পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পিএস মাহসুদ মেরামতে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি বিআইডব্লিউটিসি
নাছিম উল আলম : রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের নৌযোগাযোগ রক্ষাকারী রাষ্ট্রীয় নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের ৪টি প্যাডেল জাহাজের তৃতীয়টিও বিকল হয়ে গত চারদিন ধরে মুন্সিগঞ্জর অদূরে মোহনপুরে পড়ে আছে। গত বুধবার সন্ধায় ঢাকা থেকে চাঁদপুর-বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই ‘পিএস লেপচা’র মূল গীয়ারে লুব অয়েল সরবরাহ বন্ধ হয়ে তা অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে নৌযানটি ধলেশ্বরীর মাঝে নোঙর ফেলে বন্ধ করে দেয়া হয়। বিকল্প নৌযানে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয় সংস্থা।
এরুটের ‘পিএস মাহসুদ’ জাহাজটি দুর্ঘটনার প্রায় একমাস পরেও বরিশাল বন্দরে পড়ে আছে। নৌযানটি মেরামতে বিআইডব্লিউটিসি এখনো কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেনি। সংস্থার অপর প্যাডেল জাহাজ ‘পিএস টার্ন’ ভারী মেরামতে ডকইয়ার্ডে রয়েছে গত দু’মাস। এটির মেরামত শেষ করে যাত্রী পরিবহনে ফিরতে আরো অন্তত দেড় মাস লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
ফলে রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের রাষ্ট্রীয় নিরাপদ নৌযোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, স্বল্প জ্বালানি ব্যয়ের এসব প্যাডেল নৌযান বিভিন্ন অজুহাতে বন্ধ করে দিয়ে গত দু’বছরে সংগৃহীত যাত্রী সুবিধাবিহীন প্রায় দ্বিগুণ পরিচালন ব্যয়ের ‘এমভি মধুমতি’ ও ‘এমভি বাঙালী’ নৌযান দুটি পরিচালনে সংস্থার কতিপয় কর্মকর্তার আগ্রহ বেশী। এমনকি সংস্থাটির নৌযানসমূহ পরিচালনে অনেক ক্ষেত্রেই অদক্ষ লোকজনকে দায়িত্ব দেয়ার ফলে প্রায়ই কারিগরি ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। অদক্ষ মাস্টার কর্মকর্তার কারণে ঘন ঘন দুর্ঘটনায়ও পড়ছে নৌযানগুলো। পিএস মাহসুদ জাহাজটি গত জানুয়ারী থেকে জুলাই পর্যন্ত ছোট-বড় ৮টি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
গত বুধবার পিএস লেপচা’র মূল গীয়ার বিকল হবার পেছনেও এধরনের ত্রুটি কাজ করেছে বলে জানা গেছে। নৌযানটির গীয়ারে লুব অয়েল সরবরাহকারী পাম্পে ত্রুটির ফলে এ বিপত্তি দেখা দেয়। লুব অয়েল শূন্য হয়ে গীয়ার অকার্যকর হয়ে পড়ে।
১৯৯৫ সালে ৩টি প্যাডেল জাহাজ পুনর্বাসন ও আধুনিকায়নের পরে আজ পর্যন্ত এসব নৌযানের কোন মেজর ওভারহলিংও হয়নি। এমনকি এসব নৌযান মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে কোন অরিজনাল পার্টসও সংগ্রহ করা হচ্ছে না। নৌযানগুলো রুটিন মাফিক ভাড়ী মেরামতসহ এর নিয়মিত সার্বে পর্যন্ত হচ্ছে না। স্থানীয়ভাবে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ দিয়ে এসব নৌযান মেরামতের ফলে তাতে ঘন ঘন ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। অথচ সংস্থার কারিগরি বিভাগ এসব নৌযানকে পুরনো ও চলাচল অযোগ্য বলে তা নিলামে তোলার কথা বলছেন।
১৯৩৮ থেকে ১৯৪৮সালের মধ্যে নির্মিত ‘পিএস লেপচা, পিএস মাহসুদ, পিএস অস্ট্রিচ ও পিএস টার্ণ’ নামের এসব প্যাডেল জাহাজ এখন বিশ্ব ঐতিহ্য। ১৯৭৮ সালে বেলজীয় সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পিএস লেপচা, পিএস মাহসুদ ও পিএস অস্ট্রিচ জাহাজ ৩টি সংরক্ষণ ও আধুনিকায়নের লক্ষে একটি পুনর্বাসন ও আধুনিকায়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
এদিকে পিএস লেপচার গীায়ের লুব অয়েল সরবরাহকারী পাম্পটি মেরামত কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি’র ঢাকা ঘাটের প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম। তবে প্রবল স্রোতের কারণে ঘূর্ণায়মান প্যাডেল ও গীয়ার বন্ধ না করে কিভাবে মেরামত কাজটি করা হবে সে ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করেননি। এমনকি নৌযানটি মেরামতে কতদিন সময় লাগবে তাও বলতে পারেননি তিনি।
অপরদিকে গত ৪ জুলাই দুর্ঘটনাকবলিত পিএস মাহসুদ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে বরিশাল বন্দরে ফেলে রাখা হলেও পরবর্তী কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। তবে নৌযানটি মেরামতে প্রায় দেড় কোটি টাকার একটি প্রাক্কলন তৈরী করা হলেও তা এখনো সংস্থার পরিচালনা পরিষদে অনুমোদন লাভ করেনি।
এসব বিষয়ে গত দুদিন ধরে বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান ও পরিচালক-কারিগরি’র সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। তবে গতকাল নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব-এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বিষয়গুলো নিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেবেন বলে ইনকিলাবকে জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।