পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ল্যাটিন আমেরিকাজুড়ে জিকা নামের এক ভয়াবহ ভাইরাসের যে তা-ব দেখা যাচ্ছে, সেই ভাইরাসটি যে সেখানে ‘বিস্ফোরণ’ ঘটিয়েই থেমে যাবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। জিকা নিয়ে তাই সারাবিশ্বের মানুষেরও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ রয়েছে। মাইক্রোসেফালি বা অস্বাভাবিক আকৃতির মাথা নিয়ে হাজার হাজার শিশুর জন্মের জন্য যে ভাইরাসটিকে দায়ী করা হচ্ছে, তা হলো জিকা। এখন পর্যন্ত এ রোগটির কোনো প্রতিকার নেই, নেই প্রতিষেধক। ল্যাটিন আমেরিকাজুড়ে ‘বিস্ফোরিত’ হওয়ার পর রোগটি নিয়ে উদ্বেগে পড়েছে গোটা বিশ্বও। সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকার পর জিকা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বময় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এডিস মশায় বিস্তার ঘটে
১৯৪৭ সালে উগান্ডার জিকা জঙ্গলে বানরের শরীরে প্রথম ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছিল। পরে জঙ্গলের নামানুসারে ভাইরাসটির নামকরণ করা হয় জিকা। ১৯৫২ সালে জিকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বতন্ত্র ভাইরাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে আগে বানরের শরীরে পাওয়া গেলেও এখন জিকা ভাইরাস বিস্তৃত হচ্ছে এডিস প্রজাতির মশার মাধ্যমে, যে মশা ডেঙ্গু রোগেরও কারণ।
যৌন সংসর্গ জিকা ছড়ায়?
মানুষের সতর্কতার জন্য এই ভাইরাস সম্পর্কে জানা দরকার। এডিস মশা ছাড়াও এটি অন্যভাবে ছড়াতে পারে তার প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের একটি খবর। যুক্তরাষ্ট্রে ‘যৌন সংসর্গের’ মাধ্যমে জিকা ভাইরাস সংক্রমণের বিরল একটি ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। সাধারণত এডিস মশার মাধ্যমে এই ভাইরাসটি ছড়ায়। বিবিসি বলছে, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসে জিকা ভাইরাসে সংক্রমিত একজন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) জানিয়েছে, সম্ভবত যৌন সংসর্গের মাধ্যমে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রয়েছে, এমন কোনো স্থানে ভ্রমণ করেননি। কিন্তু যার সঙ্গে তার যৌন সংসর্গ হয়েছে তিনি ভেনিজুয়েলা ভ্রমণ করে এসেছেন বলে জানা গেছে। অবশ্য যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে জিকা সংক্রমণের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। ২০১৩ সালেও এ ধরনের একটি সংক্রমণ ঘটেছিল বলে জানিয়েছে সিডিসি। এর আগে বিদেশ থেকে আগতদের মধ্যে জিকা ভাইরাস পাওয়া গেলেও এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেই জিকা সংক্রমণের ঘটনা ঘটল। এদিকে অস্ট্রেলিয়াতেও জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত দুই রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে বলে খবর এসেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, সিডনির দুই ব্যক্তির শরীরে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যারা সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান অঞ্চল ভ্রমণ করে এসেছেন। জিকা ভাইরাস যদি যৌন সংসর্গের মাধ্যমে ছড়ানোর সুযোগ থাকে, তবে তা বিশ্বের সব দেশের জন্যই হুমকি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, যৌন সংসর্গের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ানোর ঘটনা বিরল। অবশ্য গেল বছর তারা জানিয়েছিল, জিকাসংক্রান্ত যে কোনো ঘটনাই বিরল। যৌন সংসর্গে মরণঘাতী এইচআইভি বা এইডস ছড়ায়।
অবশ্য এটি এইচআইভি বা এইডসের মতো নয়। এইচআইভি সংক্রমণ এখন পর্যন্ত অনিরাময়যোগ্য এবং প্রতিদিন ওষুধ গ্রহণ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত মৃত্যুমুখে পতিত হয়।
