Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে সাউথ পয়েন্টের অনুমোদনহীন ক্যাম্পাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

অনুমোদন না নিয়েই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে একাধিক ক্যাম্পাস পরিচালনার করছে সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। গুলশান, উত্তরা, মিরপুরসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বোর্ডের অনুমতিবিহীন একাধিক শাখা ক্যাম্পাস চালু রয়েছে জানিয়ে এ বিষয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শকের দপ্তরে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে সাউথ পয়েন্টের অধ্যক্ষকে।

করোনাকালে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি প্রদানে চাপ প্রয়োগ, মহামারীর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণসহ নানা কারণেই বিতর্কিত সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সঙ্কটকালেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনায় না নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির প্রতি ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে শিশুদের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে শোকজও করেছিল ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এবার ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অনুমোদনহীন শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনা করায় সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে সরকার।

ঢাকা বোর্ড থেকে মঙ্গলবার অধ্যক্ষকে পাঠানো কারণ দর্শাও নোটিসে বলা হয়েছে, বোর্ডের ডাটাবেইজে প্রতিষ্ঠানটি সহশিক্ষা কার্যক্রমের জন্য অন্তর্ভুক্ত থাকলেও বিনা অনুমতিতে বিভিন্ন স্থানে জেন্ডার (বালক/বালিকা) উল্লেখ করে কার্যক্রম চালু রাখায় শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের সমস্যায় পড়ছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আগের কমিটির মেয়াদ ২০১৬ সালের ১ জুলাই উত্তীর্ণ হয়। এরপর বিশেষ শর্তে ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে সংস্থা পরিচালিত কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে দুইবার তাদের স্থান পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বোর্ডের অনুমতি ছাড়া ঠিকানা পরিবর্তন করা যাবে না, দুই বছরের মধ্যে নিজস্ব জমি ও ভবনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কলেজ ভবনের কোনো অংশই অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না- এই তিন শর্তে সাউথ পয়েন্ট কলেজকে ২০০৭ সালের ৪ জুলাই প্রথমবার ঠিকানা পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়। তখন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে গুলশান-১ এর ২২ নম্বর রোডের ৩/এ হোল্ডিং থেকে গুলশান-১ এর ৩ নম্বর রোডের ৫৩/৫৫ হোল্ডিংয়ে স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০১১ সালের ১৮ অগাস্ট দ্বিতীয় দফা সাউথ পয়েন্ট কলেজকে ঠিকানা পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়। তখন গুলশান-১ এর ৩ নম্বর রোডের ৫৩/৫৫ হোল্ডিং থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার বি বøকের ‘এ’ প্লটে ৮৯ নম্বর বাড়িতে (উত্তর) স্থানান্তরের কথা বলা হয়। দ্বিতীয় দফা স্থানান্তরের সময় শর্ত ছিল দুটি। বোর্ডের অনুমতি ছাড়া ঠিকানা বা ভবন পরিবর্তন করা যাবে না এবং দুই বছরের মধ্যে নিজস্ব জমি ও ভবনের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ দর্শাও নোটিসে বলা হয়, ওই তথ্য অনুযায়ী মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার ঠিকানাতেই সাউথ পয়েন্ট কলেজের কার্যক্রম চলার কথা। তবে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ভাষ্যমতে, মালিবাগের চৌধুরীপাড়ার ওই স্থানটি ছাড়াও আপনারা গুলশান, উত্তরা, মিরপুরসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বোর্ডের অনুমতিবিহীন একাধিক শাখা ক্যাম্পাস চালু রেখেছেন। বিধি বহির্ভূতভাবে শাখা ক্যাম্পাস চালু রাখার কারণ জানতে চেয়ে এর আগে ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর চিঠি দেওয়া হলেও ‘যুক্তিসঙ্গত কোনো সদুত্তর’ কলেজ কর্তৃপক্ষ দেয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।

এ অবস্থায় আবারও কলেজের অধ্যক্ষকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. হারুন-অর-রশিদের দপ্তরে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে পাঠানো চিঠিতে। সাউথ পয়েন্টের অধ্যক্ষ হামিদা আলী জানান, ঢাকার উত্তরা, বনানী, মিরপুর, মালিবাগ ও বারিধারায় সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শাখাগুলোতে সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন এক হাজার ৩০০ শিক্ষক।

তিনি বলেন, সবগুলো ক্যাম্পাসের অনুমোদনের জন্য তারা অনেক আগেই বোর্ডে আবেদন করেছেন। আবেদন পাওয়ার পর বোর্ড থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শনে আসার শিডিউল জানিয়ে আমাদের চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সেই পরিদর্শন স্থগিত রয়েছে। এরপরেও কেন আমাদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হল তা বোধগম্য নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাউথ পয়েন্ট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