পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মানব এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি সেলিনা ইসলাম এবং তার বোন জেসমিন প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।সেলিনা ইসলাম কুয়েতের কারাগারে বন্দি ল²ীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী। সংস্থার উপ-পরিচালক মো.সালাহউদ্দিন সেলিনা ইসলাম ও জেসমিন প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদের পর সেলিনা ইসলাম অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বলেন, দুদক আসতে বলেছিল। আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি। গণমাধ্যমে যেগুলো আসছে, সেগুলোর কোনো সত্যতা নেই। পাপুল ও আমি কিছু পেতে নয়, দেশকে কিছু দিতে রাজনীতিতে এসেছি। শহিদ ইসলাম এমপি দেশে রেমিট্যান্সে বড় অবদান রেখেছেন। অনেক শ্রমিক বিদেশে কাজ করছেন। সেগুলো গণমাধ্যমে আসছে না। এক প্রশ্নের জবাবে সেলিনা ইসলাম বলেন, আমার স্বামী শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ। এদেশে ও সে দেশে (কুয়েত) তার বিরুদ্ধে কিছু ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি আশা প্রকাশ করছি আইনের মাধ্যমে আমার স্বামী মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে আসবেন।
জিজ্ঞাসাবাদের পর দুদক পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব ভট্টাচার্য ইনকিলাবকে বলেন, সেলিনা ইসলাম ও জেসমিন প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। তার স্বামী ল²ীপুর-২ আসনের এমপি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গ্রাহককে ঋণ বরাদ্দ করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ মানি লন্ডারিং করে বিদেশে পাচার। শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জন।
এর আগে কাজী শহিদ ইসলাম কুয়েতে গ্রেফতার হওয়ার পর তার স্ত্রী,কন্যা ও শ্যালিকার দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক। দুদকের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শুধু টাকার জোরে সস্ত্রীক এমপি হয়েছেন শহিদ। ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে প্রথমে নিজে ল²ীপুর-২ আসনের এমপি হন। পরে স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও একইভাবে সংরক্ষিত আসনে এমপি করেন। কুয়েতে আটক হওয়ার পর প্রকাশ হয়, এই টাকার উৎস ভিসা বাণিজ্য ও মানব পাচার। ২০১৮ সালে দাখিলকৃত শহিদ ইসলামের নির্বাচনী হলফনামায় দেখা যায়,ওই সময়েই তিনি ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম সোনাদানাসহ প্রায় শত কোটি টাকার অর্থসম্পদের মালিক। এর মধ্যে কেবল ব্যাংকে গচ্ছিত আমানত থেকেই শহিদের বার্ষিক আয় দেখানো হয় ৭৩ লাখ ৪১ হাজার ১৭৪ টাকা। স্ত্রী সেলিনা ব্যাংকের আমানত থেকে বছরে সুদ পান ১ কোটি ৪৫ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৬ টাকা। হলফনামায় শহিদ উল্লেখ করেছেন, তার নামে ৩৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে ৫২ কোটি ৯৮ লাখ টাকার অর্থসম্পদ আছে। এর বাইরে মেয়ে ওয়াফা ইসলামের একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।যার মূল্য ১ কোটি ২৬ লাখ ৪২ হাজার টাকা। এমপি দম্পতির ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন,প্রদর্শিত এই অর্থসম্পদের বাইরেও শহিদ ইসলাম ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামের বিপুল অর্থসম্পদ রয়েছে দেশ-বিদেশে।
এদিকে অর্থ ও মানবপাচার এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে কুয়েতে আটক ল²ীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে কি-না,তা জানতে চেয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। গতকাল রোববার অ্যাডভোকেট এসএম জুলফিকার আলী জুনু পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ.কে.এম.আব্দুল মোমেন বরাবর এ চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়,কুয়েতের ব্যবসায়ী ও ল²ীপুর-২ আসনের আসন এমপি শহিদ ইসলাম পাপুল কুয়েতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে সেদেশের কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে কুয়েতের প্রচলিত আইনের বিধানমতে মামলা করার মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তার বিতর্কিত কর্মকান্ডে বিশ্বে বাংলাদেশর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। একজন বাংলাদেশী নাগরিক কীভাবে বহির্বিশ্বে শতশত কোটি টাকার ব্যবসায়ী কার্যক্রম পরিচালিত করছে তা নিয়ে মানুষের মাঝে কৌতূহল রয়েছে। এমপি পাপুল কুয়েতের নাগরিক কি-না,এই বিষয়েও সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন রয়েছে। এছাড়া তিনি দ্বৈত নাগরিক হলে বাংলাদেশের সংবিধান ও নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী বৈধ এমপি হওয়ার যোগ্যতা থাকে কি-না,সে বিষয়েও জনগণের মনে প্রশ্ন রয়েছে। চিঠির বিষয়ে অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু বলেন,এমপি পাপুল দ্বৈত নাগরিক কি-না, সে বিষয়ে গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, মানবপাচারের অভিযোগে গত ৭ জুন কুযেতে আটক বাংলাদেশের এমপি (ল²ীপুর-২) কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে সে দেশের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কুয়েতের অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্দেশে দেশটির কেন্দ্রীয় কারাগারে বাংলাদেশের এই এমপিকে রাখা হবে বলে জানিয়েছে কুয়েতের সংবাদপত্র ‘আরব টাইমস’। পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার,ভিসা জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।