Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্ধ হলো বরিশাল গ্যাস টার্বাইন পাওয়ার স্টেশন

ঝুলে আছে ২শ’ মেগাওয়াট ইউনিট নির্মাণের সিদ্ধান্ত

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

অনানুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট। ফ্রান্সের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বরিশাল গ্যাস টার্বাইন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের এ দু’টি ইউনিট যথাক্রমে ১৯৮৪ ও ১৯৮৭ সালে স্থাপন করা হয়েছিল। মেয়াদ উত্তীর্ণের পরেও দীর্ঘদিন এ দু’টি উৎপাদন ইউনিট থেকে নির্ভরতার সাথে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।

এমনকি অতি সম্প্রতি এখানের একটি ইউনিট প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মেজর ওভারহলিং-এর মাধ্যমে পূর্ণ উৎপাদন নিশ্চিত হয়। এর আগেও কয়েক দফায় ইউনিটগুলো ওভারহলিং করে চালিয়ে রাখা হয়েছে। তবে গত মে মাসে পিডিবি’র বোর্ড সভার মৌখিক সিদ্ধান্তের আলোকে বরিশাল গ্যাস টার্বাইন পাওয়ার স্টেশনের ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দু’টি ইউনিটই বন্ধ রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে এক নম্বর ইউনিটটি প্রায় ৭৪ হাজার ঘণ্টা ও ২ নম্বরটি প্রায় ৬৭ হাজার ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে বলে জানা গেছে। ১৯৮৪ সালে ১ম ইউনিট ও ১৯৮৭ সালে ২ নম্বর ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। সে থেকে দক্ষিণাঞ্চলে সরকারি ইউনিট দু’টি যথেষ্ঠ নির্ভরতার সাথে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছিল। তবে বারে বারে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির সাথে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছিল। সর্বশেষ বরিশাল গ্যাস টার্বাইনে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ-এর উৎপাদন ব্যয় ছিল ৩১ টাকারও বেশি। তবে সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে ভোলা থেকে বরিশাল গ্যাস সরবরহ হলে এ দু’টি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় ৬ টাকায় নামিয়ে আনাসহ আরো দীর্ঘদিন উৎপাদন অব্যাহত রাখা সম্ভব বলে কারিগরি বিশেষজ্ঞগণ জানিয়েছেন।

কিন্তু কোন নতুন উৎপাদন ইউনিট স্থাপন না করেই বরিশাল গ্যাস টার্বাইন পাওয়ার স্টেশনটি বন্ধ করে দেয়ায় ক্ষুদ্ধ দক্ষিণাঞ্চলের সাধারণ মানুষ। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন চেম্বার নেতৃবৃন্দও বিষয়টি নিয়ে ক্ষুদ্ধ। অথচ পিডিবি’র আপদকালীন সহায়ক ছিলো এ ২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কোন কারণে পশ্চিম জোনে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় হলে বরিশাল গ্যাস টার্বাইন চালু করে এ অঞ্চলের বৃহৎ অন্যসব ইউনিটগুলো উৎপাদনে আনা সম্ভব হতো। গত মে মাসে বন্ধ করে দেয়ার পরেও এ ধরনের পরিস্থিতিতে একবার জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিপর্যয় মোকাবেলা করেছে বরিশাল গ্যাস টার্বাইন।

এদিকে বছর দুয়েক আগে বরিশাল গ্যাস টার্বাইন এলাকায় ২শ’ মেগাওয়াটের একটি নতুন পাওয়ার স্টেশন স্থাপনে পিডিবি’র বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও বিষয়টির আর কোন অগ্রগতি হয়নি। এমনকি বিদ্যমান পাওয়ার স্টেশনটির প্রায় ১৭ একর জমিতেই সোয়া ২শ’ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষম পাওয়ার স্টেশন স্থাপন সম্ভব বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির দায়িত্বশীল মহল। কিন্তু এজন্য যে ধরণের রাজনৈতিক উদ্যোগ প্রয়োজন, সে ধরণের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের সঙ্কট রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে।

গ্যাস টার্বাইন পাওয়ার স্টেশনটি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও এখানে পিডিবি’র যে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তাদের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি এখনো। এসব বিষয়ে বরিশাল গ্যাস টার্বাইন পাওয়ার স্টেশনের ব্যবস্থাপকের সাথে সেল ফোনে আলাপ হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে পাওয়ার স্টেশনটি গত জুনের শুরু থেকে বন্ধ রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্যাস টার্বাইন পাওয়ার স্টেশন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