পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনা ইউনিটে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের জন্য এন-৯৫ মাস্ক দেয়ার কথা বললেও তাদের নকল মাস্ক দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক চিকিৎসক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক জানান, বিএসএমএমইউতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া শুরু হয় গত ৪ জুলাই। তার আগে গত ২৪ জুন থেকে শুরু হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোভিড ইউনিটের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে বলা হয়, কর্মরত চিকিৎসকদের সুরক্ষায় ১৮৬০ এন-৯৫ মাস্ক দেয়া হবে, অন্যান্য মানসম্পন্ন সুরক্ষাসামগ্রীও দেয়া হবে।
কিন্তু প্রথম ব্যাচের চিকিৎসকরা ডিউটি শুরু করার পর তাদের দেয়া হয় ৮২১০ এন-৯৫ মাস্ক। তাতেও চিকিৎসকদের কোনও অভিযোগ ছিল না। কিন্তু তৃতীয় গ্রুপের চিকিৎসকরা কাজ শুরু করতেই বাধে বিপত্তি। তাদের দেয়া হয় নকল এন-৯৫ মাস্ক। নকল মাস্কগুলোতে লেখা ভুল, লট নাম্বার নেই। প্রকৃতপক্ষে আসল এন-৯৫ মাস্কের সঙ্গে নকল মাস্কও সরবরাহ করেছে কোম্পানি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক বলেন, গত শনিবার যখন বিষয়টি হাসপাতাল পরিচালকের নজরে আনা হয় তখন তিনি নকল মাস্কগুলো বদলে দেন। তিনি নতুন করে যেগুলো দেন সেগুলোও নকল ছিল।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, কোনও রকম স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ছাড়াই নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে এসব কেনাকাটা করেছেন পরিচালক। টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়নি, মান যাচাই না করে, যাচাই-বাছাই কমিটি ছাড়াই পরিচালক এসব কেনাকাটা সম্পন্ন করেছেন।
বিএসএমএমইউ সূত্রে জানা গেছে, একজন নারীর কাছ থেকে পরিচালক এ মাস্ক নিয়েছেন। ওই নারী নিজে আমদানিকারকও নয়। তবে সরকার দলীয় একজন নেত্রী। তবে তার নাম বা প্রতিষ্ঠান যানা যায়নি। অন্য কারো কাছ থেকে কম দামে মাস্ক ক্রয় করে বিএসএমএমইউতে দিচ্ছেন। এই মাস্কের মান যাচাইয়েরও কোন সুযোগ নেই।
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা ইউনিটে ভর্তি রোগীদের জন্য একেকটি গ্রুপে ৪৫ জন আবাসিক চিকিৎসক থাকেন। তাদের প্রত্যেককে পাঁচটি করে মাস্ক দেয়া হয় সাতদিনের ডিউটি করার জন্য। তাদের প্রায় প্রত্যেকেই দুই থেকে তিনটি করে নকল মাস্ক পেয়েছেন। এরপর পরিচালককে জানানোর পর সেগুলো রিপ্লেস করে নতুন মাস্ক দেয়া হয় কিন্তু রিপ্লেস করা নতুন মাস্কও ছিল নকল। চিকিৎসকরা বলছেন, যারা নকল মাস্ক সাপ্লাই দিচ্ছেন তাদের সঙ্গে তো চুক্তি করা। তারা তো সবসময়ই এসব নকল মাস্ক দিতে থাকবে। তাই আমাদের সুরক্ষা বলতে কিছু থাকছে না।
চিকিৎসকরা বলছেন, মাস্ক ও অন্যান্য পিপিই কেনার সঙ্গে পরিচালক অফিসকে নিযুক্ত করা হয়। যাদের দায়িত্ব ছিল মাস্কের কোয়ালিটি নিশ্চিত করা, তারা ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এত শিক্ষক-চিকিৎসক থাকা সত্তে¡ও ‘কোয়ালিটি নিশ্চিতের’ জন্য আলাদা একটি কমিটি করা যায়নি, এটা নিঃসন্দেহে একটি অব্যবস্থাপনা।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আহমেদ আমিনের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস দেয়া হলেও তার উত্তর দেননি।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এর মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, বিএসএমইউ’র মতো একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কী করে চিকিৎসকদের নকল মাস্ক দেয়া হলো এটা গবেষণার বিষয়। কারণ, এখানে তো আর স্বাস্থ্য অধিদফতর দেয়নি। তারা নিজেরাই এটা কিনেছেন। পরিচালক বলেছেন, এটা সাপ্লাইয়ার ভুল করেছে। কিন্তু কেউ নকল মাস্ক দিলেই সেটা চিকিৎসকদের দিতে হবে কেন প্রশ্ন করে ডা. ইহতেশামুল হক বলেন, কোন মাস্ক দেয়া হয়েছে, কত টাকার মাস্ক দেয়া হয়েছে, তাদের রিকমেন্ডশন অনুযায়ী মাস্ক দিয়েছে কিনা এসব বিষয় কর্তৃপক্ষ দেখেনি কেন। তিনি বলেন, মাস্কের মান যাচাই না করে এগুলো বিতরণ করা ঠিক হয়নি। তারা এখন বলছেন সরবরাহকারী ভুল করেছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কী করলো? বিতরণ করার আগে এগুলো দেখা উচিত ছিল। যেখানে প্রতিদিন চিকিৎসকসহ অন্যরা মারা যাচ্ছেন, আক্রান্ত হচ্ছেন, সেখানে এমন ভুল করে সাপ্লাইয়ারের ওপর দায় চাপানো মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর গত মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে সরবরাহ করা এন-৯৫ মাস্ক এবং অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রীর মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) অনুসন্ধান করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।