পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনো কমেনি। এরই মধ্যে পালিত হবে এবারের পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষ্যে প্রতিবারই হাটে গিয়ে কোরবানির পশু কেনাকাটাও এক প্রকার উৎসবের মতোই থাকে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এবার ভীড় এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর এজন্যই পশু কেনার বিকল্প মাধ্যম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যদিও বিগত কয়েকবছর ধরেই ঢাকা ও চট্টগ্রামে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাবেচা শুরু হয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি এটি ছড়িয়ে দিয়েছে সারাদেশেই। রাজধানী থেকে জেলা-উপজেলা শহরেও অনলাইনে বসছে কোরবানির পশুর হাট। খামারি-কৃষকরা তাদের পালিত পশু ডিজিটাল প্লাটফর্মে তুলে ধরছেন, ক্রেতারা ঘরে বসেই কিনে নিচ্ছেন পছন্দের গরু-ছাগল।
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার অনলাইনে পশু বিক্রি হচ্ছে অনেক বেশি। খুশির খবর হচ্ছে শুধু রাজধানী বা বড় শহরগুলোতেই নয়, উপজেলা পর্যায়েই অনলাইনে কেনাকাটায় অভ্যস্ত হচ্ছে মানুষ। তিনি বলেন, ঢাকায় উত্তর সিটি করপোরেশনের সাথে ই-ক্যাব ডিজিটাল হাট পরিচালনা করছেন। এছাড়া বিভিন্ন জেলা শহরেও প্রশাসনের উদ্যোগে অনলাইন হাট বসছে।
চলতি মাসের শুরুর দিক থেকেই বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম গরুর হাট শুরু করে। গরু-ছাগলসহ কোরবানির পশু বিক্রির জন্য অসংখ্য কৃষক, খামারি, ব্যবসায়ী এর সাথে যুক্ত হন। প্রথম দিকে কেনাবেচা কিছুটা ধীরগতিতে হলেও গত কয়েকদিন ধরেই তা বেড়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে চালু হয়েছে ‘ডিজিটাল হাট’। তাদের সঙ্গে তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগ, ই-ক্যাব এবং বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এই ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন করছে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা প্রশাসন অনলাইন হাটের উদ্যোগ নিয়েছে। বিভিন্ন খামারির ব্যক্তিগত উদ্যোগে চলছে ই-হাট, কোরবানির গরুর মেলা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেকেই নিজের খামারের নামে ফেসবুকে পেজ খুলে সেখানে পশুর ছবি, ভিডিও, বিবরণ, দামসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্যই তুলে ধরেছেন। সাথে থাকছে ফ্রি হোম ডেলিভারি। শুধু তাই নয়, কোন কোন খামারি ও অনলাইন প্লাটফর্ম পশু কোরবানি ও মাংস প্রক্রিয়াত করে ক্রেতার বাসায় পৌঁছে দেয়ারও অফার দিচ্ছেন। বিক্রয় ডট কম, বেঙ্গল মিট, আজকের ডিল, দারাজ, প্রিয়শপ, কাউ হাট, ইভ্যালি, অথবা ডটকমসহ অসংখ্য অনলাইন সাইট কোরবানিরর পশুর হাট বসিয়েছে। ফেসবুকে বিভিন্ন খামারি তাদের নামে পেজ খুলে গরু বিক্রি করছে। এসব প্লাটফর্মে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যেমন- ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, বগুড়া, কুমিল্লা এভাবে ওই এলাকার খামারের গরু-ছাগলের ছবি, তার বিবরণ, মূল্য সবই তুলে দেয়া হয়েছে। ক্রেতারা চাইলে এসব পশুর মধ্য থেকে পছন্দ করে অর্ডার করলেই তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হবে সেই পশু। ক্রেতারাও ঘরে বসেই বিভিন্ন সাইট ও পেজ থেকে তাদের কোরবানির পশু পছন্দ করছেন। দাম ও পশু পছন্দ হলেই অর্ডার করে নিচ্ছেন হোম ডেলিভারি।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন জানিয়েছেন, গত ১১ জুলাই থেকে তারা অনলাইনে বুকিং নেওয়া শুরু করেছেন। তাদের ফার্মের প্রায় দুই হাজার গরুর মধ্যে গত ২০ জুলাই পর্যন্ত এক হাজারের বেশি গরু বুকড হয়ে গেছে। এর ৬০ শতাংশ আবার ¯øটারিং বা জবাইসহ বুকড হয়েছে। তিনি জানান, এ বছর বড় গরুর চাহিদা কম, ছোট গরুর চাহিদা বেশি। ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে যেসব গরু, সেগুলোই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এরই মধ্যে তাদের সাইট থেকে অনলাইনে মোট গরুর ৫০ শতাংশ বুকিং এসেছে বলেও জানান তিনি।
আজকের ডিলের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর বলেন, আমরা ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করি। কৃষক বা খামারিরা তাদের গরু/ছাগলের ছবি আমাদের ওয়েব সাইটে আপলোড করে তার বর্ণনা এবং মূল্য তুলে ধরেন এবং ক্রেতারা পশু পছন্দ করে বিক্রেতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করেন। এখানে আমাদের কোন ফি দিতে হয় না, এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।
বিক্রয় ডটকমের হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস ঈশিতা শারমিন বলেন, বিক্রয় ডটকম আক্ষরিক অর্থেই অনলাইন পশুর হাটকে দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিবছরই আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বাড়ছে অনলাইনে কোরবানির পশুর কেনাবেচা। এবার করোনার কারণে সেটি আরো বাড়বে বলে আশা করছি।
কুমিল্লার মা ফরিদা ডেইরি অ্যান্ড এগ্রোর স্বত্বাধিকারী মাহতাব পিংকু বলেন, এ বছর খামারে ১৪৯টি গরু কোরবানির জন্য মোটাতাজা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭০টির বেশি গরু অনলাইনে বিক্রি হয়েছে।
চট্টগ্রামের ফার্ম শাহ আমানত এগ্রোর মালিক মো. আখতার হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় ৪০টি পশু বিক্রি হয়েছে অনলাইনে। আশা করছি, গত বছরের চেয়ে এবার কয়েকগুণ বেশি পশু বিক্রি হবে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।