Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ইফা মাদরাসার শিক্ষকরা ৮ মাস যাবত বেতন পাচ্ছে না

সেমাই চিনিও ভাগ্যে জোটেনি দুই ঈদে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষক শিক্ষিকারা বিগত ৮ মাস যাবত বেতন ভাতা পাচ্ছে না। এসব শিক্ষক পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহার-অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছেন। দেশের বন্যাদুর্গত এলাকার এসব শিক্ষক সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। গত দু’টি ঈদেও এদের অনেকেই সেমাই চিনি পর্যন্ত কিনতে পারেননি। একাধিক ভুক্তভোগী শিক্ষক এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ সোমবার ইনকিলাবকে বলেন, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ’র ইন্তেকালে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার প্রকল্প অনুমোদনের বিষয়টি ঝুলে গেছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রকল্প অনুমোদন সম্ভব নয় বলেও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক উল্লেখ করেন। তিনি ইঙ্গিত দেন যে, নতুন ধর্মমন্ত্রী দায়িত্ব নেয়ার পরই তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে দারুল আরকাম মাদরাসা শিক্ষকদের ভাগ্য।

এদিকে, বাংলাদেশ দারুল আরকাম শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাওলানা জয়নুল আবেদীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিষ্ঠিত দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার ২ হাজার ২০ জন শিক্ষকের অবিলম্বে বেতন-ভাতা প্রদান ও ১৫ আগস্ট শোক দিবসের কর্মসূচি পালনের জন্য অফিস আদেশ প্রদানের জন্য ইফার মহাপরিচালকের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ইসলামের খেদমতে বঙ্গবন্ধুর অবদান প্রসার এবং সারাদেশে কোমলমতি শিশুদের ইসলামী নৈতিক শিক্ষা দানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের অধিনে দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৪ সালে একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী অনুমতি প্রদান করেন। ২ হাজার ২০ জন শিক্ষক ২০১৮ সালের মার্চ মাসে নিয়োগ পেয়ে স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদান করে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ইচ্ছাকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, ভ‚মি, ভবন নির্মাণ, ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষা দেয়াসহ প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রম যথাযথভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। মাত্র দু’বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ভবন নির্মাণসহ প্রায় ২ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে এসব প্রতিষ্ঠানে। অজ্ঞাত কারণে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প থেকে দারুল আরকার ইবতেদায়ী মাদরাসাকে বাদ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২ জুন মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প পাঁচ বছর মেয়াদী ৭ম পর্বে ৩১শ’ ২৮ কোটি টাকা অনুমোদন দেন। এতে গত জুলাই মাসে প্রকল্পের ৭৬ হাজার সাড়ে ৬শ’ শিক্ষক-কর্মচারী গত ৭ মাসের বেতন ভাতা একসাথে পেয়েছেন। কিন্ত দারুল আরকার মাদরাসাকে প্রকল্প থেকে বাদ দেয়ায় ২ হাজার ২০ শিক্ষক শিক্ষিকার বেতন ভাতার বিষয়টি ঝুলে গেছে। সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো.আব্দুল্লাহ জীবিত থাকা অবস্থায়ও এসব শিক্ষককে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দারুল আরকার মাদরাসার শিক্ষকদের চাকরি বহাল থাকবে এবং পৃথক প্রকল্পের অধীনেই তাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। উল্লেখিত মাদরাসার শিক্ষক, জমিদাতা, ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত ১৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দারুল আরকাম মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইফা মাদরাসার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