পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঙ্গলখালী এলাকায় অবস্থিত ওয়াটা কেমিক্যাল কারখানার বিষাক্ত গ্যাসে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন ৭ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। এই কারখানার বিষাক্ত গ্যাসে মরে যাচ্ছে গাছ ও পুকুর-খামারের মাছ। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। ছড়াচ্ছে নানা রোগ। দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছে নারী-পুরুষ-শিশুরা। গত এক মাসে প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধ অসুস্থ হয়েছেন। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে এ কারখানাটি অপসারণ করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা একাধিকবার মানববন্ধন-বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করলেও কোন ফল হয়নি। প্রতিবাদ করতে গিয়ে চাঁদাবাজি মামলার শিকার হয়েছেন অনেকেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মঙ্গলখালীর জনবহুল এলাকায় ওয়াটা ক্যামিক্যাল কারখানায় সালফিউরিক এসিড ও অ্যালমোনিয়াম এসিডসহ বিভিন্ন ক্যামিকেল তৈরি করা হয়। এসব এসিডের বিষাক্ত গ্যাস এলাকায় ছড়িয়ে শ্বাসকষ্ট, নিমোনিয়াসহ নানা ধরণের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ অবস্থায় কারখানার বিষাক্ত গ্যাসে মঙ্গলখালী, ফরিদ আলীরটেক, কাটাখালী, মোকিবনগর, পাবই, ঠাকুরবাড়ীর টেক ও বানিয়াদি এলাকার মানুষ দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় গত এক মাসে অর্ধশতাধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি এমনকি এলাকার পক্ষিক‚লেও মড়ক লেগেছে। মরে ভেসে উঠেছে এলাকার বেশ কয়েকজনের খামারের মাছ। এ অবস্থায় পুরো এলাকার মানুষ এখন ওয়াটা কেমিক্যাল কারখানার বিষাক্ত গ্যাসের আতঙ্কে ভুগছে।
মোকিমনগড় এলাকার মুড়াপাড়া পাইলট স্কুলের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুনায়াতে জানায়, গত ২ জুলাই স্কুল থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে দেখতে পায় ওয়াটা ক্যামিকেল কারখানা থেকে সরাসরি গ্রামের দিকে বিষাক্ত গ্যাস ছাড়া হয়েছে। এরপর এ বিষাক্ত গ্যাস তার নাকমুখ দিয়ে প্রবেশ করতেই শ্বাসকষ্ট, কাশি ও গলা ব্যথা উঠে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে নেবুলাইজার দিয়ে ও ওষুধ খাইয়ে কিছুটা সুস্থ করেন।
মঙ্গলখালী এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে সাদ্দাম হোসেন দুঃখ করে বলেন, সাধারণ মানুষের পাশে থেকে ওয়াটা ক্যামিক্যালের বিষাক্ত গ্যাসের ব্যাপারে প্রতিবাদ করেছিলাম। আমাকেসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকার একটি চাঁদাবাজি মামলা দেয়। এ কারণে এখন প্রতিবাদ করতে সাহস পাই না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওয়াটা কেমিক্যাল কারখানার বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হওয়ার ভয়ে অনেকে এলাকা ছেড়ে ঢাকার কাজলা, ডেমরাসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছে। স্থানীয়দের দাবি, ওয়াটা কেমিক্যাল কারখানাটি এখানে স্থাপন করার সময়ই তাদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতা, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এবং এলাকাবাসীর বিরোধিতার তোয়াক্কা না করে কারখানাটি চালু করা হয়।
রুপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইদ আল মামুন জানান, ওয়াটা কেমিক্যালে যে সালফিউরিক এসিড ও অ্যালুমিনিয়াম এসিড তৈরি করা হয় তা জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঠিক নয়। এখানকার গ্যাসের কারণে মানুষ ফুসফুসে প্রদাহ, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হবে।
কারখানার জেনারেল ম্যানেজার আবু তাহের ভুইয়া বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ সত্য নয়। আমাদের গ্যাসে কারো কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারখানায় ইপিটি প্ল্যান করা রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সাঈদ আনোয়ার বলেন, এ কারখানার ছাড়পত্র রয়েছে। তবে যদি এলাকাবাসীর ক্ষতি হয় আর তারা যদি লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত করা হবে।
তদন্তে যদি সত্যতা মিলে তাহলে ছাড়পত্র বাতিলের সুপারিশ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।