Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আতঙ্কে কাটছে পানিবন্দী মানুষের রাত

উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি : প্লাবিত হচ্ছে ঢাকা ও আশপাশের জেলা

প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব রিপোর্ট : উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, গাজীপুর এবং ঢাকা ও এর আশপাশ টঙ্গী, সাভার, কেরানীগঞ্জের নি¤œাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পদ্মা, ধলেশ্বরী, তুরাগ, বালু, টঙ্গী খাল, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এসব এলাকার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।
বন্যাকবলিত এলাকায় এখনো পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেনি। একদিকে আশ্রয়ের খোঁজে পানিবন্দী মানুষের ছোটাছুটি, অন্যদিকে ত্রাণের জন্য হাহাকার। সব মিলিয়ে দুর্গত এলাকায় এক মানবেতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পানিবন্দী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের প্লাবিত মানুষ গরু, ছাগল ও ধান-চাল নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে রাত কাটাচ্ছেন। এসব এলাকায় চোরের উপদ্রব ছাড়াও রাতে সংঘবদ্ধ একটি ডাকাতদল ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে এসে গরু, ছাগল, খাদ্যসামগ্রী লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। সরকারি হিসাবে গতকাল পর্যন্ত বন্যায় ২১ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। তবে বেসরকারি পরিসংখ্যানে মৃত্যুর হিসাব আরো বেশি।
উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বিশেষ করে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, করোতোয়া, বাঙ্গালী ও যমুনা নদীর পানি কমতে থাকায় এসব নদী অববাহিকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। নদীভাঙনের কবলে পড়ে বাড়ি-ঘর, আবাদি জমি, ক্ষেতের ফসল, সবজিতলা, ব্রিজ, কালভার্ট, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি অফিস-আদালত ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বানের পানিতে হাজার হাজার একর ক্ষেতের ফসল, সবজিতলা পানিতে ডুবে যাওয়ায় কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এতে করে কৃষকের পড়েছে মাথায় হাত। আর সবজি সঙ্কট দেখা দেয়ায় বাজারে সব ধরনের কাঁচা তরিতরকারির দাম বেড়ে গেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বন্যাকবলিত জেলাগুলো ঘুরে দেখছেন। তিনি গতকাল (মঙ্গলবার) গাইবান্ধায় বানভাসি মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। তিনি ফুলবাড়ী উপজেলা মাঠে ত্রাণ বিতরণকালে বলেন, বন্যার পানি নেমে গেলে সরকার ৪০ দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি উঁচু করে দেয়ার পদক্ষেপ নেবে। তিনি গাইবান্ধা ছাড়াও নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে ত্রাণ বিতরণ করেন।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থিত লঘুচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি করছে। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত দেখানো হয়েছে। লঘুচাপের কারণে সাগর ফুলে উঠেছে। এতে করে উজানের পানি মেঘনা নদী দিয়ে সাগরে নামতে পারছে না। ফলে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না দেশের পানি বিশেষজ্ঞরা। বরং লঘুচাপের প্রভাবে অধিক বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা থাকায় নদ-নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, সুরমা ও কুশিয়ারা নদ-নদীসমূহের পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে গঙ্গা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে পদ্মা অববাহিকার নদীগুলোর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ-নদী সংলগ্ন গাইবান্ধা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া এবং ধরলা নদীসংলগ্ন কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকবে। একইসাথে পদ্মা নদী সংলগ্ন রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলাসমূহের নি¤œাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকবে।
দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ও এর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে গতকাল পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, বন্যাকবলিত এলাকায় এ পর্যন্ত ৪২৯টি অবকাঠামো এবং ১০৭ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাউবো মাঠ প্রশাসন থেকে জরুরি ভিত্তিতে এসব বাঁধ ও স্থাপনা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩৩৮ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পাউবো মহাপরিচালক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সরকার অর্থ না দিলে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এমনিতেই পাউবো জরুরি কাজের জন্য বছরে বরাদ্দ পায় মাত্র সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা। অথচ প্রয়োজন যেখানে কমপক্ষে এক হাজার কোটি টাকা। সেখানে এই জরুরি ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ না করলে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানায়, গাইবান্ধায় ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার, চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদমীসার ২০ সেন্টিমিটার, বাহাদুরাবাদে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার, সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার, কাজিপুরে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার, সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার, আরিচাতে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার, সিংড়ায় গুর নদীর পানি বিদপসীমার ১৬ সেন্টিমিটার, বাঘাবাড়িতে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার, এলাসিনে ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার, নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার, তরাঘাটে কালিগঙ্গা নদীর পানি বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার, জাগিরে ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার, গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার, ভাগ্যকূলে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার, সুরেশ্বরে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার, জারিয়াজঞ্জাইলে কংস নদীর পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীর পানি বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গরু, ছাগল ও ধান-চাল নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে রাত কাটাচ্ছেন। এসব এলাকায় চোরের উপদ্রব ছাড়াও রাতে সংঘবদ্ধ একটি ডাকাতদল ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে এসে গরু, ছাগল, খাদ্যসামগ্রী লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। সরকারি হিসাবে গতকাল পর্যন্ত বন্যায় ২১ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। তবে বেসরকারি পরিসংখ্যানে মৃত্যুর হিসাব আরো বেশি।
উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বিশেষ করে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, করোতোয়া, বাঙ্গালী ও যমুনা নদীর পানি কমতে থাকায় এসব নদী অববাহিকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। নদীভাঙনের কবলে পড়ে বাড়ি-ঘর, আবাদি জমি, ক্ষেতের ফসল, সবজিতলা, ব্রিজ, কালভার্ট, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি অফিস-আদালত ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বানের পানিতে হাজার হাজার একর ক্ষেতের ফসল, সবজিতলা পানিতে ডুবে যাওয়ায় কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এতে করে কৃষকের পড়েছে মাথায় হাত। আর সবজি সঙ্কট দেখা দেয়ায় বাজারে সব ধরনের কাঁচা তরিতরকারির দাম বেড়ে গেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বন্যাকবলিত জেলাগুলো ঘুরে দেখছেন। তিনি গতকাল (মঙ্গলবার) গাইবান্ধায় বানভাসি মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। তিনি ফুলবাড়ী উপজেলা মাঠে ত্রাণ বিতরণকালে বলেন, বন্যার পানি নেমে গেলে সরকার ৪০ দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি উঁচু করে দেয়ার পদক্ষেপ নেবে। তিনি গাইবান্ধা ছাড়াও নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে ত্রাণ বিতরণ করেন।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থিত লঘুচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি করছে। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত দেখানো হয়েছে। লঘুচাপের কারণে সাগর ফুলে উঠেছে। এতে করে উজানের পানি মেঘনা নদী দিয়ে সাগরে নামতে পারছে না। ফলে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না দেশের পানি বিশেষজ্ঞরা। বরং লঘুচাপের প্রভাবে অধিক বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা থাকায় নদ-নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, সুরমা ও কুশিয়ারা নদ-নদীসমূহের পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে গঙ্গা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে পদ্মা অববাহিকার নদীগুলোর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ-নদী সংলগ্ন গাইবান্ধা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া এবং ধরলা নদীসংলগ্ন কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকবে। একইসাথে পদ্মা নদী সংলগ্ন রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলাসমূহের নি¤œাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকবে।
দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ও এর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে গতকাল পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, বন্যাকবলিত এলাকায় এ পর্যন্ত ৪২৯টি অবকাঠামো এবং ১০৭ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাউবো মাঠ প্রশাসন থেকে জরুরি ভিত্তিতে এসব বাঁধ ও স্থাপনা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩৩৮ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পাউবো মহাপরিচালক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সরকার অর্থ না দিলে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এমনিতেই পাউবো জরুরি কাজের জন্য বছরে বরাদ্দ পায় মাত্র সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা। অথচ প্রয়োজন যেখানে কমপক্ষে এক হাজার কোটি টাকা। সেখানে এই জরুরি ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ না করলে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানায়, গাইবান্ধায় ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার, চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদমীসার ২০ সেন্টিমিটার, বাহাদুরাবাদে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার, সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার, কাজিপুরে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার, সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার, আরিচাতে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার, সিংড়ায় গুর নদীর পানি বিদপসীমার ১৬ সেন্টিমিটার, বাঘাবাড়িতে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার, এলাসিনে ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার, নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার, তরাঘাটে কালিগঙ্গা নদীর পানি বিপদসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার, জাগিরে ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার, গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার, ভাগ্যকূলে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার, সুরেশ্বরে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার, জারিয়াজঞ্জাইলে কংস নদীর পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীর পানি বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রামে বন্যায় ডুবে নিহত ১২
