পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লক্ষ্যমাত্রা ১৭ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা : আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণে লাগবে না সিআইবি রিপোর্ট : নিজস্ব নেটওয়ার্ক ৩০ শতাংশ ঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : চলতি অর্থ-বছরে ১৭ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা আগের অর্থ-বছরের তুলনায় ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা বেশি। এবার শস্য ও ফসল চাষের ক্ষেত্রে সিআইবি রিপোর্ট ছাড়াই একজন কৃষক সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন। আগে এই সীমা ছিল দেড় লাখ টাকা।
এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বাধ্যতামূলকভাবে নির্ধারিত কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ৩০ শতাংশ বিতরণ করতে হবে। তবে নেটওয়ার্ক অপ্রতুলতার কারণে বিদেশি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হবে না। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে গভর্নর ফজলে কবির এ নীতিমালা ঘোষণা করেন। এ সময় ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ছাড়াও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনে কৃষি ও পল্লী অর্থনীতি খাতের অবদান প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। আর শ্রমজীবী কর্মশক্তির প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানে এ খাতের অবদান ৪৫ শতাংশের মতো। রফতানিতেও কৃষি খাতের ভূমিকা বাড়ছে। ২০১৬ সালের মে মাসে মোট রফতানিতে কৃষি পণ্যের অংশ ছিল ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ। তবে গুরুত্বপূর্ণ এ খাতটিতে ব্যাংকিং ও আর্থিক বাজারের ঋণ যোগান রয়েছে সার্বিক ঋণ যোগানের তিন শতাংশেরও নিচে। তিনি বলেন, কৃষি ও পল্লী অর্থনীতিতে পর্যাপ্ত ঋণ এবং দক্ষতর পরিবেশবান্ধব উৎপাদন কৌশল ও প্রযুক্তির ব্যবহার প্রসারের মাধ্যমে এর উৎপাদনশীলতায় অগ্রগতি আনবে। সে লক্ষ্যেই এ খাতে অর্থায়ন বৃদ্ধির দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক জোরালো সমর্থন ও তদারকি বজায় রেখেছে। গেল অর্থ-বছরের প্রকৃত বিতরণের চেয়ে চলতি অর্থ-বছরের লক্ষ্যমাত্রা কম হওয়ায় সার্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাংকগুলোর জন্য কঠিন হবার কথা নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, লক্ষ্যমাত্রা পরিমাণে শিথিলতা প্রদানের পরেও যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে না তাদেরকে অর্থ-বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশ বিনা সুদে বাধ্যতামূলকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, এবার এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের আওতায়ও ব্যাংকগুলো কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে এজেন্টদের কমিশন বা সার্ভিস চার্জ হিসেবে গ্রাহকদের কাছ থেকে নির্ধারিত সুদের অতিরিক্ত দশমিক ৫০ শতাংশ আদায় করা সুযোগ রাখা হয়েছে। আম ও লিচুর পাশাপাশি পেয়ারা উৎপাদনেও সারা বছর ঋণ দেয়া যাবে। এছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী জুলাই থেকে কৃষি ও পল্লী ঋণের নির্ধারিত সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা হবে ১০ শতাংশ।
গেল নীতিমালায় বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের ক্ষেত্রে স্ব-স্ব ব্যাংকের মোট ঋণ ও অগ্রিমের ন্যূনতম আড়াই শতাংশ কৃষি ও পল্লী ঋণ হিসেবে বিতরণের বিধান ছিল। নতুন নীতিমালায় ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা ও শাখা স্বল্পতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিট ঋণ ও অগ্রিমের ২ শতাংশ ধরে নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর নতুন ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের জন্য আগের মতোই মোট ঋণ ও অগ্রিমের ৫ শতাংশ হার ধরা হয়েছে।
২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে ১৭ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লীঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে এই লক্ষ্যমাত্রা গেল অর্থ-বছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ০১ শতাংশ বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ৮ হাজার ২৬০ কোটি কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
গেল অর্থ-বছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা বা ১০৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণে সক্ষম হয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। গেল অর্থ-বছরে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ হয়েছে ১৭ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা। অর্থ-বছরটিতে ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ১৩০ জন কৃষি ও পল্লীঋণ পেয়েছেন। যার মধ্যে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে প্রায় ১৫ লাখ ২০ হাজার নারী ৪ হাজার ৪৮০ কোটি টাকার ওপরে ঋণ পেয়েছেন। এছাড়া ২৬ লাখ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১২ হাজার ৯৩ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৭ হাজার ৯৭২ জন কৃষক ২৭ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর বলেন, ঋণের গুণগত মান ঠিক রাখতে গত অর্থবছরে যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ হয়েছে, চলতি অর্থবছরে তার থেকে কিছুটা কম লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে যেভাবে সফলতা আসছে, তার ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে আমরা লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ধরব। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের দৈন্যদশার কারণে কৃষি ও পল্লী ঋণ থেকে দূরে রাখার জন্য আবেদন করে। আমরা তাদের এ ঋণ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। সে হিসেবে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করার ব্যাংকের সংখ্যা ৫৫টি। এর মধ্যে গত অর্থ-বছরে ৪৫টি ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে। ১০টি ব্যাংক পারেনি। এ ১০টি ব্যাংক যে পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি তা কেটে রাখা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।