পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকান্ড নিয়ে সারাদেশে যখন তোলপাড়; হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সব মহল সোচ্চার। তখন প্রতীপ ও লিয়াকতকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। তখন টেকনাফ থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে র্যাব আটকের পর তাদের বাড়িতে গিয়ে অপহরণ মামলা করতে বাধ্য করে টেকনাফ থানা। এতে পুলিশ কি অভিযুক্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতকে রক্ষার জন্য মামলা তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হতে চায়? নাকি বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ ও আইসি লিয়াকতের অপকর্ম আড়াল করে বাঁচাতেই সক্রিয়? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মাঝে। যদিও অপহরণ মামলা করতে বাধ্য করার ঘটনা অস্বীকার করে টেকনাফ থানার কর্মকর্তারা জানান এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।
মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ৪ পুলিশসহ ৭ আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত মঙ্গলবার তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল র্যাব। এর আগে পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করে তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। পরে তাদের কক্সবাজার জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এই তিনজন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে বলেও জানিয়েছে র্যাব। মঙ্গলবার আদালতে তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড চাইলেও শুনানি শেষে আদালত তাদের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেফতারের আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে তাদের দুই সাক্ষী বলেছেন, মেজর সিনহা হত্যার বিষয়ে তারা কেউ নিজের চোখে কিছু দেখেননি। ৩১ জুলাই ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে তাদের টেকনাফ থানায় নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়।
টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার প্রধান তিন সাক্ষীর একজন নুরুল আমিন। মেজর অব. সিনহা হত্যার ঘটনায় ঘটনার পর তিনি বলেছিলেন, নিজের চোখে কিছুই দেখেননি, শোনেনওনি। একই কথা বলেছেন সেই মামলার আরেক সাক্ষী মোহাম্মদ আয়াছও। গত সোমবার বিকেলে সেই সাক্ষীদের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে হেফাজতে নিয়ে আসে তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। পরদিন মঙ্গলবার সিনহা হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
র্যাব আসামিদের নিয়ে যাওয়ার পর মধ্যরাতে ঘটে টেকনাফ থানা পুলিশ মারিশ বনিয়ায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও মোহাম্মদ আয়াছের বাড়িতে যায়। তদন্ত যখন র্যাবের হাতে, তখন আসামিদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতির কারণ কী? এমন প্রশ্ন এখন সর্বত্র।
টেকনাফ থানায় নিয়োগ পাওয়া নতুন ওসি আবুল ফয়সল কি যোগ দিয়েছেন প্রদীপ-লিয়াকত সিন্ডিকেটের সাথে? নিজাম উদ্দীন নাজুর স্ত্রী শাহেদা বেগমকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাত আড়াইটার দিকে লাথি মেরে দরজা ভেঙে পুলিশ বলে, আপনার স্বামীকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এটা বলতে হবে।
মোহাম্মদ আয়াছের ভাই মো. মোবারক জানান, রাত তিনটার দিকে পুলিশ আসে বাসায়। এসে একটা দস্তখত নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, ভোর রাতে নুরুল আমিনের মা খালেদা বেগমকে টেকনাফ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। খালেদা জানান, সেখানে দুটি কাগজে টিপ সই নিয়ে আবার বাড়িতে পৌঁছে দেয় পুলিশ। হাতের টিপসইয়ের ছাপ দেখিয়ে নুরুল আমিনের মা খালেদা বেগম বলেন, পুলিশ বলছে তোর ছেলের মরা মুখ না দেখতে চাইলে এখানে টিপসই দে। খালেদা বেগমের টিপসই দেয়া সেই মামলার কাগজ পৌঁছেছে বিভিন্ন সংবাদকর্মীদের হাতে।
র্যাব সদস্যদের অজ্ঞাতনামা সাদা পোশাকের লোক হিসেবে উল্লেখ করে, মধ্যরাতেই অপহরণ মামলা নেয় অতি উৎসাহী টেকনাফ থানা পুলিশ। মামলার এজাহারে স্বাক্ষরও করেন টেকনাফে নতুন যোগ দেয়া আসা ওসি আবুল ফয়সল। অথচ র্যাব ওই তিনজনকে গ্রেফতার করার পরে যথানিয়মে আদালতে হাজির করেন এবং তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন। র্যাবের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত গতকাল বুধবার ওই তিনজনের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করে টেকনাফ থানা কর্তৃপক্ষ জানায়, থানায় এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে মহেশখালীর বহুল আলোচিত আবদুস সাত্তার কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনায় থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল মহেশখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন আবদুস সাত্তারের স্ত্রী হামিদা আক্তার। হত্যা মামলার বাদি হামিদা আক্তার জানান, গত ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ফেরদৌস বাহিনীর সহায়তায় হোয়ানকের লম্বাশিয়া এলাকায় তার স্বামী আবদুস সাত্তারকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা নেয়নি। অবশেষে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন তারা। রিট পিটিশন নং-৭৭৯৩/১৭ মূলে ‘ট্রিট ফর এফায়ার’ হিসেবে গণ্য করতে আদেশ দেন বিচারক। সেই আদেশের আলোকে তিনি একই বছরের ১৭ জুলাই কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে লিখিত দরখাস্ত দেন। এ ঘটনায় সেই সময় থানায় মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।