পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
করোনার প্রভাব পড়েছে দেশের রফতানি আয়ে। সদ্যসমাপ্ত অর্থ-বছরে পণ্যের রফতানি আয় আগের বছরের তুলনায় কমতে পারে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবির ১১ মাসের হিসেবে উঠে এসেছে এমন তথ্য। তবে এই দুর্যোগকালেও বিশ্ব বাজারে চাহিদা বেড়েছে ফলমূল, শাকসবজি, সিল্ক, পাটপণ্য ও জাহাজ শিল্পের।
২০১৮-১৯ স্বপ্নের এক অর্থবছর পার করে দেশের রফতানিকারকরা। লক্ষ্যমাত্রা ৩৯ বিলিয়ন ডলার হলেও পণ্য রপ্তানি থেকে আয় আসে প্রায় ৪১ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধির উর্ধমুখী ধারায় সেবছর রফতানি আয় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার বেশি। তবে, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের চাকা ঘুরেছে উল্টোপথে। সাড়ে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানির লক্ষ্য থাকলেও ১১ মাসে আয় এসেছে মাত্র ৩১ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ১৮ শতাংশ কম।
১১ মাসের হিসাবে, তৈরি পোশাক খাতের রফতানি আয় কমেছে ১৯ শতাংশ, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ২৬ শতাংশ কম। যদিও, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই খাতের মোট আয় ছিল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার বেশি।
আগের অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি আয় করা প্লাস্টিকখাতেও এবার নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধাক্কা। অর্থবছরের মোট হিসাবে এখাতের রফতানি কমবে ২০ শতাংশের বেশি। নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতেই আটকে আছে দেশের ২য় বৃহত্তম রফতানিখাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের আয়। প্রথম ১১ মাসে কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ রফতানি আয়।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার বেশি আয় করা সম্ভাবনার ওষুধ শিল্পও এবার নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির ঘরে। তথ্য বলছে, করোনায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার পরও, এবার ওষুধ ও ওষুধ পণ্যের রফতানি কমতে পারে ১ শতাংশ।
অর্থনীতিবিশ্লেষকদের মতে, রফতানি আয়ের বিপর্যয় মোকাবিলায় জোর দিতে হবে খাতবহুমুখীকরণে।
অর্থনীতিবিদ তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ভারসাম্য আনাটা আমাদের জন্য খুবই জরুরী। একটা পণ্যের উপরে আমরা যদি দীর্ঘদিন নির্ভরশীল থাকি দিনশেষে আমাদের রপ্তানিতে আমাদের ঝুঁকি থাকবে।
তবে, রপ্তানি বাজারে দাপটে ঘুরছে জাহাজ শিল্প। ১১ মাসেই এ খাতের রপ্তানির আয় অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণের বেশি। জাহাজের পথেই হেঁটেছে হিমায়িত মাছ। এরই মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে রপ্তানি আয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় যা ১ কোটি ডলারের বেশি। পাটখাতও ধরে রেখেছে বাজার চাহিদা। ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে ফিরলেও এ খাতের ১১ মাসের অর্জন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। মোট হিসাবে আয়ের অংক বড় না হলেও সিল্ক পণ্যের রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫শ’ শতাংশ।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে বাংলাদেশি ফলমূল ও শাকসবজি বেশি কিনেছেন বিশ্ববাজারের ক্রেতারা। তবে, বাজার থেকে ছিটকে পড়েছে শুকনা খাবার ও মসলা জাতীয় পণ্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।