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে বন্যার পানি কমে গেলেও বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। পনের দিনের বন্যায় মানুষের জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। বন্যায় পানিতে ডুবে মারা গেছে ১২জন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৮৬ পরিবারের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ। এর মধ্যে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ২২ হাজার ৬৭৫ জন। ৭হাজার ১২ হেঃ জমির ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৬৩ জন। বন্যায় ৫৪ কিলোমিটার বাঁধ ও ৩৯টি ব্রীজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাচা সড়ক ৪৭৪ কিলোমিটার ও পাকা সড়ক ৫২ কিলোমিটার ভেঙে গেছে। প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৪৮টি। ৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ হাজার ৬৮৪ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। গবাদিপশু মারা গেছে ৭৭টি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজার রহমান জানান, মঙ্গলবার ধরলা নদীর পানি ৫সে.মি ও ব্রহ্মপূত্র নদের পানি ২২ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
গাইবান্ধার মানুষের চরম দুর্ভোগ
গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা জানান, ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে গোটা ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চত্বর এবং কাতলামারির ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র এখনও বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। তিন সপ্তাহের দীর্ঘায়িত বন্যায় ৪টি উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নের বন্যা কবলিত মানুষ শুকনো খাবার, জ্বালানি, বিশুদ্ধ পানি, চিকিৎসা, গবাদি পশু সংরক্ষণ, গবাদি পশুর খাদ্যসহ নানা সমস্যায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এদিকে ফুলছড়ি উপজেলার সকল সড়ক বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় এবং বাঁধ ও সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে ওই উপজেলা সদর, সকল ইউনিয়ন ও জেলা শহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকাই সেখানে চলাচলের একমাত্র বাহন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বন্যা কবলিত সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নের ২৩৪টি গ্রাম বন্যা কবলিত অবস্থায় রয়েছে। ওই ৪ উপজেলার ৯৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১১ হাজার ৪১৭ জন আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন বাঁধ এবং উঁচু এলাকায় আরও বিপুল সংখ্যক মানুষ উঠেছে। এ পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য ৪১ লাখ টাকা ও ১ হাজার ৫০ মে. টন চাল ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের কাজ চলছে।
জামালপুরে বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি
জামালপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গেলো ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি ২০ সেন্টিমিটার কমে এখনও বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে যমুনার পানি কমলেও বাড়তে শুরু করেছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। এখনও পানিবন্দী রয়েছে জামালপুরের সাত উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ মানুষ।
টানা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি থাকার পর গত কয়েকদিন ধরে পানি কিছুটা কমতে শুরু করায় জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। গেলো ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার কমে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়তে শুরু করায় নতুন করে বেশ কিছু গ্রাম বন্যা প্লাবিত হয়েছে। পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে এখনও প্রবাহিত হওয়ায় জামালপুর সদর, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ী ও বকশীগঞ্জ উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।
ইসলামপুরে বাঁচা মরার লড়াইয়ে বানভাসিরা
ইসলামপুর (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ইসলামপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্গতদের দুর্ভোগ কমেনি। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বন্যা কবলিত হয়ে দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলার সাথে ১২টি ইউনিয়নের আভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যমুনাতীরবর্তী এলাকা বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নেওয়ায় এসব এলাকার পানিবন্দিদের ঘরে ঘরে ত্রানের জন্য হাহাকার এবং বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট চলছে। এছাড়াও বন্যাকবলিত এলাকার বাড়িঘর এবং ফসলি জমির মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় গো খাদ্যেরও তীব্র সংকট চলছে। যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলের নিম্নআয়ের মানুষগুলো বাড়িঘরসহ বন্যার তীব্র স্রোতে ভেসে যাবার উপক্রম হয়েছে। হাঁস,মুরগী বানের পানিতে ভেসে যাচ্ছে। বন্যার পানি কিছুটা কমলেও বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের ভয়াবহ বন্যায় জীবনযুদ্ধে বাঁচা মরার লড়াইয়ে নেমেছে দুর্গতরা। বাড়ীঘরে পানি উঠায় এতদিন বন্যাকবলিতরা ঘরে মাঁচা করে পরিবার পরিজন নিয়ে পানির হাত থেকে বাঁচতে প্রাণপন লড়াই করছিল। পানিবৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতে শেষ আশ্রয়স্থলটুকুও ভেসে গেছে। এখন সেখানেও থাকার জো নেই। পানিবন্দি মানুষেরা নৌকাযোগে পরিবার পরিজন নিয়ে দলে দলে আশ্রয়ের সন্ধানে দ্বিগবিদ্বিগ ছুটাছুটি করছে।
সিরাজগঞ্জে দুর্ভোগ কমেনি বানভাসিদের
সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে কিছুটা কমলেও এখনো ভোগান্তি কমেনি বানভাসি প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষের। গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ সেন্টিমিটার কমে মঙ্গলবার সকালে শহর রক্ষা বাধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
