পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এখন সমস্যার নাম আস্থাহীনতা। জঙ্গি হামলা, জঙ্গি হত্যা, জঙ্গি নিধনের মহারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বিদেশী কূটনীতিক, প্রবাসী চাকরিজীবী, গার্মেন্টস পণ্য ক্রয়ের বায়ার, ঢাকায় মেস বাড়িতে বসবারসত চাকরিজীবী ব্যাচেলর-শিক্ষার্থী, অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে ঢাকার শহরতলীতে বসবাসরত মধ্যবিত্ত সবার মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, ভীতি-আতঙ্ক। নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের আশ্বাসে কেউ ভরসা রাখতে পারছেন না। যতই দিন যাচ্ছে সবার মধ্যে ভীতি যেন বাড়ছে। গতকালও ইউরোপীয় ইউনিয়ন গুলশানের মতো সারাদেশে নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে। আবার একজন বিচারপতিসহ ৯ জনকে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দিয়েছে জঙ্গিরা। আগস্টে আরো জঙ্গি হামলা হতে পারেÑ গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর এমন আশঙ্কার পর গতকাল যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগস্টে জঙ্গি হামলার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। দেশী-বিদেশী কারো মধ্যেই ভয় কমছে না।
স্টালিন সরকার : ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে নিরাপত্তা নিয়ে সঙ্কট নেই। সবাই জঙ্গির বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এক বাক্যে বলছেন ‘সর্বত্র নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করা হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেছেন, বিদেশী ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনে বিশেষ বাহিনী গঠন করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অভয় দিয়েছেন এই বলে যে জঙ্গি মোকাবিলায় ভারত সহযোগিতা করবে। পুলিশের আইজিপি অভয় দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশকে পাকিস্তান-আফগানিস্থান হতে দেয়া হবে না। বিদেশীরা নির্বিঘেœ চলাফেরা করতে পারবেনÑ এই আশ্বাস প্রতিনিয়ত দেয়া হচ্ছে। সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ কথা বলেছেন। কূটনৈতিক পাড়ায় নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আধাসামরিক সেনা মোতায়েনের পরও বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পুরোপুরি আস্থা তৈরি হচ্ছে না। সরকারের অব্যাহত অনুরোধ সত্ত্বেও ভ্রমণ সতর্কতা প্রত্যাহার বা শিথিল করেনি পশ্চিমা এবং এশিয়ার অনেক দেশ। দুইজন বিদেশী নাগরিক হত্যার পটভূমিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকংসহ বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে। গুলশান হত্যাকা-ে ২০ বিদেশী নিহতের পর সে সতর্কতা আরো বেড়েছে। গতকালও গুলশান-বনানীর মতো সারাদেশে বিদেশিদের নিরাপত্তা দেয়ার দাবি জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ইইউ প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন এ আহ্বান জানান। বৈঠকে বাংলাদেশের বিরাজমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং বিদেশিদের অবস্থান তুলে ধরে মায়াদুন বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়ার মতো ঘটনাগুলো বিদেশিদের উদ্বিগ্ন করেছে। এসব ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে বাংলাদেশকে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে বিদেশিদের আস্থা ফিরে আসে। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকাগুলোর মতো নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে সারা বাংলাদেশের। কূটনীতিকদের এ দাবির প্রতি সমর্থন করে একাধিক বুদ্ধিজীবী বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যতই দাবি করুক সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে; বাস্তবতা সেটা নয়। বিদেশীরা দূরের কথা দেশের মানুষও আস্থাহীনতায় ভুগছেন।
ডাচ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিবিসিসিআই)-এর সভাপতি হাসান খালেদ নিখোঁজের পরে নিহত হওয়ার ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে শুরু হয়েছে নতুন আতঙ্ক। নিজেদের নিরাপত্তায় উদ্বিগ্ন হওয়ায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ কোথাও যাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন সরকার ও ব্যবসায়ী নেতাদের। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ ব্যবসায়ীদের এক ই-মেইল বার্তা দিয়ে পথে চলাচলে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। অবশ্য বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারতের অনুকুল্য পাওয়া এই ব্যবসায়ী নেতা বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। বিদেশীরাও কাজ করছেন স্বাভাবিকভাবেই।
