পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শাহনাজ বেগম (থাইল্যান্ড থেকে ফিরে) : সমুদ্র সৈকত, সুসজ্জিত শপিংমল, বড় বড় রেস্তোরাঁ, পার্ক, অনিন্দ্যসুন্দর কারুকাজের মন্দিরসহ নয়নাভিরামের এক দেশ থাইল্যান্ড। যা বিশ্বজুড়ে পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ছবির মত এই দেশটি যেন নানান রকম নিসর্গ আর সমুদ্র আদরে ঘেরা। ব্যাংকক আধুনিক শহর হলেও অনেক রাজা এই শহরে রাজকীয় ধাঁচের অজস্র প্রাসাদোপম অট্টালিকা গড়েছেন। ব্যাংককের বর্তমান আধুনিক বিল্ডিংয়ের পাশাপাশি পুরনো ধাঁচের বাড়িগুলোও এক অনিন্দ্য সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে যেন পর্যটকের ভ্রমণ পিপাসা মেটানোর জন্য। মাকড়শার জালের মতো ছড়িয়ে আছে অসংখ্য উড়ালপুল। প্রতিটি রাস্তার একটি লেন, রোডের প্রায় দু’টি লেনেই সমানভাবে চওড়া আর এটাই হচ্ছে জনপ্রিয় দেশ ব্যাংকক। নাইস সিটির বুকচিরে বয়ে গেছে চাও-ফ্রায়া নদী। রাতের মায়াবি আলোয় নৌপথে শহরটাকে ঘুরে দেখতে অসাধারণ লাগে। রিভার ক্রুজ, বিদেশিদের কাছে অন্যতম নিশিজীবন। এ ছাড়াও সিয়াম ওশেন ওয়ার্ল্ড, সুন্দর স্থাপত্যের দ্য গ্র্যান্ড প্যালেস, ফুকেট, পাতায়া বিচ দর্শনার্থীর নজর কাড়ে।
ব্যাংককের দক্ষিণে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার দূরে এশিয়ার অন্যতম সি বিচ পাতায়া। এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শহর পাতায়া। এখানে সমস্ত সৈকত জুড়েই আনন্দ বিনোদনের এক উপাখ্যান ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পর্যটকের জন্য। পাতায়া শহরটাও যেন ছবির মত। নানান রকম বর্ণিল বাতির কল্যাণে সারা রাত জেগে থাকে এই শহর। অন্ধকার নামতেই প্রাণ ফিরে পায় শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অজস্র বিনোদন কেন্দ্র।
সিয়াম প্যারাগন, বিগ সি, সেন্টার ওয়ার্ল্ড, প্লাটিনাম, পাতুরাসহ ঝলমলে অনেক শপিংমল সারা ব্যাংকক জুড়ে। কোথাও আলো ঝলমলে আকাশচুম্বী দালান আবার কোথাও খোলা আকাশের নিচে হেঁটে হেঁটে শপিং করার সুযোগ পাওয়া যায় শহরটিতে। শপিং করতে কম বেশি সবাই খুব ভালবাসেন ! বিশ্বের সব বড় বড় শপিং সেন্টারের খবর অনেকেরই নখদর্পণে। ব্রান্ডের সব বড় বড় দোকান এসব শপিং সেন্টার। তবে আশ্চর্য হতে হয় পানিতে ভেসে ভেসে বাজার করার ব্যবস্থা দেখে। ব্যাংককের দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ১০০ কিমি দূরে রাতচাবুড়ি এলাকায় অবস্থিত দামান সাদুয়াক ফ্লোটিং মার্কেট। যেখানে প্রতি বছরই হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম হয়।
ছোট ছোট বোটে রকমারি সবজি আর ফলের সমাহার! আর এর সঙ্গে মাথায় বাঁশের টুপি-পরা থাই মেয়েদের বেচা-কেনার মনোরম এক দৃশ্য। ১৮৬৬ সালে রাতচাবুড়ি আর সামুতসাখোন রাজ্যের মধ্যে নৌপথে যাতায়াত চালু করতেই দামান সাদুয়াক খালটি কাটা হয়। স্থানীয় কৃষিকাজেও এই খালের পানি খুব সাহায্য করে। মালাক্কা গ্রেপ, চাইনিজ আঙুর, আম, কলা, নারকেলসহ একাধিক ফল আর সবজি জন্মায় এখানে। আর নানা রকমের ফল, সবজি, মিষ্টি, গোশত ছোট ছোট বোটে ভরে ফেরি করে বেড়ান এখানকার বিক্রেতারা।
অল্প কিছুদূর এগুলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে খালের পাড় ঘেঁষে বাহারি দোকান সাজানো। বোট থামিয়ে কেনাকাটা, বেশির ভাগই থাই ট্রেডিশন পোশাক, নারকেলের খোলার শোপিস-লাইট, পাখা, ভ্যারাইটিজ টাইপের মাথার ক্যাপ, হেন্ডিক্রাফট, ওয়ালম্যাট, পেইন্টিং, ফ্রুটস, নৌকাভর্তি ডাব সব মিলে এলাহি কা-। নির্জন নিভৃতে খালের বাঁকে বাঁকে দোকানগুলোতে ডল টাইপের মেয়েদের বেচাকনা দেখে অবাকই হতে হয়। ছোট লাঠি রাখে বোটগুলোকে দোকানে ভেড়াতে, খালের দুই ধারে অসংখ্য নারকেল গাছ, মাঝে মাঝে আবাসিক বাড়ি, খালের অলিগলিও কম না, ৬০/৭০ বছর বয়সী বুড়ীরা নির্বিঘেœ বোট চালাচ্ছে, যাত্রীদের কাছে ডাব বিক্রি করছে।
একটা স্পটে ছোট একটা মেয়ে বোট থামিয়ে পর্যটকদের বোঝাল- এখানে নেমে কেনাকাটা করেন আর ফ্রি ডাবের পানি খান। দ্বীপের মত একটা জায়গা নারকেল গাছে ভরা, খেজুরের রসের মত পাতিল ঝুলান, এই রস গ্লাসে করে আইস দিয়ে পর্যটকদের আপ্যায়ন করছে। খেতে সুস্বাদু। কিছুদূর এগুলেই দেখা যায় লাল রঙের বিভিন্ন কারুকাজের টেম্পল। টেম্পলের গা ঘেঁষে অনেক জাতের মাছ, খাবার দিলে দেখা যায় এদের উথাল পাথাল লাফালাফি।
ভেলায় ভেসে জিনিসপত্র কিনতে কিনতে দেখে নেয়া যায় খালের পাশে ট্রেডিশনাল থাই বাড়িঘর। চেখে দেখারও সুযোগ আছে থাইদের নিজস্ব খানাপিনা। দামান সাদুয়াক থেকে আরও যে ছোট ছোট খাল বিভিন্ন দিকে বিস্তৃত হয়েছে সেগুলোর শোভাও কম নয়! এজন্য রয়েছে বোট ট্রিপ সার্ভিস। পুরো এলাকাটি ঘুরতে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা সময় লেগে যায়। দেশটিতে যত বেড়াতে যাওয়ার জায়গা আছে, তার মধ্যে এই ভাসমান মার্কেট কিন্তু ‘মোস্ট ফটোগ্রাফড’ ডেস্টিনেশন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।