পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া জিয়াউর রহমান শূন্য, আর জিয়াউর রহমান ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নবিদ্ধ। গতকাল ‘দেশের বিরাজমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা আরেকটা ১৫ আগস্ট চাই না। প্রধানমন্ত্রী আপনার সম্মানহানি হোক এটা আমি সহ্য করব না। তবে জিয়াউর রহমানের সম্মানহানি করবেন তাও আমি সহ্য করব না। বঙ্গবীর জানান, তিনি জামায়াতের সঙ্গে বেহেশতেও যেতে রাজি নন। তাকে যদি বেহেশতের টিকিট ধরিয়ে দেয়া হয় আর সেখানে গিয়ে দেখেন জামায়াত আছে তাহলে তিনি তাতেও আপত্তি জানাবেন। আলোচনা সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ভারতের কারণেই বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের সৃষ্টি হয়েছে। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত এ আলোচনা সভা জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাসদ সভাপতি আ স ম আবদুর রব, শত নাগরিক কমিটির আহবায়ক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজউদ্দীন আহমদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সৈয়দ আবুল মকসুদ, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রমুখ।
জঙ্গি রুখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতীয় ঐক্যকে খারিজ করে দিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, অনতিবিলম্বে জামায়াত ও হাসানুল হক ইনুকে বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জঙ্গিবাদ দমনে জাতীয় কনভেনশন ডাকতে হবে। যেখানে দেশের ৪২টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। কারণ, আপনার ঘরের ঐক্য কখনো জাতীয় ঐক্য হবে না। আগামী ৪ আগস্ট সন্ধ্যার পর দেশের বিরাজমান পরিস্থিতির বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আলোচনা করবেন এমন তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ওই আলোচনায় আমি খালেদা জিয়াকে বলবো আপনার ছেলে তারেক রহমানকে বলতে বলুন যে, তার বাবা ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান’ বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন না। তিনি হয়তো ৭ নাম্বার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আরো বলবো, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের বন্ধু ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের বন্ধু। এছাড়া বিএনপির নজর ও দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাতে বলবো।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বঙ্গবীর বলেন, খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের ডাক যদি আপনার চেয়ে শক্তিশালী হয়, তাহলে পরে কিন্তু আপনাকে কাঁদতে হবে। তাই এখনো সময় আছে বিরোধী দলসহ সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকুন। শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আপনার সরকার সত্যিকার অর্থে জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় ব্যর্থ। আপনি পারছেন না। আর একা পারবেনও না। তাই এখনো সময় আছে সকল দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিন। ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন না করার বিষয় টেনে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করতে মানা করেছিলাম। তিনিও পালন করতে চান না। তবে দলের নেতাদের চাপে পড়ে করতে হয় বলে খালেদা জিয়া জানিয়েছেন। আমার কথা হচ্ছে, যিনি কর্মীদের চাপে দিনকে দিন, রাতকে রাত ও ন্যায়কে ন্যায় বলতে পারেন না, তাকে আমি নেতা বলতে রাজি নই। জঙ্গিবাদকে একটি টিউমার হিসেবে আখ্যা দিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, জাতির মধ্যে যখন এটা ঢুকে যায় তখন অপারেশন করতে হয়। জঙ্গিবাদের কনসেপ্টকে জাতি উপড়ে ফেলতে চায়। তবে সরকার কতটুকু চায় তা প্রশ্ন থেকে যায়। আমাদের জঙ্গি (টিউমার) তাকে অপসারণ করতে হবে। আমরা মনে করি, দেশে জাতীয় ঐক্য হবে। জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নাই। এ ব্যাপারে দলমত নির্বিশেষে সবাইকেই আহ্বান জানাই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, সরকারের বাইরে যে সব রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি আছেন তাদের জাতীয় সংকটে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত। আবার সরকার যদি ভুল করে তাও দেখিয়ে দেয়া। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জঙ্গিবাদ এক রকমের প্রতিবাদ। যদিও এই পদ্ধতিটি সঠিক নয়। জঙ্গিবাদের মূল জন্ম রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস থেকে। ভারতীয়দের কারণেই এই দেশে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। মাওবাদী, উলফা, গুপ্তহত্যা, ক্রসফায়ার ইত্যাদি আলোচনা ছাড়া জঙ্গিবাদ ঠেকানো যায় না। পুলিশ, র্যাব একজনকেও জীবিত ধরতে পারে না। সরকার তার জনগণকে বিশ্বাস করে না এটা হতে পারে না। তিনি বলেন, সরকারের বর্তমান অবস্থা হিটলারের ১৯৩৯ সালের নাৎসি বাহিনীর মতো। র্যাবের মহাপরিচালকের ওই পদে থাকার যোগ্যতা নেই। সুতরাং আমি অবিলম্বে ওই পদ থেকে তার পদত্যাগ দাবি করছি। খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, বাড়িতে অন্তরীণ থেকে কোনো লাভ হবে না। জাতির স্বার্থে দলের স্বার্থে সবার স্বার্থে ঘর থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে ওঠে আজ দেশের স্বার্থে সবাইকেই ঐক্যবদ্ধভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, মানুষ চায় জীবনের নিরাপত্তা। সেই জীবনের নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। এই পরিস্থিতিকে সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না। হাজার মানুষ মানববন্ধন করলে জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে তা আমি বিশ্বাস করি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, জঙ্গিবাদ একটা বড় সমস্যা। জঙ্গিবাদ সার্বজনীন সমস্যা। জঙ্গিবাদের উত্থানের পর জনগণের দৃষ্টি আড়াল করার জন্যই জঙ্গি ইস্যু প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী অনেক চুক্তি হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।