পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বর্তমান সরকার যে মানসিকতায় রাষ্ট্র চালাচ্ছে, তার সঙ্গে জঙ্গিবাদের দর্শনের পার্থক্য নেই। গতকাল বাম মোর্চার এক উদ্যোগে আয়োজিত কনভেনশনে তিনি এসব কথা বলেন, কনভেনশনে জঙ্গিবাদ, রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ ও সা¤্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী চক্রান্তের বিরুদ্ধে সকল বাম-গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন বাম মোর্চার সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী। কমরেড নজরুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর আহম্মেদ, নারী-নেত্রী অধ্যাপক শ্যামলী শীল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা নিত্রা, ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়–য়া, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাউজুল হাকিম লালা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী প্রমুখ।
ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘জঙ্গিবাদসহ সকল নিপীড়নের মূল কারণ হলো পুঁজিবাদ, গোটা-বিশ্বব্যাপী যা আজ ফ্যাসিবাদী রূপ গ্রহণ করেছে। সম্পন্ন ঘরের ছেলেরা কেন জঙ্গি হচ্ছে তার কারণ বুঝতে হলে শিক্ষা ও সমাজের দিকে তাকাতে হবে। শিক্ষার পরিমাণগত বিস্তার ঘটেছে কিন্তু গুণগত উৎকর্ষ ঘটেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাসহ জ্ঞানচর্চার অভাব ঘটছে। পাঠ্য বইতে ইতিহাসের স্থান সংকুচিত। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তত্ত্বগত বিজ্ঞান, মানববিদ্যা দর্শন, ইতিহাস এসবের কোনো চর্চা হয় না। এভাবে শিক্ষার নামে অজ্ঞানতা, বিচ্ছিন্নতা-সমাজ বিচ্ছিন্নতা, ইতিহাস-বিচ্ছিন্নতা, যুক্তি-বিচ্ছিন্নতা তৈরি হচ্ছে। বিচ্ছিন্নতা পুঁজিবাদের রোগ; তৈরি করছে হতাশা। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তায়ন, দুর্নীতি, আগ্রাসন, লুটপাটÑ এ সবের যথার্থ কারণ বুঝতে না পেরে কখনও তাদের কাছে ধর্মীয় পরিচয়টাই বড় হয়ে উঠেছে।’
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘তরুণরা দুঃসাহসিক কাজ চায়। একাত্তরে এই তরুণরাই লড়েছে জীবনের জন্য। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা জীবনের কাজের পরিবর্তে জীবিকার কাজে তরুণদের নিবদ্ধ করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় দলগুলোর রাজনৈতিক আধিপত্যের পরিবেশে নেই কোনো মতাদর্শিক আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক ও খেলাধুলা। ২৫ বছর ধরে হচ্ছে না ছাত্র সংসদ নির্বাচন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার যে মানসিকতায় রাষ্ট্র চালাচ্ছে, তার সাথে জঙ্গিবাদের দর্শনের কোনো পার্থক্য নেই। জঙ্গিবাদের দর্শন হলোÑ ‘আমার মতই শ্রেষ্ঠ। ভিন্নমত না-জায়েজ, হত্যা করা তাই সঙ্গত। সরকার নিজেদের জনবিরোধী কাজকেই ঠিক মনে করছে। গণবিরোধিতা তার কাছে অপরাধ। ক্রসফায়ার তার কাছে জায়েজ, সুন্দরবন রক্ষার দাবি তার কাছে না-জায়েজ।’ যাকে সরকার উন্নয়ন বলবে, সকলকেই তা উন্নয়ন বলতে হবে। ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বাহ্যিক তৎপরতা যেটি দৃশ্যমান, তা লোক দেখানো ব্যাপার। জঙ্গিবাদী মতাদর্শ দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করা যায় না।
তিনি আরো বলেন, ‘কোনো ঘটনা ঘটলেই সা¤্রাজ্যবাদীরা সহযোগিতার নাম করে ছুটে আসে। অথচ বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের প্রধান হোতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তালেবান, আল-কায়েদা, আইএস-এদের তৈরির পেছনে সা¤্রাজ্যবাদীদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে। ফলে এদের ও এদের সহযোগীদের ‘ওয়ার অন টেরর’-এর পথে জঙ্গিবাদ দমন হবে না। এরা যেমন তৈরি করে, আবার সময়ে দমনও করে। সবকিছুর মূলে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ। কলঙ্কে ভরা, সন্ত্রাসের হোতারাই আজ জঙ্গি দমনে তৎপর। সাম্প্রদায়িকতা অসহিষ্ণুতা যে সামাজিক পরিবেশে তৈরি হচ্ছে, তাকে মোকাবেলা করতে হলে ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-নারী সমাজের লড়াই, জাতীয় সম্পদ রক্ষাসহ জনঅধিকারের দাবির লড়াইগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।