স্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব সংস্থা বলেছে, মশাবাহিত এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আফ্রিকায় ইবোলো ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণায় দেরি নিয়ে সমালোচনার মধ্যে থাকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত সোমবার জিকা ভাইরাস নিয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বলে বিবিসি ও রয়টার্স জানিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে সংস্থার মহাপরিচালক মার্গারেট চ্যান জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের আর অপেক্ষা করার সুযোগ নেই।’ জিকা ভাইরাস দুই আমেরিকার ২৪টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে বলে দি প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশন জানিয়েছে। এতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ লাখ।
ব্রাজিলে ছোট মাথা নিয়ে শিশুর জন্মত্রুটির যে মহামারি দেখা দিয়েছে, তার পেছনে এই ভাইরাসটি দায়ী বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। শুধু ব্রাজিলেই এই ভাইরাসের কারণে ৪০ হাজার শিশু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নিয়েছে।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাতে গর্ভের শিশুও আক্রান্ত হয় এবং শিশু ছোট মাথা নিয়ে জন্ম নেয়। এর ফলে পরে শিশুর স্বাভাবিক বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে আগামী দুই বছর পর্যন্ত সন্তান ধারণ না করার জন্যও মায়েদের প্রতি পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
নতুন খবর হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, পর্তুগাল, জার্মানি ও ব্রিটেনেও জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিশ্চিত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া সম্পর্কে এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো ভাষ্য পাওয়া না গেলেও মিনেসোটা, টেক্সাস, হাওয়াই, ফ্লোরিডা ও ইলিনয়ে বেশ কয়েকজন এই ভাইরাস বহন করছে, যারা সম্প্রতি বিদেশ সফর করেছে।
অসুস্থতার প্রমাণ সরকারের কাছে থাকা সত্ত্বেও ভেনিজুয়েলা জিকার কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি।
জিকার অস্তিত্ব সরকার স্বীকার করার পর ভেনিজুয়েলায় চিকিৎসাকর্মীদের এটি মোকাবিলায় প্রস্তুত করা হলেও সেখানে কীভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ল সে সম্পর্কে কোনো পরিসংখ্যান এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি সত্ত্বেও মেক্সিকোর সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এ আতঙ্কের কারণে নারীদের গর্ভধারণ বিলম্বিত করা যৌক্তিক নয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে জিকা ভাইরাসের ১৮টি কেস শনাক্ত করা হয়েছে, তবে গর্ভধারণ বিলম্বিত করার এটা যথেষ্ট কারণ হতে পারে না। ভাইরাসের ওপর একজন নেতৃস্থানীয় গবেষক বলছেন, মেক্সিকোতে আবিষ্কৃত অতি গুরুত্বপূর্ণ কোনো রোগ নয় এটি।
উগান্ডা ভাইরাস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একজন ভাইরাস বিশেষজ্ঞ জুলিয়াস লুতওয়ামা বলেন, ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় বানরের মধ্যে এই ভাইরাস আবিস্কার করা হলেও দেশটিতে কখনো মহামারি আকারে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কথা জানা যায়নি।
বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পটভূমিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জিকা ভাইরাস সম্পর্কে গবেষণা দ্রুততর ও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন। আশপাশের দেশগুলোতে যেহেতু এই ভাইরাসের অস্তিত্ব রয়েছে, সে কারণে আবহাওয়া একবার উষ্ণ হয়ে উঠলে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাভাবিকভাবেই এটা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণে যত শিগগিরই সম্ভব জিকা ভাইরাস মোকাবিলায় এর প্রতিষেধক আবিষ্কার ও এর চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন হোক, প্রেসিডেন্ট ওবামা এটাই চান।
নগরায়নের বিস্তার জিকা ভাইরাস ছড়াচ্ছে
গতবছর ব্রাজিলে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ২৪টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমগুলো জানাচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, নগরায়ন ও বনাঞ্চল উজাড়ের মতো কার্যক্রম এই ভাইরাসের দ্রুত বিস্তারে ভূমিকা রাখছে। গবেষকদের মতে, মানুষের মধ্যে মারাত্মক জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ ও আমেরিকাজুড়ে মহামারি আকারে এর বিস্তারের মূল কারণ হচ্ছে পরিবেশের বিপর্যয়। তাদের মতে, বনজঙ্গল উজাড় করার কারণেই মানুষ এই ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছে এবং এখন শহর ও নগরায়ণের বর্জ্য-আবর্জনায় দ্রুত এর বিস্তার ঘটছে।
ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমার্জিং প্যাথোজেন্স ইনস্টিটিউটের জীবাণুবাহিত রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অ্যামি ভিট্রর বলেন, এই ভাইরাসের উত্থান ও বিস্তার সরাসরি পরিবেশ বিপর্যয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তিনি বলেন, যখন বন-জঙ্গলের আধিক্য ছিল তখন এ ধরনের রোগ ‘বনের পশু ও মশার মধ্যে চক্রাকারে আবর্তিত’ হতো। মানুষ যখন বনভূমি উজাড় করতে শুরু করে তখন প্রাকৃতিক এই সিস্টেমটি ভেঙে পড়ে এবং মানুষের মধ্যে এসব রোগের সংক্রমণ শুরু হয়। তিনি তার গবেষণায় উল্লেখ করেন, বনভূমি উজাড় করে সেখানে কৃষিকাজ বিস্তারের ফলে এসব নি¤œাঞ্চলের জমি ও পরিবেশ বিভিন্ন কীটপতঙ্গের প্রজনন ও বিস্তারে অনুকূল ভূমিকা রাখছে। কীটপতঙ্গের স্বাভাবিক আবাস ভেঙে দেয়ার ফলে তারা এখন লোকালয়ের কাছাকাছি চলে আসছে।
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডক্টর এলিসন গোটওয়াল্ট বলেন, বনভূমি ধ্বংস হওয়ায় এখন লোকালয়ের কাছাকাছি এলাকাগুলো বিভিন্ন জীবাণুর উত্থান ও সংক্রমণ রোগের বিস্তারে একটি আদর্শ ক্ষেত্র সৃষ্টি করছে।
এশিয়ায়ও বিস্তারের আশঙ্কা
জিকা নিয়ে এশিয়ার মানুষেরও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ রয়েছে, কিন্তু কেন? বিশেষজ্ঞের মতামতের ভিত্তিতে এশিয়ায় জিকার ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সেখানেই শঙ্কিত হওয়ার পেছনের কারণগুলোকে শনাক্ত করার চেষ্টা করেছেন তারা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত এশিয়াকে জিকামুক্ত বলে বিবেচনা করা হলেও এখানকার দেশগুলোতেও যে জিকা ছড়াবে না তার নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। কেননা, অতীতে ভারতেই পাওয়া গিয়েছিল জিকার অস্তিত্ব। বিবিসি জানায়, নিজেদের ১৩০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে জিকার অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তা জানতে এরই মধ্যে পরীক্ষা শুরু করেছে ভারত।
