পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিসেবে অনানুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন গ্রহণ করেছেন হিলারি ক্লিনটন। গত বৃহস্পতিবার ফিলাডেলফিয়ায় দলের জাতীয় সম্মেলনের শেষদিন হিলারি এই মনোনয়ন গ্রহণ করেন। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হলে হিলারি হবেন দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। এদিকে ফিলাডেলফিয়ায় ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে যোগ দিয়ে নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র, সাবেক রিপাবলিকান মাইকেল ব্লুমবার্গ বলেছেন, আমেরিকানদের ভোট দিতে হবে হিলারি ক্লিনটনকেই। কারণ তিনি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো নন। তিনি অনেক বেশি যৌক্তিক, অনেক বেশি যোগ্য। বক্তৃতায় ডেমোক্র্যাটদেরও সমালোচনা করেন এই মিডিয়া মুঘল ও একসময়কার প্রভাবশালী রিপাবলিকান। তবে তিনি এও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন বিপজ্জনক মানুষ, ব্যবসা জগতে এক মন্দ চরিত্র। তিনি হবেন এক ধ্বংসাত্মক প্রেসিডেন্ট। ব্লুমবার্গ আরও বলেন, আমি একজন নিউইয়র্কার। কোনো প্রতারককে নিউইয়র্কাররা সহজেই চিনতে পারে। বক্তৃতায় বিলিয়নিয়ার ব্লুমবার্গ হিলারির প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, রিপাবলিকান প্রার্থীর বাগাড়ম্বরের সঙ্গে বাস্তবতার মিল সামান্যই। আমেরিকানরা যদি কোনো মহান ব্যবসায়ীকে হোয়াইট হাউসে দেখতেও চায়, তাদের চোখ ডনাল্ড ট্রাম্পের দিক থেকে ফিরিয়ে নিতে হবে, বলেন মাইকেল ব্লুমবার্গ। ক্যারিয়ারের পুরো সময় ধরে ডনাল্ড ট্রাম্প যে ইতিহাস তৈরি করে এসেছেন, তা আসলে ঋণখেলাপি, হাজার হাজার মামলা, স্টেকহোল্ডার আর কন্ট্রাকটরদের ক্ষোভ, ক্রোধে ভরা। এরা সবাই কোনো না কোনোভাবে ডনাল্ড ট্রাম্পের হাতে প্রতারিত। ট্রাম্প বলছেন, তিনি যেভাবে তার ব্যবসা পরিচালনা করছেন, সেভাবেই দেশকে চালাবেন। হা ইশ্বর, আমাদের রক্ষা করো! তিনি আরও বলেন, আসলে ট্রাম্প নিজেকে যে ধনী ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন তা ¯্রফে হিপোক্রেসি। তিনি কেবল তার সম্পদের বাগাড়ম্বরই করে যাচ্ছেন, কিন্তু কোথাও প্রকৃত সম্পদের হিসাব দাখিল করছেন না। এমনকি কত ডলার ট্যাক্স দেন তাও জানাচ্ছেন না। উল্টো যখনই এসব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তখনই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান।
এর আগে, ডেমোক্রেটিক পার্টি সম্মেলনের তৃতীয় দিনে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সবাইকে অবাক করে অপ্রত্যাশিতভাবে মঞ্চে আবির্ভূত হন। ফিলাডেলফিয়ায় ডেমোক্রেটিক পার্টির এই জাতীয় সম্মেলনের তৃতীয় দিন গত বুধবার মঞ্চে একের পর এক হাজির হয়েছিলেন দলের ও দেশের সুপরিচিত তারকারা। তাদের মধ্যে ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেটা, নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র মাইক ব্লুমবার্গ। কিন্তু দিনের শেষ ও সেরা আকর্ষণ ছিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আর তিনিই হয়তো সবচেয়ে বেশি প্রশংসায় ভাসিয়েছেন দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে। প্রায় ৪৫ মিনিট স্থায়ী ভাষণে ওবামা যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে হিলারি কেন সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী, তার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। পাশাপাশি ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে দেশের শাসনভার তুলে দেওয়া কেন বিপজ্জনক তারও ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। বারাক ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে বেশি যোগ্য ও অভিজ্ঞ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নেই। আমার অথবা বিল ক্লিনটনের চেয়েও বেশি যোগ্য হিলারি। হিলারিকে তার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে চিহ্নিত করে ওবামা বলেন, তিনি যে কাজ শুরু করেছিলেন, তা শেষ করবেন হিলারি। স্পষ্টতই ট্রাম্পকে খোঁচা দিয়ে ওবামা বলেন, আর সে কাজ তিনি করবেন নির্যাতনের আশ্রয় না নিয়ে, কোনো বিশেষ ধর্মের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি না করে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন ওবামা। হিলারিও নভেম্বরের নির্বাচনে জিতলে হবেন দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রিপাবলিকান নেতারা তাদের সম্মেলনে যে ব্যর্থ ও দুর্বল যুক্তরাষ্ট্রের চিত্র তুলে ধরেন, ঠিক তার বিপরীত এক আশাবাদী ও সফল যুক্তরাষ্ট্রের পরিচয় তুলে ধরতে উদগ্রীব ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির বক্তারা। এ কাজে নেতৃত্ব দেন প্রেসিডেন্ট ওবামা নিজে। তিনি বলেন, যে যুক্তরাষ্ট্রকে আমি চিনি, তা সাহসী, আশাবাদী ও উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন। ওবামা দাবি করেন, তার আট বছরের শাসনামলে দেশ এক বিপর্যস্ত অর্থনীতি কাটিয়ে উঠেছে। তবে এখনো অনেক মানুষ রয়েছে, যারা অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের সুফল সমানভাবে ভোগের সুযোগ পায়নি।
ওবামা আরো বলেন, এখনো অনেক কিছু করার বাকি। এখনো দরকার ভালো কর্মসংস্থানের, দরকার বেতনসহ ছুটির সুযোগ, প্রতিটি শিশু যাতে দারিদ্র্যের কশাঘাত কাটিয়ে বিশ্বসেরা শিক্ষার সুযোগ পায় তার নিশ্চয়তা। সেই সুযোগ সৃষ্টির জন্য সেরা প্রার্থী হলেন হিলারি ক্লিনটন। ওবামা ডোনাল্ড ট্রাম্পের দুর্বল দিকগুলোও তুলে ধরেন। একপর্যায়ে তিনি এই ধনকুবের ব্যবসায়ীকে ফ্যাসিস্ট ও বাক্যবাগীশ বলেও ইঙ্গিত করেন। একমাত্র তিনিই পারেন দুর্দশাগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে তুলতেÑট্রাম্পের এই দাবি চ্যালেঞ্জ করে ওবামা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শক্তির উৎস এ দেশের মানুষ, যারা সম্মিলিত চেষ্টায় অসম্ভব সাধন করেছে। তারা কোনো একনায়কের অধীনে শাসিত হতে চায় না।
ওবামার ভাষণ শেষে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে মঞ্চে প্রবেশ করেন হিলারি ক্লিনটন। তিনি ওবামার সঙ্গে আলিঙ্গন করেন এবং কয়েক মুহূর্ত মঞ্চে একসঙ্গে কাটান। সম্মেলনকক্ষের ২০ হাজারের বেশি দর্শক এ সময় মুহুর্মুহু করতালি ও আমরা পারি (ইয়েস, উই ক্যান) স্লোগান দিয়ে বিদায়ী এবং তার আসনে সমাসীন হওয়ার প্রত্যাশী দুই নেতাকে অভিনন্দিত করেন। দিনের অন্য প্রধান বক্তা ছিলেন মাইক ব্লুমবার্গ। এর পর হিলারির রানিং মেট, ভার্জিনিয়ার সাবেক গভর্নর ও সিনেটর টিম কেইনও বক্তব্য দেন। স্প্যানিশ ভাষায় পারদর্শী এই সিনেটরও তার ভাষণে ট্রাম্পের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। হিলারির নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্য ছেলের নিরাপত্তা হিলারির হাতে তুলে দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত হতে পারি। গত বৃহস্পতিবার ছিল সম্মেলনের শেষ দিন। বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।