পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জেলগেইটে গিয়েও আসামিদের রিমান্ডে না নিয়ে ফিরে গেছে র্যাব : মহেশখালীতে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি
টেকনাফে সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া চার পুলিশ সদস্য ও তিন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে নেয়ার প্রস্তুতসম্পন্ন। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্তদের নিতে জেলগেইটে গিয়ে আসামিদের না নিয়েই ফিরে গেছে র্যাবের গাড়ি বহর। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে জেলগেইট থেকে বেরিয়ে যায় আসামিদের নিতে আসা র্যাবের গাড়ি বহর।
এদিকে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির আগামী ১৬ আগস্ট রোববার টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে সিনহা হত্যাকান্ড নিয়ে গণশুনানি করবে। এ লক্ষ্যে প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিবর্গদের গণশুনানিতে অংশ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের লক্ষ্যে আসামিদের নিতে কারাগারে গিয়েও র্যাব ফিরে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের জেলসুপার মোকাম্মেল হক জানান, রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন এবং পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মো. আয়াছকে জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার জন্য র্যাবের একটি দল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগারে আসেন। জেল কর্তৃপক্ষ তাদের র্যাব হেফাজতে দেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে। কিন্তু পরে তাদের (র্যাব) ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশে রিমান্ডপ্রাপ্তদের না নিয়েই ফিরে যান। তবে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, রিমান্ডপ্রাপ্ত ৭ আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। যে কোনো সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হবে।
এর আগে এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুনসহ চার পুলিশ সদস্যকে কক্সবাজার জেলা কারাগার ফটকে দুই দিনে দুই দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। একই দিন গত ৬ আগস্ট টেকনাফ বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্ত হওয়া ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী, বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলেও তাদের এখনও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেনি র্যাব।
লিয়াকতের ফোনালাপ : সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় বেড়িয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ গুলি করার পর যাদেরকে সাক্ষী দেখানো হয়, তাদের মধ্যে নাজিম উদ্দীন নাজুর সাথে পরিদর্শক লিয়াকতের রহস্যজনক যোগাযোগের তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সে স‚ত্র ধরেই নাজুসহ পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। পুলিশের গুলিতে সিনহা রাশেদ মারা যাবার পর উল্টো তার (সিনহা) বিরুদ্ধে করা হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে, ওইদিন ঠিক সোয়া ৯টার দিকে এখানে এসে তল্লাশি করতে থাকেন বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী। তার ঠিক ২০ মিনিট পর এখানে আসে সিনহা ও সিফাতের সাদা প্রাইভেটকার। এরপরই ঘটে গুলির ঘটনা। এ ব্যাপারে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহর বক্তব্য হচ্ছে, তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্টরা মনে করেছে ৩ জন হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ছিল। তাদের সংশ্লিষ্টতা মেলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের গণশুনানি : টেকনাফে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনা তদন্তে আগামী ১৬ আগস্ট প্রত্যক্ষদর্শীদের নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি এ গণশুনানির আয়োজন করছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির সদস্য ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাজাহান আলি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির এই সদস্য জানিয়েছেন, আগামী ১৬ আগস্ট রোববার সকাল ১০টা থেকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ইনচার্জ (সিআইসি) কার্যালয়ে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিবর্গদের গণশুনানির আয়োজন করেছে। তদন্ত কমিটির সদস্য ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাজাহান বলেন, টেকনাফে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিবর্গকে নির্ধারিত সময় ও তারিখে উপস্থিত হয়ে গণশুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া গণশুনানি আয়োজনের বিষয়ে প্রস্তুতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান মো. শাজাহান আলি।
নতুন মামলার আবেদন খারিজ : মহেশখালীতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আবদুস সাত্তার নিহতের ঘটনায় থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় চার বছর আগে পুলিশের দায়ের করা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সিআইডিকে। গতকাল বৃহস্পতিবার মহেশখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দীন এ আদেশ দেন। চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি এএসপি মর্যাদার নিচে নয় এমন একজন সিআইডি কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। গত বুধবার ভিকটিম আবদুস সাত্তারের স্ত্রী হামিদা আক্তার এর দায়েরকৃত মামলার শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।
হামিদা আক্তারের দায়েরকৃত ফৌজদারি দরখাস্তে ফেরদৌস বাহিনীর প্রধান ফেরদৌস, তৎকালীন ওসি প্রদীপ ছাড়া এসআই হারুনুর রশীদ, এসআই ইমাম হোসেন, এএসআই মনিরুল ইসলাম, এএসআই শাহেদুল ইসলাম ও এএসআই আজিম উদ্দিনকে অভিযুক্ত করেন। ভিকটিম আবদুস সাত্তার হোয়ানক প‚র্ব মাঝেরপাড়ার মৃত নুরুচ্ছফার পুত্র। এই মামলায় বাদী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন শহিদুল ইসলাম। মামলার বাদী হামিদা আক্তার জানান, গত ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারি সকাল ৭টার দিকে ফেরদৌস বাহিনীর সহায়তায় হোয়ানকের লম্বাশিয়া এলাকায় তার স্বামী আবদুস সাত্তারকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় থানায় মামলা নেয়নি। অবশেষে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। রিট পিটিশন নং-৭৭৯৩/১৭ ম‚লে ‘ট্রিট ফর এফায়ার’ হিসেবে গণ্য করতে আদেশ দেন বিচারক। সেই আদেশের আলোকে তিনি একই বছরের ১৭ জুলাই কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে লিখিত দরখাস্ত দেন। কিন্তু পুলিশ আবেদন আমলে নেয়নি। পুলিশ দাবি করেছে, নিহত আব্দুস সাত্তার অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন। এ ঘটনায় সেই সময় থানায় মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।