পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী নাগরিকবৃন্দ বিদ্যুৎকেন্দ্র বিষয়ে কোনো সঠিক তথ্য, প্রমাণ ও যুক্তি ছাড়াই তাদের বিরোধিতা ও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়ে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানান, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই অসত্য বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করছি ও তা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটি এখন সুবিদিত যে, দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদসহ সকল মহল তাদের বিজ্ঞান-ভিত্তিক যুক্তি দিয়ে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন যে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দু’ভাবেই সুন্দরবনের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করবে। মাননীয় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর আমন্ত্রণে গত ১৯ জুন বিদ্যুৎ ভবনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য ও যুক্তিসমূহ পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন যার কোনটিই সরকারী পক্ষ খন্ডন করতে পারেননি। এই সভার শেষ পর্যায়ে মন্ত্রী নিজেকে ‘কোনো পক্ষের নয়, দুই পক্ষের মাঝখানের’ বলে অভিহিত করেন ও আরো আলোচনার আশ্বাস প্রদান করেন। অথচ তার কয়েকদিনের মধ্যেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ও নির্মানকারী কোম্পানীর মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। অর্থাৎ মন্ত্রী মহোদয় ‘মাঝখানের’ অবস্থান ত্যাগ করেছেন ও নাগরিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছেন।
সুলতানা কামাল বলেন, উদ্বেগের বিষয়টি হচ্ছে, সরকার নিয়ম ভঙ্গ করে পরিবেশগত সমীক্ষা প্রণয়নের অনেক আগেই জমি অধিগ্রহন করেছেন, প্রকল্প বিষয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মতামত গ্রহণ করা হয়নি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বেশ কয়টি প্রকৃতি-সংরক্ষণশীল আইন, নীতি-নিয়ম ও কনভেনশনকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। তারপরও সরকার কর্তৃক যে সমীক্ষা প্রতিবেদনটি তৈরী হয়েছে তা হচ্ছে পরিষ্কারভাবে অবৈজ্ঞানিক বিবেচনা ও তথ্যের গোজামিলভিত্তিক। ইতোমধ্যে, সরকার প্রণীত এই সমীক্ষা প্রতিবেদন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য-যুক্তিভিত্তিক পর্যালোচনা করা হয়েছে, যাতে পরিস্কারভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সরকারী সমীক্ষা প্রতিবেদনটি বিজ্ঞানভিত্তিক নয়। এমনকি বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ও এই সমীক্ষা প্রতিবেদনের অনেক বিষয়ে তাদের নেতিবাচক মূল্যায়ন জ্বালানী মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছেন।
সুন্দরবন ধ্বংস করে এই রামপাল প্রকল্প নির্মাণ প্রশ্নে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের অযৌক্তিক অনমনীয় অবস্থান দুই দেশ ও সারা বিশ্বের সকল সচেতন ও যুক্তিবান মানুষের জন্যই একটি গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতএব, হাজার হাজার বছরের পরিপূর্ণতায় যে অনন্য সুন্দরবন তৈরী হয়েছে তাকে সম্পদ ও পরিবেশবিনাশী কোনো কর্মকা- দ্বারা যাতে বিনষ্ট না হয় সে বিষয়টি দুই দেশের সরকার বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি। এটি সময়ের দাবী, দেশবাসীর দাবী, সারা বিশ্বের দাবী।
তাই জনস্বার্থ ও সুন্দরবনবিরোধী সকল সরকারি অপপ্রচার বন্ধ করে, জনদাবি মেনে নিয়ে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে বাঁচানোর স্বার্থে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পটি অবিলম্বে বাতিল বা নিদেন পক্ষে সুন্দরবন থেকে নিরাপদ দুরত্বে সরিয়ে নেয়ার জন্য ৫৩টি সামাজিক আন্দোলনের সমন্বয়ে গঠিত সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।