চলমান বন্যায় সিরাজগঞ্জের ৬টি উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষের বাড়িতে পানি ওঠায় ঘড়ছাড়া হয়ে জেলা প্রশাসনের আশ্রয় কেন্দ্র ও বিভিন্ন উঁচু বাঁধে আশ্রয় নেয় তারা। এর মধ্যে শুধুমাত্র জেলার শাহজাদপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নেরই প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ ঘড়-বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে আছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বৃদ্ধ ও শিশুরা পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে বিপাকে পরেছেন বানভাসিরা। এই উপজেলাসহ জেলার প্রায় এক শতধিক হাট-বাজার এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বন্ধ রয়েছে প্রায় পাচ শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
মানিকগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
আরিচা সংবাদদাতা জানান, পদ্মা-যমুনার পানি কিছুটা কমলেও অভ্যন্তরীণ সকল নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে মানিকগঞ্জের ভিতর অঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বন্যা কবলিত ৬ উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের গেজ রিডার আলমগীর হোসেন জানান, যমুনার আরিচা ঘাট পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ১০ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। মঙ্গলবার যমুনায় আরিচা পয়েন্টে ১০.০৩ সেন্টিমিটার পানি রেকর্ড করা হয়েছে। এ পয়েন্টে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ৯.৪৫ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ৫৮সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ধুনটে কমছে যমুনার পানি : বাড়ছে দুর্ভোগ
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ার ধুনটে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় ৬ সে. মি. কমলেও এখনও বিপদসীমার ৩৯ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আকষ্মিক বন্যায় ভান্ডারবাড়ী ও গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বন্যার পানি বাড়ির চাল পর্যন্ত ছুঁই ছুঁই করছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট ও শতাধিক হেক্টর জমির ফসল। বন্যার পানি প্রবেশ করায় বন্ধ হয়ে গেছে ৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বন্যাকবলিত লোকজন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এপর্যন্ত কিছু ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছে বানভাসিরা।
স্থানীয়রা জানান, গত দুই সপ্তাহ আগে যমুনার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বপাশের ১২টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। গ্রামগুলো হলো ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের বৈশাখী চর, রাধানগর চর, উত্তর ও দক্ষিণ শহড়াবাড়ী, শিমুলবাড়ী, বানিয়াজান, কৈয়াগাড়ী, রঘুনাথপুর, মাধবডাঙ্গা, ভূতমারী ও ভান্ডারবাড়ী গ্রামের কিছু অংশ ও গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের চুনিয়াপাড়া। এসব গ্রামের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
রাজবাড়ীতে পদ্মার পানি বিপদ সীমার উপরে
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত পানি বিপদ সীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে গত ২৪ ঘন্টায় ৬ সেন্টিমিটার পানি কমেছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
বন্যার পানিতে জেলার পাংশা, কালুখালী, জেলা সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকার ৮টি ইউনিয়নের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরের গ্রামগুলো প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে। ওই সব এলাকার মানুষেরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এদিকে দূর্যোগ ব্যবস্থা কমিটির সভা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক জিনাত আরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এম খালিম মাহমুদ। সভায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
উল্লাপাড়ায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : বন্যার পানি বৃদ্বি পেয়ে তলিয়ে যাওয়ায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। গত কয়েকদিনের অব্যহত পানি বৃদ্ধির কারণে এ অবস্থায় প্রাথমিক পর্যায়ের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। জানা যায়, গত কয়েক দিনের পানিবৃদ্বির কারণে উল্লাপাড়া উপজেলার ২৬টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর উধুনিয়া, বড়পাঙ্গাসী, দূর্গানগর, বাঙ্গালা ইউনিয়ন এলাকার নিম্নাঞ্চলের এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
চরভদ্রাসনে হাজারো মানুষ পানিবন্ধি
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বন্যা দুর্গত পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার চারহরিরামপুর ইউনিয়ন ও গাজীরটেক ইউনিয়নের বানভাসী ৫০০ পরিবারের মাঝে মোট ৫ মে.টন চাল ও ১৫০ পরিবারের মাঝে শুকনো খবার বিতরণ করা হয়েছে। এর আগে চরঝাউকান্দা ইউনিয়নে এবং উপজেলা সদর ইউনিয়নের বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এরাদুল হক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা সিদ্দিকা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) পারভেজ চৌধুরী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানস বোস উপস্থিত থেকে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে চলেছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ভান্ডার থেকে এসব ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
শিবচরে দূর্ভোগ বাড়ছে
শিবচর উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুরের শিবচরে গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মা নদীর পানি ৪ সে.মি. কমে এখনো বিপদসীমার ৭৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলেও নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। এখনো পদ্মার চরাঞ্চলের অন্তত ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। দুর্গত এলাকায় ঘরে ঘরে স্থানীয় সংসদ সদস্য নুর-ই-আলম চৌধুরীর নির্দেশে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা ত্রাণের চাল পৌঁছে দেয়া শুরু করেছেন। তবে এসকল এলাকায় মানুষ একদিকে কর্মহীন অপরদিকে ঘর বাড়ি স্থানান্তরসহ নানান সংকটের কারণে দূর্গতদের জন্য দ্রুত নগদ অর্থ, টিন, শুকনো খাবারের ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আতঙ্কে কাটছে পানিবন্দী মানুষের রাত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