তবে ১৯৫২ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি প্রতিষ্ঠার পর কীটপতঙ্গসৃষ্ট রোগগুলো নিয়ে গবেষণা করেছিলেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে তারা রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন এবং কীটপতঙ্গসৃষ্ট ১৫টি রোগ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তালিকায় ছিল জিকার নামও। কেবল তাই নয়, গবেষকরা সে সময় নতুন রোগে আক্রান্ত ১৯৬ জনকে পরীক্ষা করে ৩৩ জনকে রোগমুক্ত বলে ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ভারতের মানুষকে জিকা ভাইরাস আক্রমণ করেছিল।’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, ১৯৫৪ সালে নাইজেরিয়ায় প্রথম জিকা আক্রান্ত রোগী নিবন্ধিত হওয়ার আগেই ভারতীয় গবেষকরা তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। জিকা সংক্রমণ নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন ছিলেন না গবেষকরা। জিকাকে দীর্ঘস্থায়ী জটিলতাবিহীন এবং সামান্য জ্বর ও গুটিযুক্ত খুব সাধারণ অসুস্থতা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে গত কয়েক মাস ধরে অস্বাভাবিক আকৃতির মাথা নিয়ে ব্যাপক হারে শিশু জন্ম নেওয়ার পর আগের সে ধারণায় পরিবর্তন এসেছে। তার মানে হলো, ভারতেও হয়তো স্থানীয়ভাবে রোগটির অস্তিত্ব রয়েছে, কিন্তু নিয়মিত পরীক্ষা না করার কারণে তা শনাক্ত হচ্ছে না। আর তা যদি নাও হয়ে থাকে, অর্থাৎ ভারতে যদি এরই মধ্যে জিকার অস্তিত্ব না থাকে, তার পরও এখানে ডেঙ্গু আর চিকুনগুনিয়ার অস্তিত্ব রয়েছে। আর তিনটি রোগের ভাইরাস একই মশা অর্থাৎ এডিস এইজিপটি নামক মশা বহন করে থাকে।
গত বছর দিল্লির বিভিন্ন সরু রাস্তায় সরকারি দলের এডিস মশা নিধন অভিযানের উল্লেখ করে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সেসময় ভারতে ২৫ হাজার ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। তবে যারা শনাক্ত হননি তাদের মিলিয়ে হয়তো সে সংখ্যা ১০০ গুণ বেশি হতে পারত। বিশ্বজুড়েও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কম নয়। বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ১০ কোটি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে থাকে। বিশ্বে প্রতি ১০০ জনে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়ে থাকে। ৫০ বছর আগে যে রোগটি কেবল কয়েকটি দেশের কাছে পরিচিত ছিল তা এখন বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে শনাক্ত হচ্ছে, বিশ্বের ৫০ ভাগ মানুষকে আক্রান্ত হওয়ার হুমকিতে রেখেছে। ব্রাজিলিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সেসের এবং লন্ডন স্কুল অব হাইজিনের ফেলো অধ্যাপক লরা রোড্রিগুজের মতে, ‘যেখানে ডেঙ্গু হতে পারে, সেখানেও জিকাও হতে পারে।’ জিকা ভাইরাস নিয়ে এডিস মশা এশিয়াকে নতুন করে আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা জানান তিনি। প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশনের প্রতিবেদনেও বলা হয়, ‘জিকা ভাইরাসের বিস্তার অব্যাহত থাকবে এবং বিশ্বের যেসব দেশে এডিস মশার অস্তিত্ব রয়েছে সেসব দেশ ও এলাকায় ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়বে। সেকারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, ভারতে জিকার প্রাদুর্ভাব ঘটলে আশেপাশের দেশগুলোতেও তা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এডিস মশা থেকে সাধারণত জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। এই ভাইরাস মানুষের শরীরে একবার প্রবেশ করলে প্রাথমিক অবস্থায় জ্বর, হাত-পায়ের জয়েন্টে ব্যথাসহ নানা ছোটখাটো কিছু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়, কিন্তু তা কম সময়ের মধ্যে সেরেও যায়। তবে বিপত্তি তৈরি হয় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে। গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মাইক্রোসেফালি তথা বিকৃত ও ছোট মাথা নিয়ে জন্ম নিতে পারে শিশু। এসব শিশুর বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি থাকে, শারীরিক বৃদ্ধি কম হয়, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, টাইসম অব ইন্ডিয়া, বিভিন্ন ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।