পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের সাথে ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে বিশেষ তৎপরতা শুরু করেছে পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি উভয় দেশকেই পরস্পরের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি সুযোগ করে দিয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলি মনে করে যে, বর্তমান আঞ্চলিক পরিবেশ ইসলামাবাদ এবং ঢাকাকে নতুন করে যোগাযোগ স্থাপনে বাধ্য করেছে।
দু’দেশের মধ্যকার সুদীর্ঘ তিক্ততা দূর করতে চলতি মাসের শুরুতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ইমরান আহমেদ সিদ্দিকি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেনের সাথে এক বিরল বৈঠক করেন। বৈঠকটিকে যুগান্তকারী হিসাবে আখ্যায়িত করা হতে পারে কিনা, সে বিষয়ে পররাষ্ট্র সূত্রগুলি পূর্ণ সতর্কতা বজায় রেখেছে। তবে, এই বৈঠকের বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে দাবি করা হয়েছে যে, ভারতের বিভিন্ন সমস্যা সংক্রান্ত ব্যস্ততার সুযোগ নিতে চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ।
বহু বছর ধরে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক টানাপড়েনের মধ্যে রয়েছে। দু’দেশ এখনও ১৯৭১ সালের তিক্ত স্মৃতিগুলি অতিক্রম করতে পারেনি। কয়েক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ’৭১’র যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একাধিক নেতার বিচার ও মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে। পাকিস্তান বিষয়টিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার বলে অভিহিত করে এবং এটিকে পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি লঙ্ঘন বলেও সমালোচনা করে। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশসহ সমস্ত দেশ একাত্তরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা না করতে সম্মত হয়েছিল।
২০১৬ সালে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করার নিন্দা জানিয়ে একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস করলে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা আরও বেড়ে যায়। অন্যদিকে, নয়াদিল্লি ও ঢাকার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে এবং ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর সম্পর্কটি আরও গভীর হয়। তবে, গত বছর মোদি সরকার যখন বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইন-সিএএ পাস করে, তখন ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। এই আইনটি বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত করে এবং গেল মার্চে ভারতবিরোধী ক্রমবর্ধমান মনোভাবের কারণে মোদিকে বাংলাদেশ সফর বাতিল করতে হয়।
এর মাঝামাঝি সময়ে চীনও অর্থনৈতিক ও অন্যান্য অংশীদারিত্বের প্রস্তাব দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পথ তৈরি করে নেয়। ঢাকা ইতিমধ্যেই চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-বিআরআইয়ের অংশ হয়ে গিয়েছে এবং সম্প্রতি বেইজিং বিনা শুল্কে বাংলাদেশকে চীনে পণ্য রফতানির অনুমতি দিয়েছে। পাশাপাশি, চীন কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে। এ সহযোগিতার ফলস্বরূপ ভারত ও চীনের মধ্যকার সাম্প্রতিক সীমান্ত ও রাজনৈতিক সঙ্ঘাত নিয়ে বাংলাদেশ নিরব ভ‚মিকা পালন করে। এমনকি লাদাখ অঞ্চলে চীনের সাথে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে এক কর্নেলসহ ২০ সেনা নিহত হওয়ার বিষয়ে ভারতকে সমবেদনা জানায়নি বাংলাদেশ।
পাকিস্তানি পর্যবেক্ষকরা বিশ্বাস করেন যে, পরিবর্তিত পরিস্থিতি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জন্য তাদের তিক্ত সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার জন্য একটি ইতিবাচক সুযোগ করে দিয়েছে। তারা মনে করেন, পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান ধারণা, দেশটির তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশের সাথে অর্থবহ সম্পর্ক স্থাপনে বিশেষভাবে আগ্রহী। দেশটির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাংলাদেশের অসাধারণ অর্থনৈতিক সাফল্য প্রশংসাও করেন। একই সাথে, পাকিস্তানে একাত্তরের ঘটনাগুলিকে দু’দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বেদনাদায়ক অধ্যায় হিসাবে স্বীকার করা বলে তিনি জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দু’দেশের মানুষের পুনর্মিলন এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানো হলে, তা অতীতের ক্ষত সারিয়ে দেবে। সূত্র : দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।