পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতারক মো. সাহেদের বিরুদ্ধে অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। চাকরি দেয়া, সরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের বদলি, রিকশা-ভ্যানের ভুয়া লাইসেন্স প্রদান ও জেল থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছাড়ানোর নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে এসব টাকা নিয়েছেন তিনি। রিমান্ডে মো. সাহেদ ও তার দুই সহযোগী গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে এ সম্পর্কে যে সব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তা খতিয়ে দেখতে এবং আরো তথ্য সংগ্রহে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম। সাহেদকে দুই সহযোগীসহ গত বৃহস্পতিবার থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র্যাব। ১০ দিনের রিমান্ডে প্রথম ৫ দিন ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন একটি সংস্থার এমন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সাহেদ নিজেকে অনেক বড় কিছু মনে করতেন। পুলিশি প্রটোকল নেয়া, হেলিকপ্টারে যাতায়াত ও বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাথে সখ্যতা তিনি প্রতারণার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তার প্রতারণার মাধ্যম ছিল বিভিণœ সেক্টর। গত কয়েক বছরে চাকরি দেয়া, সরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের বদলি, রিকশা-ভ্যানের ভুয়া লাইসেন্স প্রদান ও জেল থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছাড়ানোর নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য তিনি স্বীকার করেছেন। এসব বিষয়ে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে সাহেদ ও তার দুই সহযোগীর দেয়া তথ্য যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে। সাহেদের সাথে জড়িতদের তালিকা তৈরি করে খুব শীঘ্রই সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হবে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, এ প্রতারকের অভিনব সব প্রতারণার তথ্য জানাতে র্যাব একটি হটলাইন নম্বর ও ই-মেইল চালু করে। গত বুধবার হটলাইন বন্ধ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৬০টি অভিযোগ আমরা পেয়েছি, যার মধ্যে ফোনকলের মাধ্যমে অভিযোগ এসেছে ১৩৯টি। আর বাকি অভিযোগ ই-মেইলের মাধ্যমে এসেছে। অভিযোগ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সাহেদের সাড়ে ১২ কোটি টাকা আর্থিক দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য আমরা পেয়েছি। এর বাইরেও তার বিরুদ্ধে ৪৮টি মামলার সন্ধান পাওয়া গেছে। তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজনে এ সব মামলার বিষয় আমলে নিয়ে তদন্ত করবেন বলে জানান র্যাবের মুখপাত্র।
তিনি আরো বলেন, রিমান্ডে মো. সাহেদ ও তার দুই সহযোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের দেয়া তথ্য খতিয়ে দেখছে র্যাব। র্যাবের মুখপাত্র বলেন, গত ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতারের পর দেবহাটা থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে যে মামলাটি করা হয়েছে, সেই মামলায় তার রিমান্ড চাওয়া হবে। এজন্য সব আইনি প্রক্রিয়া প্রস্তুত করা হয়েছে। গত ৬ জুলাই রাজধানীর উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরের দিন হাসপাতালটির উত্তরা ও মিরপুরের দুটি শাখা সিলগালা এবং সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব। মামলার পর সাহেদ ঢাকা থেকে পালিয়ে যায়।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুভার্ব দেখা দিলে সরকার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। তারমধ্যে প্রতারক সাহেদের মালিকানাধীন উত্তরা ও মিরপুরে রিজেন্ট হাসপাতালকেও বাছাই করে। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের রাখার জন্য নামি-দামি কয়েকটি হাসপাতাল চ‚ড়ান্ত করেন। কুয়েত-মৈত্রী ও রিজেন্ট হাসপাতালের জন্য উত্তরায় মিলিনা হোটেল। বছর খানেক আগে ওই হোটেলটি জোর করে দখলেও নেন প্রতারক সাহেদ। আর দখল করার পেছনে দুইজন বড় পুলিশ কর্মকর্তা ও তিনজন সাংবাদিককে ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া আন্ডারগ্রাউন্ডের ৩ জন কতিথ সাংবাদিকও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। প্রতারক সাহেদ প্রশাসনকে জানায়- মিলিনা হোটেলটি তার নিজের। আর এই কথা শুনে প্রশাসনও আলাদাভাবে দেখেন সাহেদকে। নার্সদের থাকার জন্য ৩৬টি রুম চ‚ড়ান্ত করা হয়। তাদের থাকা ও খাওয়া বাবদ প্রতিদিনই সরকারের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করতেন সাহেদ। গত তিন মাসে নার্সদের জন্য বরাদ্ধ করা ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৪শ’ টাকা মেরে দিয়েছেন সাহেদ।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলছেন, সাহেদ মহাপ্রতারক। সব সেক্টরেই তার প্রতারণা রয়েছে। এছাড়াও সাহেদ ঠগবাজি ও মিথ্যাচারেও ওস্তাদ। হোটেল থেকে শুরু করে মানুষের সহায়-সম্পত্তি দখল করেছেন। শেষ পর্যন্ত নার্সদের বিলের টাকাও মেরে দিয়েছেন সাহেদ। তাদের নিম্নমানের খাবার সরবারহ করতেন। এমনকি হোটেলে গিয়ে নার্সদের অনৈতিক প্রস্তাবও দিতেন সাহেদ। দেশে মহামারি করোনাকালে যিনি চিকিৎসাসেবা নিয়ে প্রতারণা করতে পারেন সে নিজের স্বার্থের জন্য সবকিছু করেছেন। তার এমন প্রতারণার কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গণেও বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।