পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ইনকিলাব ডেস্ক ঃ ব্যক্তিখাতে অস্বাভাবিক হারে ঋণপ্রবাহ বাড়ছে। বিগত ৪ বছরের তুলনায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি। যার পরিমাণ শতাংশের হিসাবে ১৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর টাকার অঙ্কে উল্লেখিত সময়ে শুধু সরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৬ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। যার পরিমাণ আগের বছর ছিল ৫ লাখ সাড়ে ৭৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদরা ঋণ বৃদ্ধির এই হারকে আগ্রাসী বলে অভিহিত করেছেন। এই ঋণ শিল্প খাতে ব্যবহৃত হলে তা দেশের অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় সংযোজন হবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন ঋণগ্রহীতাদের অধিকাংশই সর্টকাট মেথটে লাভবান হতে ঋণের টাকা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করছেন। এমনটি হলে ২০১০ সালের ন্যয় বাজারে আবার বুদবুদ সৃষ্টি হয়ে ফেপে ফুলে বিশাল আকার ধারণ করতে পারে যা কখনই একটি স্থিতিশীল মার্কেটের লক্ষণ হতে পারে না বলে তারা মনে করছেন। বিশেষজ্ঞদের এই আশঙ্কার কথা ইতোমধ্যে আমলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যক্তি খাতের সন্দেহজনক ঋণগুলোর কঠোর নজরদারী শুরু করেছে ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বিশ্বস্তসূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০১৪ সালে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩.১৯ শতাংশ, ২০১৩ সালে ছিল ১২.২৭ শতাংশ, ২০১২ সালে ছিল ১০.৮৫ শতাংশ। গত অর্থবছরে জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাসে ব্যক্তিখাতে ঋণপ্রবাহ প্রবণতা ছিল ঊর্ধ্বমুখী । বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০১৬ সালের গত ৬ মাসেও (জানু-জুন) ঋণ প্রদানের ঊর্ধ্বগতির ওই হার অব্যাহত ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ব্যক্তিখাতে সরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রদানের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে ২০১৬ সালের মে মাসে ওই ব্যাংকগুলোর ব্যক্তিখাতে ঋণ প্রদানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কমকর্তারা মনে করছেন, ব্যক্তিখাতের এই টাকা শেয়ারবাজারে চলে যাচ্ছে। সা¤প্রতিক সময়ে দেশের পুঁজিবাজারে নানা কারণে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হতে না পারলেও বিশেষ বিশেষ কিছু কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। শুধু তাই নয় বিভিন্নভাবে তথ্য প্রকাশ হচ্ছে যে কোনো কোম্পানির পাবলিকের হাতে থাকা শেয়ারের প্রায় সব অংশই কিনে নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানিকরা। ওই কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, প্রতিষ্ঠানিকদের হাত ধরেই ব্যক্তিখাতের ঋণের টাকার একটি বড় অংশ শেয়ারবাজারে ঢুকে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরুপাক্ষ পাল বলেছেন, এই ঋণ উৎপাদনশীল খাতে গেলে কোনো ক্ষতি নেই। তবে অনুৎপাদনশীল খাতে বা শেয়ারবাজারে গেলে অর্থনীতির মধ্যে বুদবুদ সৃষ্টি করবে। আর সেই বুদবুদ যদি ২০১০ এর মত হয়ে যায় তখন সেটি গোটা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে। তিনি আরও বলেন, এই চিন্তা থেকেই ব্যক্তি খাতের ঋণের টাকা কোথায় যাচ্ছে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। গত বছর আগস্ট পর্যন্ত বেসরকারি ঋণ কমেছিল। এরপর বাড়তে শুরু করেছে। এসব অর্থ উৎপাদনশীল খাতে যাচ্ছে কি না, তা চিন্তার বিষয়। ব্যাংকঋণকে উৎপাদনশীল খাতে নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নজরদারি আরও বাড়াবে। তিনি বলেন, এ পর্যায়ে এসে আমরা ঋণের গুণগতমান বাড়ানোর চেষ্টা করছি। আমরা যে মুদ্রা সরবরাহ দিয়েছি, তা দিয়ে কাক্সিক্ষত জিডিপি অর্জন সম্ভব। এ কারণে আমরা মুদ্রানীতিকে বলেছি সতর্ক ও সংকুলানমূলক। ঋণকে উৎপাদনশীল খাতে নিতে আমরা সবাই সতর্ক। মূল্যস্ফীতির বিষয়েও সতর্ক রয়েছি আমরা। এ সমস্ত বিষয়কে মাথায় রেখেই মূলত এবারের মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই নীতি শুধু মুদ্রা বাজারের জন্য নয় পুঁজিবাজারের জন্যও একটি কাক্সিক্ষত মান ধরে রাখতে সচেষ্ট থাকবে। -ওয়েবসাইট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।