পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যু নিশ্চিত করতে পর পর দুটি গুলি করেন টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। গাড়ি থেকে দুই হাত উঁচিয়ে নেমে আসতেই বাহারছড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী সিনহাকে লক্ষ্য করে পরপর একাধিক গুলি করেন। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।
এরপর লিয়াকত পা দিয়ে তার গলা চেপে ধরেন। কিছুক্ষণ পরই ওসি প্রদীপ ঘটনাস্থলে এসে সিনহাকে লাথি মেরে নিজের পিস্তল থেকে আরো দুটি গুলি করেন। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা মতে ছটফট করা সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত হয় প্রদীপের গুলিতেই। তাকে খুব কাছে থেকেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে সিনহার শরীরে ছয়টি ছিদ্র পাওয়ার কথা বলা হয়। হত্যার পর নৃশংস এই খুনের ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে নানা অপচেষ্টা করেন প্রদীপ। তাকে দানব হয়ে উঠতে যারা সহযোগিতা করেছেন তারা এতে মদদ দেন। তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপারসহ বেশ কয়েকজন পুুলিশ কর্মকর্তা। প্রদীপের উপকারভোগী সাবেক এক পুলিশ সুপার সিনহা খুনের ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায়ও একটি মামলা করার পরামর্শ দেন। ওই মামলা হলে পরবর্তিতে সিনহার পরিবারের মামলা গুরুত্ব হারাবে বলেও জানান ওই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। সিনহা সাবেক সেনা কর্মকর্তা হওয়ায় ভয়ের কোন কারণ নেই বলেও তিনি প্রদীপকে অভয় দেন। তাদের দুই জনের ফোনালাপের অডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। ফোনালাপে আবারও স্পষ্ট হয়েছে ভ্রমণবিষয়ক একটি ভিডিওচিত্র বানাতে টেকনাফে যাওয়া সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা প্রদীপ-লিয়াকতের পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের শিকার হন। গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ফাঁড়িতে মেজর (অব.) সিনহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই দিন টেকনাফ থানায় এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতের দায়েরকৃত মামলায় বলা হয় লিয়াকত আলী তাকে চারটি গুলি করেন। প্রদীপের গুলি করার বিষয়টি মামলায় উল্লেখ করা হয়নি। সুরতহাল রিপোর্টে ছয়টি গুলির চিহ্ন বা আলামত পাওয়া যায়। বাকি দুুটি গুলি কে করলো তা নিয়ে এতোদিন ধোঁয়াশা থাকলেও গত শনিবার প্রত্যক্ষদর্শী এক টমটম চালক সরোয়ার কামাল জানান ওই দুটি গুলি করেন প্রদীপ দাশ। আর তখনই তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়। ভয়ঙ্কর এই খুনের ঘটনা ঘটে অসংখ্য মানুষের সামনে। তাদের অনেকে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন মামলার তদন্তকারী সংস্থা এলিট বাহিনী র্যাব এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটিও তাদের কয়েক জনের বক্তব্য রেকর্ড করেছে।
অপরদিকে সিনহাকে খুনের পরে ঈদের দিন সকালে এ বিষয়ে সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তার কাছে ফোন করে সাহায্য চান প্রদীপ। নিজেকে বাঁচানোর জন্য তার কাছ থেকে পরামর্শ নেন। পরামর্শদাতা কে প্রকাশ না পেলেও তিনি সাবেক পুলিশ সুপার বলে জানান র্যাবের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রদীপ: স্যার আমি ওসি টেকনাফ প্রদীপ, স্যার
পরামর্শদাতা: হ্যা কি খবর প্রদীপ কোরবানির গরুর মধ্যে তুমি?
প্রদীপ: স্যার একটা মহাবিপদে পড়ছি, আপনার সাহায্য দরকার
পরামর্শদাতা: বলো বলো
প্রদীপ: এখন আমরা স্যার একটা ১৫৩, ১৮৬ ও ৩০৭ এ মামলা নিছি স্যার
পরামর্শদাতা: থ্রি ফিফটি থ্রি সরকারি কর্মচারি আরেকটা হচ্ছে
প্রদীপ: আরেকটা হচ্ছে ১৮৬ পুলিশের কাজে বাঁধা
পরামর্শদাতা: আর্মিদেরকে ইন্টিমেশন দিছ কিনা?
