পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে করোনার সময়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফি বাবদ রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। হাসপাতালটির রেডিওলজি বিভাগের কয়েকজন অসাধু টেকনোলজিস্ট এই প্রক্রিয়ায় জড়িত। তারা রোগীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে। কিন্তু সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না করে লুটপাট করছে। এই চক্রটি হাসপাতাল প্রশাসনের দৃষ্টি এড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসছে। হাসপাতাল প্রশাসন এ বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি না দেয়ায় অসাধু এই চক্রটি থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে।
এছাড়া হাসপাতালে রোগী ভর্তি করানো, ভর্তি রোগীদের বেড দেয়া, আহত রোগীদের ড্রেসিং ইত্যাদির জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা দিতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের। এক্ষেত্রেও প্রশাসনের নজর নেই বললেই চলে। অভিযোগ আছে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে চক্রটি এই অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাকালীন পঙ্গু হাসপাতালের আশপাশের অন্যান্য সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে বেশিরভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ থাকায় রোগীরা এখানে ভিড় করছেন। এই সুযোগে হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের তিন জন টেকনোলজিস্ট রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা এক্সরে সিটি স্ক্যান ও এমআরআই করাতে সরকার নির্ধারিত মূল্যের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমত টাকা আদায় করছে।
এই তিনজন হলেন- টেকনোলজিস্ট হুমায়ুন কবির, আব্দুল বারেক এবং হেলালুজ্জামান। এদের মধ্যে প্রথম দু’জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফি) এবং শেষ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। আবার এদের তিনজনের একাধিক বহিরাগত অ্যাটেনডেন্স রয়েছে। যারা রোগীর বা স্বজনের হাতে টিকিট দিয়ে তাদের বলেন, তাড়াতাড়ি ভালো এক্সরে পেতে হলে তাদের কিছু বেশি টাকা দিতে হবে। অন্যথায় রিপোর্ট পেতে অনেক দেরি হবে। এমনকি রিপোর্ট ভালো হবে। এসব শোনার পর রোগীরা বাধ্য হয়ে তাদের শরণাপন্ন হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিতে শুরু করেন।
হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্টরা জানান, এক্সরে থেকে প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে নির্ধারিত ফি’র থেকে ১-৩শ’ টাকা বেশি আদায় করে। সিটি স্ক্যান ও এমআরআই করাতে প্রত্যেক রোগীর থেকে নেয়া হচ্ছে ৫শ’-১ হাজার টাকা বেশি। কন্ট্রাস্টের কথা বলে রোগীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১৫শ’-২ হাজার টাকা। তবে অনেক রোগীর আদৌ কন্ট্রাস্টের প্রয়োজন আছে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা জানান, এই তিনজন আগে থেকেই এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত ছিল। এর আগে দু’একবার এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলেও কোনো কাজ হয়নি। এতে তারা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। বর্তমানে তারা এতোই ক্ষমতাবান যে, কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে হেলালুজ্জামান বলেন, এই অভিযোগ সত্য নয়। অন্য একটি গ্রুপ এ ধরনের কাজে লিপ্ত রয়েছে। নিজেদের পথ পরিস্কার করতে আমাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দিয়েছে। আমরা এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত নই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেডিওলজি বিভাগের একজন চিকিৎসক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এভাবে অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছে এই চক্রটি। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। জনস্বার্থ বিবেচনায় হাসপাতালের দুর্নাম এবং অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে এদের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা অতি জরুরি।
হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. আব্দুল গনী মোল্লা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে পঙ্গু হাসপাতালে কোনভাবেই এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দেয়া হবে না। যদি এমনটি কেউ করে থাকে তাকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।