Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খোলা আকাশের নিচে শত শত পরিবার

প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

উত্তরাঞ্চলের বন্যার উন্নতি : ঢাকার আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে
ইনকিলাব রিপোর্ট : দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি কমতে থাকায় উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে সেখানকার পানি গড়িয়ে ভাটির দিকে আসায় ঢাকা ও এর আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ধলেশ্বরী, তুরাগ, বালু, টঙ্গী খাল, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রর তথ্যানুযায়ি, নতুন করে বন্যার আশঙ্কা আপাতত নেই। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মাসের (আগস্ট) মাঝামাঝি আরও এক দফা বন্যা হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, বন্যা দুর্গত এলাকায় পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করেছে রোগের প্রাদুর্ভাব। ডায়রিয়া, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহ, শ্বাসনালীর প্রদাহসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বানভাসীরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেল্থ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, বানের পানিতে ডুবে গত নয় দিনে শিশুসহ ৫৫ জন ও সাপে কাটায় পাঁচজন মোট ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। উপদ্রুত এলাকায় ৫ হাজারেরও অধিক মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। কক্ষের তথ্যানুযায়ি, এসব এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে চিকিৎসাকর্মীদের ৭শ’ দল কাজ করছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানায়, বন্যাকবলিত ১৬ জেলার ৭২ উপজেলার ৩৭৮ ইউনিয়নের ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৯১৪টি পরিবার এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার ১১২টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের জরুরি সাড়া দান কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছালেহ উদ্দিন জানান, দুর্গত এলাকায় স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি জিআর চাল, জিআর ক্যাশ, প্যাকেটজাত শুকনো খাবার, গুড়সহ পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
তবে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, মানুষ এখনও ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে। খোলা আকাশে নিচে অবস্থান করছে শত শত পরিবার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধরী মায়া বীরবিক্রম সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখছেন। তিনি বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছেন।
অপরদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৬ আগস্ট বন্যার ক্ষয়ক্ষতি দেখতে জামালপুর যাচ্ছেন।