প্রদীপ: এরপরে স্যার জানাইছি, আর্মি থেকে লোকজন আসছে
পরামর্শদাতা: এ কি আর্মির নাকি?
প্রদীপ: স্যার অবসরপ্রাপ্ত
পরামর্শদাতা: ও তাইলে এতো ডরের কি আছে?
প্রদীপ: এখন স্যার ও মারা গেছে, ইনজিওরড অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছে
পরামর্শদাতা: এর সঙ্গে যে লোকটা ছিল ওইটা কি?
প্রদীপ: ওইটা স্যার একটা ছাত্র, ইউনিভার্সিটির। সে বলছে তারা রাতের বেলা পাহাড়ের সিন নেয়ার জন্য আসছে। ওরা নাকি ইউটিউবের একটা চ্যানেল করার জন্য আসছে ভ্রমণের উপরে।
পরামর্শদাতা: গাড়িওয়ালারে এরেস্ট করছ কিনা?
প্রদীপ: স্যার গাড়িচালক তো ও নিজেই
পরামর্শদাতা: আচ্ছা তোমরা যে বাঁধা দিছ, ওভারটেক করে গেছে, এটার সাক্ষী আছে কিনা?
প্রদীপ: সাক্ষী আছে স্যার
পরামর্শদাতা: সাক্ষী থাকলে মামলা নিতে বলো
প্রদীপ: মামলা নিছি স্যার ১৮৬, ৩৫৩, ৩০৭ ধারা
রামর্শদাতা: প্রেয়ার দিয়া দিবা যে মার্ডার হইয়া গেছে
প্রদীপ: আরেকটা কেস দিতে হবে না স্যার?
পরামর্শদাতা: আরেকটা কেস নিবা?
প্রদীপ: আরেকটা কেস আমরা কি নিবো? ও যে সদর হাসপাতালে মারা গেছে তাদের একটা কেস নিয়ে নিবো স্যার?
পরামর্শদাতা: আমার তো মনে হয় সদর থানার একটা কেস নিলে ভালো হয়
প্রদীপ: ভালো হবে না স্যার?
পরামর্শদাতা: আমার মনে হয় ভালো হয়। আর্মির লোক তো পরে টানাটানি করে কিনা!
প্রদীপ: না হলে তো স্যার ওরা লাশ নিয়ে গেলে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। আমরা একটা মামলা করে ফেললে ওই মামলাটা ট্যাগ করা যাবে।
পরামর্শদাতা: তাহলে তোমরা একটা কাজ করো না, ৩০৪ এও একটা মামলা নিয়া নিতে পারো
প্রদীপ: ৩০৪ এ আমরা কি লিখবো স্যার?
পরামর্শদাতা: লেখবা যে হাউএভার মারা গেছিলো। এ কারণে মামলা করা হলো। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হোক।
প্রদীপ: স্যার ৩০৭ এ আসামির কলামে কি লিখবো?
পরামর্শদাতা: না আরেকটা সেপারেট মামলার জন্য বলছি। যেহেতু মারা গেছে তাই এ মামলা করা হলো।
প্রদীপ: স্যার মামলা নিবো যে আসামির কলামে নাম লিখতে হবে না?
পরামর্শদাতা: পুলিশে গুলি করছিলো, বুজছি তো। এই এজাহারটা পুরা লিখবা, যে এই এই কারণে তাকে অবস্ট্রাকশন করে আটকানো হইছিলো। আটকানো হওয়ার পরে এই মামলা রুজু হইছে। হাসপাতালে পাঠানোর পরে সেখানে সে মারা গেছে। যেহেতু মানুষ মারা গেছে তাই তদন্ত সাপেক্ষে মামলা করা হলো, ৩০৪ এ।
প্রদীপ: আসামি অজ্ঞাত।
পরামর্শদাতা: এইটা করলে কোর্টে এইটা ট্যাগ হয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।