পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কক্সবাজারের টেকনাফে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামী ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলালকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। গতকাল সোমবার কারাগারে থাকা এই ৩ আসামিকে জেলগেইটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একটি সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে ওসি প্রদীপ ও ইন্সপেক্টর লিয়াকতের স্বীকারোক্তিতে কমিটি নিশ্চিত হয়েছেন মেজর সিনহা হত্যার সাথে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি। তবে তদন্ত কমিটি এ নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি।
তিন আসামীকে জেলগেইটে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেল সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলালকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা তাঁর অফিস কক্ষেই সন্ধ্যা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
গত ৩১ জুলাই টেকনাফে চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার এপর্যন্ত অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট বাদী পক্ষ ও টেকনাফের সাধারণ মানুষ। ঘটনার পর পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এই হত্যাকান্ডের সৃষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমদ ও আইজিপি বেনজির আহমদ।
মেজর (অব) সিনহার মায়ের সাথে টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রী কথা বলে বিচারের ব্যাপারে আশ্বস্থ করায় সিনহার মা ছেলে হত্যার বিচার নিয়ে আশ্বস্থ হয়েছেন। তিনি নিজেই সংবাদ সম্মেলন করে বিচার ও তদন্ত প্রক্রিয়ায় খুশি বলে জানিয়েছেন। একইভাবে মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে এখন কারাগারে রয়েছে বেপরোয়া ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার ও ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী। গত দুই বছর ধরে তারা মাদক নির্মুলের নামে টেকনাফে বেপরোয়া খুন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি করে আসছিল। সেই খুন-চাঁদাবাজি তা এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টেকনাফের মানুষ খুশী। তারা চায় সিনহা হত্যাসহ প্রদীপ লিয়াকত সিন্ডিকেট সদস্যদের হাতে যারা নিহত হয়েছেন তাদের সবার হত্যাকান্ড তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করা হোক।
কক্সবাজার জেলা জেল গেইটে তিন আসামীকে যারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান, সদস্য চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাকির হোসেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ।
তারা কারাগারে থাকে ৩ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র্যাবের ৭ দিনের রিমান্ডে থাকা বাকি ৭ আসামিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবেন বলে জানা গেছে।
র্যাবের রিমান্ডে থাকা ৭ আসামি হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন এবং টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার ৩ সাক্ষী মো. নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও মোহাম্মদ আয়াস। আদালতের নির্দেশে গত শুক্রবার তাদেরকে রিমান্ডে নেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় নিহত মেজর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে গত ৫ আগস্ট টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরির্দশক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আর মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয়েছে র্যাবকে। ইতোমধ্যে মামলার নতুন আইও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এই মামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। সব আসামীর ৭ দিন করে রিমান্ড মন্জুর কারছে আদালত। তবে এই পর্যন্ত ৭ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে র্যাব। অন্য তিনজন এখনো কারাগারে।
এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি গত রোববার টেকনাফ শামলাপুর পুলিশ চেক পয়েন্ট এলাকায় গণশুনানীর আয়োজন করে। ওই গণশুনানিতে এলাকার ৯জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন তদন্ত কমিটি। এ ছাড়াও তদন্ত কমিটি এই পর্যন্ত ৬২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গতকাল বিকেলে মেজর সিনহা নিহত হওয়ার স্থান পরিদর্শন করেছেন র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন। উচ্চপদস্থ একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে র্যাব মহাপরিচালক পুলিশের গুলিতে মেজর সিনহা নিহত হওয়ার স্থান টেকনাফ বাহারছরা শামলাপুর মেরিন ড্রাইভস্থ পুলিশ চেকপয়েন্ট এলাকায় যান। সেখানে স্থানীয় লোকজনের সাথেও কথা বলেন।
এসময় র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মেজর (অব) সিনহা হত্যা মামলাটি আমি নিজেই তদারকি করছি। র্যাব অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে এই মামলা তদন্ত করছেন বলেও তিনি জানান। এসময় তাঁর সাথে র্যাবের পরিচালক (মিডিয়া) লে. কর্ণেল আশিক বিল্লাহসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ছিলেন। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।