ঢাকার মার্কেট ও শপিং মলগুলোর সতর্কতা অবলম্বন করায় নির্দেশনা দেয়ায় দোকানদারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রহরায়ও নিরাপত্তাবোধ করতে পারছেন না। ঢাকার বড় বড় হোটেলগুলোর একই অবস্থা। ব্যাংক-বীমা, অফিস-আদালতে নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা বসানো হলেও সর্বত্র নিরাপত্তাহীনতা। জঙ্গি হামলার পর থেকে দীর্ঘ একমাস পেরিয়ে গেলেও নিরাপত্তা শঙ্কায় ক্রেতার অভাবে ভেঙ্গে পড়েছে গুলশান এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনৈতিক কর্মকা-। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হোটেল বন্ধে সরকার কঠোর হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন নিরাপত্তার নামে নাগরিকের চলাচলে কড়াকড়ি করায় গুলশানের দোকান-মার্কেটে আগের চেয়ে ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ বিক্রি কমে গেছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পণ্যর দাম কমানোর পাশাপাশি কৌশলী ভূমিকা নিচ্ছেন অনেকেই। বাধ্য হয়ে অবার কেউ ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার চিন্তা-ভাবনাও করছেন। ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২২ জন। এরমধ্যে বিদেশি নাগরিক ২০ জন। উদ্ধার অভিযানে পাঁচ জঙ্গি ও এক বাবুর্চি নিহত হন। এ হামলার পর থেকেই ব্যবসায় এই ধস। বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠানের পণ্যের পসরা বসে গুলশান এলাকায়। সবচেয়ে দামি ও বিলাসবহুল পণ্যের জন্য ওই এলাকার বিপণি বিতানগুলোর খ্যাতি রয়েছে। খাবারের মসলা থেকে শুরু করে নামি ব্রান্ডের পোশাকের জন্য শপিং সেন্টারগুলোর উপরই ভরসা করতে হয় ক্রেতাদের। এখন গুলশানের ব্যবসায়ীরা এখন অলস সময় পার করছেন। গুলশান, বারিধারা ও বনানী এলাকায় বিদেশি নাগরিকদের আবাস ও চলাফেরা। হামলার পর থেকে বিদেশি নাগরিকরা চলাচল কমে গেছে। গুলশান এলাকায় ঢুকলেই নিরাপত্তাকর্মীরদের তল্লাশিতে পড়তে হয়। অনেক সময় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অহেতুক হয়রানি এড়াতে গুলশান এলাকায় যাতায়াত কমিয়ে দিয়েছে সাধারণ মানুষ।
কল্যাণপুরে পুলিশি অভিযানে ৯ জঙ্গিকে হত্যার পর থেকে জঙ্গি ধরতে প্রতিরাতে ঢাকার মেস বাড়িতে তল্লাশি করা হচ্ছে। এতে মেসে থাকা কর্মজীবী-শিক্ষার্থী-ব্যাচেলর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। রাজধানী ঢাকায় লাখ লাখ কর্মজীবী মানুষের ভরসা মেস। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও চাকরির খোঁজে আসা হাজার হাজার বেকার অল্প পয়সার মেসে থাকেন। চাকরিজীবীদের মধ্যে কিছু তরুণ-যুবক ফ্লাট ভাড়া নিয়ে মেস বানিয়ে থাকলেও শিক্ষার্থী ও চাকরির খোঁজে ঢাকায় আসা বেকাররা থাকেন মেস বাড়িতে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জঙ্গি খুঁজতে মেস বাড়িগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছে। এ জন্য বাড়ির মালিকরা ব্যাচেলরদের বাড়িতে রাখতে চাচ্ছেন না। এতে বিপদে পড়ে গেছে ব্যাচেলররা। পুলিশ প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে ব্যাচেলরদের মেস ভাড়া দেয়ার ব্যাপারে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। কিন্তু পুলিশের এ বক্তব্যে কেউ আশ্বস্ত হতে পারছেন না।
গুলশান হত্যাকা-ের পর একের পর এক বিদেশী প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিনিধিদের ঢাকা সফর বাতিল করেই চলেছে। পশ্চিমা দুই জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান গ্যাপ এবং এইচএন্ডএম-এর প্রতিনিধিদের ঢাকা সফর বাতিল হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে রপ্তানিকারকদের মধ্যে। এখন অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ঢাকায় বৈঠক না করে দুবাই কিংবা সিঙ্গাপুরে বৈঠক করার দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে বর্ণনা করে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, ক্রিসমাসের আগে এ রকম পরিস্থিতি মোটেই কাম্য ছিল না। অবৈধভাবে অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধে কাজ করা দ্য এশিয়া প্যাসিফিক মানি লন্ডারিং গ্রুপ (এপিজিএমএল) বার্ষিক সভা ২৪ থেকে ২৮ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সভা উপলক্ষ্যে হোটেল বুকিংসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়। নিরাপত্তাজনিত অজুহাতে সে সভা বাতিল হয়। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের আন্তর্জাতিক সংগঠনের উদ্যোগে ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ঢাকায় এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টারের সম্মেলন-অ্যাপনিক-৪২ বাতিল করা হয়। নিরাপত্তাজনিত আস্থাহীনতার কারণে বাংলাদেশে কর্মরত অনেক বিদেশী প্রকাশে অপ্রকাশ্যে এ দেশ ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে গেছেন। ৫ জুলাই বিনা নোটিশে বাংলাদেশ ছেড়েছেন ৫ স্পেনীয় ইঞ্জিনিয়ার। তারা নারায়ণগঞ্জের কাছে সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে ৩৩৫ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন। পহেলা জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় ১৮ বিদেশী নিহতের পরই চুপি চুপি বাংলাদেশ ছাড়েন সিদ্ধিগঞ্জে কর্মরত ওই বিদেশীরা।
