পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভিআইপি প্রতারক সাহেদ করিম বহুমুখী ব্যবসার নামে বিভিন্ন পরিচয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন। কখনো সেনাবাহিনীর মেজর বা কর্নেল, কখনো আওয়ামী লীগ নেতা, কখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক কর্মকর্তা এমন নানা পরিচয়ে কাজ বাগিয়ে নিত। এমনকি ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান, আইনমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতা, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছবি দেখিয়ে কাজ আদায় করে নিত।
বৈধ-অবৈধ পন্থায় কাজ বাগিয়ে নিতে কাউকে টাকা দিতেন এবং কাউকে ‘সুন্দরী নারী’ উপহার দিতেন। আবার কাউকে কাউকে নারী ঘটিত কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর ভয় দেখিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতেন। সুন্দরী নারীই ছিল সাহেদের ব্যবসায়িক সাফল্য ও উপরে উঠার সিঁড়ি। এই ‘সুন্দরী নারী ব্যবসার’ কারণে তার স্ত্রী সাদিয়া আরবি রিম্মি সংসার ছেড়ে বাপের বাড়ি সিলেট চলে গিয়েছিলেন।
সূত্র জানায়, রাজনীতিক, আমলা, ইঞ্জিনিয়ার, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কে কিসে খুশি হন প্রথম দর্শনের কথাবার্তার মধ্যেই বুঝতে পারতেন ধূর্ত সাহেদ। এ জন্য রিজেন্ট হাসপাতালসহ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে রাখতেন সুন্দরী নারী। আর এই নারীদের নানাভাবে কাজে লাগাতেন। কাউকে নারী সাপ্লাই দিয়ে খুশি করতেন; আবার কখনো নারীর ভয় দেখিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতেন। মূলত উপরতলায় সাহেদকে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ করে দিয়েছে ‘সুন্দরী নারী’।
একাধিক টিভির টকশোতে সাহেদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন এমন একজন নেতা জানান, সাহেদ দামি গাড়িতে চলাফেরা করতো। ওর তিনজন বডিগার্ডসহ সব সময় গাড়িতে একজন সুন্দরী নারী থাকতো। তাকে সে ব্যক্তিগত সেক্রেটারি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতেন। আরেকজন নেতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, সাহেদের গাড়িতে এক একদিন এক একজন সুন্দরী নারীকে দেখা যেত। সকলকে ‘ব্যক্তিগত সেক্রেটারি’ হিসেবে পরিচয় দিতেন। টকশোর বিরতিতে সে বুঝাতো প্রচন্ড ব্যস্ততার মধ্যেও তাকে টিভিতে আসতে হয়েছে। অমুক আমলা বা অমুক নেতা তার জন্য অপেক্ষা করছেন। এখান থেকেই তার কাছে যাবেন।
ভিআইপি প্রতারক সাহেদের ‘সুন্দরী নারী’ ব্যবহার করে কাজ বাগিয়ে নেয়ার বিষয়টি পরোক্ষভাবে তার স্ত্রীর কথায় প্রমাণ মেলে। স্ত্রী সাদিয়া আরবি রিম্মি এক সময় বিটিভিতে খবর পড়তেন। তিনি জানান, ২০০৪ সালে ভালোবেসে সাহেদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে মানুষটি যে এমন প্রতারক তা তিনি জানতেন না। নানা অপকর্মের পরও সংসার টিকিয়ে রাখতে তিনি বারবার সাহেদকে সুযোগ দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
সাদিয়া আরবি রিম্মি সাংবাদিকদের বলেন, অপকর্ম সহ্য করতে না পেরে আমি সংসার ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। কি কারণে গিয়েছিলাম পরিবারের লোকজন জানে। আসবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু দুটি বাচ্চার মুখ দেখে এবং সে (সাহেদ) শুধরাবে ভেবে আবার এসেছি। সাহেদের আচরণের কারণে একটা সময় আমাদের পরিবারের বাজে সময় গেছে। সেই সময়টা আমরা কাটিয়ে উঠেছি। সেটা পরিবারের সবাই জানেন। ২০০৮ সাল ও ২০১১ সালে সাহেদ জেল খেটেছে। তারপর মনে করলাম জেল খেটে সাহেদ শুধরে গেছে। কিন্তু এখন দেখলাম ভিন্ন। সে শুধরে যায়নি। তবে গণমাধ্যমে যা আসছে, তার সবকিছু সত্য কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সাহেদ ভারতে লেখাপড়া করেছে। দেশেও আইন বিষয়ে পড়েছে।
সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আসলে স্বামীর সঙ্গে তো কোনও স্ত্রী সারা দিন থাকেন না। আমিও ছিলাম না। আমার সঙ্গে ব্যবসা সংক্রান্ত কোনো কথা কখনও সে শেয়ার করতো না। তার কর্মচারীরাও বলতো না। তিনি জানান, দুই মেয়েকে নিয়ে রাজধানীর ওল্ড ডিওএইচএস ৪ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বাবার আচরণে ১৪ বছর বয়সী বড় মেয়েটা বিব্রত।
সূত্র জানায়, উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে ভিআইপি প্রতারক সাহেদের ছিল নিজস্ব টর্চার সেল এবং নারী বাহিনী। পাওনা টাকা চাইতে এলেই করা হতো নির্যাতন। মন্ত্রী-এমপি ও আমলাদের কাছ থাকে কাজ বাগিয়ে নিতে নারীদের ব্যবহার করা হতো। ওপর তলায় ‘নারী সাপ্লাই’ দিয়েই রমরমা প্রতারণা বাণিজ্য চালিয়েছে সাহেদ। নিজেকে ভিআইপি শ্রেণির মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। যে বাসায় ভাড়া থাকেন ও ব্যবসা করেন সেই বাড়ির মালিক এমনকি ব্যবসায়িক অংশীদারদের কখনো টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতন, কখনো সুন্দরী নারী লেলিয়ে দিয়ে হেনস্তা করতো সাহেদ। লোকলজ্জার ভয়ে টাকা না নিয়েই চলে যেতে হতো মানুষকে। উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশ মুখেই বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এখান থেকেই সব অপকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতো সাহেদ।
সূত্র আরও জানায়, ভিআইপি প্রতারক সাহেদ সুন্দরী নারী ও টাকা দিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন জাতীয় প্যারা অলিম্পিক কমিটিতে। তিনি কাউকে টাকা এবং কাউকে সুন্দরী নারী উপহার দিয়ে সংগঠনের সহ-সভাপতি হওয়ার চেষ্টা করেন। সরকারের ওপর মহল থেকে কমিটির সাধারণ সম্পাদককে ফোন করে তাকে সহ-সভাপতি পদে বসানোর নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ক্রিয়াঙ্গনের লোকজন রাজি না হওয়ায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদককে বার বার হুমকি দেয়া হয়। জাতীয় প্যারা অলিম্পিকের কোচ এনায়েত উল্লাহ বলেন, ফোনে উপরের নির্দেশনা, হুমকি ধামকিতেও সাহেদকে সহ-সভাপতি করা হয়নি। প্রভাব ও ‘সুন্দরী নারী’ ব্যবহার করার চেষ্টা করে এখানে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।