গাইবান্ধায় বন্যার্তদের দুর্ভোগের শেষ নেই
গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা : গাইবান্ধায় বিভিন্ন নদ-নদীর পানি দ্রুত হ্রাস পাওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে যেতে শুরু করায় আশ্রয় কেন্দ্র ও বাঁধে আশ্রয় গ্রহণকারীরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ৭ সে.মি. কমে বিপদসীমার ৫ সে.মি. নিচ দিয়ে এবং ঘাঘট নদীর পানি ১২ সে.মি. হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৭ সে.মি. নিচ দিয়ে এখন প্রবাহিত হচ্ছে। ফুলছড়ি উপজেলার দুটি বাঁধ ধসে যাওয়ায় পানি নামতে পারেনি এবং সংলগ্ন এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিভিন্ন এলাকায় বন্যা কবলিত লোকজনের দুর্দশা কাটেনি। পথ-ঘাট ডুবে থাকায় নৌকাই সেখানে চলাচলের একমাত্র বাহন। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত নারী-পুরুষ ঘরবাড়ি ডুবে থাকায় বাড়ি ফিরতে পারছেন না। হাতে কাজকর্ম নেই পাশাপাশি জ্বালানি সমস্যা, খাদ্য সংকট, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার বেহাল দশার কারণে তারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এদিকে ফুলছড়ি উপজেলায় ৬টি ব্রীজ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে এবং রাস্তা-ঘাটে পানি থাকায় ওই উপজেলার সাথে জেলা সদর ও অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বন্যার পানি কমলেও নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে।
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে এ উপজেলায় তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেলে লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ে। গত ৩ দিন থেকে পানি কমতে শুরু করায় তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদী-নদীর কয়েকটি স্থানে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এলাকায় নদী ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে সহ¯্রাধিক পরিবার বিলীন হয়েছে। নদী ভাঙ্গন এলাকার পরিবারগুলো বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়া বন্যার পানি কমায় অনেক পরিবারই আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে বাড়িতে উঠলেও দুভোর্গ কমেনি।
বন্যা দুর্গতদের ত্রাণের জন্য হা-হা-কার
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেলেও কুড়িগ্রাম জেলার ৯ উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার এবং ধরলা কুড়িগ্রাম ব্রীজ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নদী তীরবর্তী নি¤œাঞ্চলের পানি ধীরে ধীরে নামতে থাকায় এখনো ৫৩টি আশ্রয় কেন্দ্র, বাঁধের রাস্তা ও উঁচু স্থানে আশ্রিতরা অনেকেই এখনও ঘরে ফিরতে পারেনি। ফলে খোলা আকাশের নীচে তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
বানভাসী সাড়ে ৬ লাখ মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। বরং বিরাজ করছে খাদ্যের জন্য হাহাকার অবস্থা। সরকারি ত্রাণ সরবরাহ অপ্রতুল। পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জেলা বন্যা কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব মোল্লা জানান, জেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৮৬ পরিবারের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ বন্যার দুর্ভোগে পড়েছে। বন্যায় ৫৩ কি.মি. বাঁধ ও ৩৯টি ব্রীজ নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫১ দশমিক ৫০ কি.মি.পাকা ও ৪৭৪ দশমিক ৩০ কি.মি. কাচা রাস্তা। ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ২২৮টি। এছাড়াও নদী ভাঙন ও জলমগ্নের কারণে ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৮৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৫ মে. টন চাল ও ৩৪ লাখ টাকা। এছাড়া ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
ডিমলায় ২ হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বাঁধে
নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর বন্যা ও ভাঙনে প্রায় দুই সহ¯্রাধিক পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এসব পরিবার এখন তিস্তা বাঁধসহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
জানা গেছে, এবারের বন্যা ও বন্যাপরবর্তী ভাঙনে তিস্তা নদীর মূল অংশ ভরাট এবং অসম্পন্ন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে গত ২০দিনে তিস্তার মূল অংশের বাইরে উপজেলার চরখড়িবাড়ী হয়ে নতুন দুটি চ্যানেল তৈরি হয়েছে। এতে করে টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ী, মধ্য খড়িবাড়ী, পুর্ব খড়িবাড়ী, একতার বাজার, দীঘির পাড়, টাবুর চর সহ ১০টি গ্রামের ২ হাজার ২৪০টি পরিবার বসবাস করলেও ইতিমধ্যে ১ হাজার ৮৩৬টি পবিবারের বসতভিটা, আবাদী জমি, বিদ্যালয়, রাস্তাঘাট পুল-কালভার্ট বিলীন হয়ে গেছে। বাকী পরিবারগুলি রয়েছে পানিবন্দি অবস্থায়। এছাড়া বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের কিসামত ছাতনাই গ্রামের ৩৫টি ও ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ছাতুনামা ও ফরেষ্টের চরের ৩৪৫টি পরিবার। হুমকির মুখে রয়েছে চড়খড়িবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পটি।
যমুনায় পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি
আরিচা সংবাদদাতা জানান, মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনা নদীর পানি দু’দিন ধরে কমতে শুরু করেছে। কিন্ত খাদ্য সংকট, বিশুদ্ধ পানির আভাব ও পানিবাহিত রোগসহ পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ লেগেই আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শিবালয় উপজেলার আরিচাঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীতে ১৩ সেন্টিমিটার পানি হ্রাস পেয়েছে। বুধবার সকালে উক্ত পয়েন্টে বন্যার পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মা-যমুনায় পানি কমলেও শাখা নদী ইছামতি, কালীগঙ্গা ও ধলেশ্বরীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে এসব নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে ভাঙন ও বন্যার পানিতে বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে আছে। রাস্ত-ঘাট, বাঁধ ভেঙ্গে ও ডুবে গিয়ে এখনো পানিবন্দি হয়ে চরম দুভোর্গে পড়েছেন জেলার ৬৫টি’র মধ্যে ৩৫টি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষ। বন্যার কারণে জেলার ৩৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৮৪ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানিতে অনেক পুকুর ভেসে গিয়ে মৎস্যচাষীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কৃষকদের ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাড়ি-ঘর ডুবে বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলে বিশুদ্ধ পানির অভাবে পড়েছে অনেক পরিবার। গত তিনদিন ধরে এ জেলার বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
বগুড়ায় ৪৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা স্থগিত
বগুড়া অফিস জানায়, গতকাল (বুধবার) থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার কথা থাকলেও বগুড়ায় বন্যাকবলিত তিনটি উপজেলায় ৪৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপজেলাগুলো হলো-সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা। স্ব-স্ব উপজেলায় একই প্রশ্নে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, যমুনার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্ব পাশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্যার পানি প্রবেশ করায় সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আজ ৩ আগস্ট থেকে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার কথা থাকলেও বন্যার পানি প্রবেশ করায় সেখানে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সংগত কারণেই উপজেলার ১৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
চাঁদপুর মেঘনায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি
চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : চাঁদপুর মেঘনা নদীর পানি জোয়ারে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। সান্ধ্যকালীন জোয়ারে সর্বোচ্চ পানির পরিমাণ রেকর্ড করা হয় ৪.৪৭ সে.মি.। সর্বনিম্ন পরিমাণ ছিলো ৩.৬৯ সেমি। মেঘনার পানি বিপদসীমার ৪৭ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ তথ্য পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের গেজ রিডিংম্যান মো. সেলিম জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, আগের দিন রোববার সর্বোচ্চ পানির পরিমাণ ৪.৩৩ সে.মি. রেকর্ড করা হয়েছে। আগের দিনের তুলনায় ১৪ সে.মি. পানি বেড়েছে। পাশাপাশি ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া এ দু’ নদীরও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চাঁদপুরের চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে পুরোদমে বন্যা দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বিপদে রয়েছে হাইমচর, চাঁদপুর ও মতলবের চর এলাকার পরিবারগুলো। তারা পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।
কালকিনিতে মানুষের মানবেতর জীবনযাপন
কালকিনি (মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুরের কালকিনিতে আঁড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বহু গ্রাম আর অব্যাহত ভাঙনের কবলে পড়ে ভিটেমাটিহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে উপকূলবাসী। অনাহারে-অর্ধাহারে থেকে খোলা আকাশের নিচে ভাঙন কবলিত মানুষেরা বসবাস করলেও তাদের পাশে দাঁড়ানো থাক দূরের কথা কেউ শান্তনা পর্যন্ত দিতে আসছে না। এমন অভিযোগ ভূক্তভোগী পরিবার গুলোর। ব্যক্তি পর্যায় থেকে উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি নেয়ামুল আকন ভাঙ্গন কবলিত পরিবার গুলোর মধ্যে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু সাহায্য সহযোগিতা করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।
মির্জাপুরে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ৩ শতাধিক বাড়ি ৩৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে বংশাই নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় ইতোমধ্যে মির্জাপুর মহিলা কলেজসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বুধবার সকালে মির্জাপুর উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শক করেছেন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহা। তিনি উপজেলার বংশাই নদীর গোড়াইল, চাকলেশ্বর, থলপাড়া ও ফতেপুর ইউনিয়নের নদী ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।



 

Show all comments
  • Hm Oliullah ৪ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৪৩ এএম says : 0
    হে আল্লাহ, তুমি এদের সাহায্য করো।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খোলা আকাশের নিচে শত শত পরিবার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