গুলশান হামলার পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ পশ্চিমী বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে সতকর্তা জারি করে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো জানিয়েছে, ঈদের ছুটির পরে বিদেশিদের সঙ্গে ঢাকায় তাদের যে বৈঠকগুলো হওয়ার কথা ছিল; তার অধিকাংশই হয় বাতিল হয়েছে অথবা অন্য দেশে করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। বব উইনকো নামে জাপানি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ৭ জনের একটি প্রতিনিধিদলের ২২ জুলাই বাংলাদেশ সফরের কর্মসূচি ছিল। নিরাপত্তার আস্থাহীনতায় জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দলটিকে বাংলাদেশ সফরের অনুমতি দেয়নি। বাংলাদেশের কয়েকটি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করে ক্রয়াদেশ দেয়ার কথাটি ছিল তাদের। একইভাবে বাংলাদেশ ভ্রমণ স্থগিত করে তুরস্ক ও ফ্রান্সের তিনটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পর নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা ঢাকা আসার প্রোগ্রাম বাতিল করেন।
এমনিতেই সরকারের নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখতে পারছেন না দেশী-বিদেশী কেউ। তারপর একের পর এক জঙ্গি হামলার হুমকি আসছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিজামুল হকসহ ৯ জনকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। সরকারি ডাকযোগে পাঠানো সাদা-কাগজে লেখা একটি চিঠিতে তাদের মৃত্যুদ-ের রায় চূড়ান্ত উল্লেখ করে তা যেকোনও দিন কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রোববার দুপুরে হুমকি দিয়ে এই চিঠি দেয়া হয়েছে। হত্যার এই হুমকির তালিকায় অন্যদের মধ্যে রয়েছেন ড. তুরিন আফরোজ, অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত, আজাদুর রহমান চন্দন, সাগর লোহানী, মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব ফরীদউদ্দীন মাসঊদ, ডা. ইমরান সরকার ও কামাল পাশা চৌধুরী। এর মধ্যে ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের পাশে ‘ভুয়া মাওলানা’ লেখা হয়েছে। এ-ফোর সাইজের কাগজের ওপরের অংশে ‘নারায়ে তকবির, আল্লাহু আকবর’ লেখা আছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, এই হুমকির বিষয়টি আমরা অবগত আছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে, অনেক ক্ষেত্রেই এসব হুমকির ঘটনা ভুয়া প্রমাণিত হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জঙ্গিরা আগস্ট মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালাতে পারে। এটা মাথায় রেখেই দলীয় এমপিদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বড় দুটি ঘটনা ঘটেছে গুলশানে ও শোলাকিয়ায়। বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি ছিল কল্যাণপুরে। এ ব্যাপারে আমাদের উদ্বেগ আছে। আমরা শঙ্কিত। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন কুর্মিটোলাস্থ বিমান সদর দপ্তর ‘বলাকায়’ বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে ‘দেশের সাম্প্রতিক পরস্থিতি ও নিরপত্তায় করণীয়’ শীর্ষক সভায় বিমানবন্দরে আইএসের হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বিমান ও বিমানবন্দরে জঙ্গি হামলা চালানো গেলে একদিকে বিশ্ব মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার পাওয়া যাবে এবং দেশকে পুরো পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া যাবে। এটা মাথায় রেখে বিমান ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিমান কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগস্টে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করে দলের এমপিদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে জনগণের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গি প্রতিরোধ করার নির্দেশনা নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সুজনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সতর্ক অবস্থানে থাকার পরও একের পর এক ঘটনা ঘটছে। জঙ্গিরা ভারতে পালিয়ে গেছে। আবার হামলার হুমকি দিচ্ছে। কাজেই বিদেশীদের আস্থাহীনতা থাকাটাই স্বাভাবিক। এখন বিদেশীদের আস্থা ফেরাতে জঙ্গি দমনে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিকল্প নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।