ে যায়।
জালাল মিয়া আরও বলেন, নেপালিরা হিন্দি এবং উর্দুতে কথা বলে। আমি তাদের সঙ্গে উর্দুতে কথা বলতাম। আমি উর্দু একটু একটু পারি। শুনছি বনানীর একটি ক্লাবে তারা কাজ করে। গত কয়েকদিন ধরে তারা সেখানে যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ওয়ালিউল্লাহর বাড়ি কুমিল্লাতে। সেই বাড়িটি ভাড়া নিয়েছে স্যারের কাছ থেকে। তবে কত টাকা ভাড়া তাও জানি না।
পল্লবী থানার পুলিশ জানায়, মিরপুর ডিওএইচএসে আটক ৪৪ নেপালি বনানীর একটি হোটেলে কাজ করতেন। দুটি সিফটে ভাগ হয়ে তারা কাজ করতেন। গাড়িতে করেই তাদের আনা-নেওয়া করা হতো। তারা বাসার বাইরে তেমন বের হতেন না। বাংলাদেশে ওয়ালিউল্লাহ নামে তাদের এক এজেন্ট আছেন। তিনি আদম ব্যবসা করেন বলে জানা গেছে। তাকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পুলিশ আরও জানায়, চলতি বছরের ২ মে বেনাপোল বর্ডার দিয়ে এই ৪৭ নেপালি নাগরিক বাংলাদেশে আসেন। এরপর বাংলাদেশি নাগরিক ওয়ালিউল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২২ মে তারা ডিওএইচএস-এর ৭ নম্বর রোডের ১০৬০ নম্বর বাসায় ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। বাসার মালিক ব্রি. জে. (অ.) আশরাফুল ইসলাম। তাদের মধ্যে অনেকে কয়েকদিন কলাবাগানের একটি বাসাতেও ছিলেন। পুরো ভবনটিতেই তারা ছিলেন। তারা ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। তবে ১৯ জুন তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ভিসার মেয়ার বাড়ানোর জন্য ওয়ালিউল্লাহের কাছে সবার পাসপোর্ট জমা দিয়েছিলেন। তবে কারও পাসপোর্ট তিনি ফেরত দেননি।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ৭ নম্বর রোডের ১০৬০ নম্বর বাসাটি ৭ তলা। দুই ইউনিটের। এখানে মোট ১২টি ফ্ল্যাট আছে। প্রতিটি ফ্ল্যাটেই এই নেপালি নাগরিকদের থাকতে দেওয়া হতো।
বাড়িটির সামনেই জাহিদ নামে এক তরুণ মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জের ব্যবসা করেন। তিনি জানান, তারা হিন্দিতে কথা বলে। সবাই এয়ারটেল সিম ব্যবহার করতেন। কার্ড নিয়ে রিচার্জ করতেন। নম্বর জানি না। কাল সকাল থেকে বাসায় পুলিশ আসতে দেখেছি। এরপর নেপালিরা আর বের হচ্ছেন না। পাশের বাসার বাসিন্দা গাড়িচালক সুমন বলেন, নেপালিদের মাঝে মাঝে বাসার সামনে সিগারেট হাতে দেখতাম। তারা সবাই হিন্দিতে কথা বলতেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।