পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : হোয়াইট হাউস নির্মাণের নেপথ্যে দাসদের ভূমিকার কথা সামনে এনেছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। গত সোমবার রাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ডেমোক্রেটিক দলের ন্যাশনাল কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন তিনি। টেলিভিশনের ব্যস্ত সময়ে প্রচারিত ভাষণে মিশেল ওবামা বলেন, দাসরা হোয়াইট হাউস তৈরি করেছে। এ বক্তব্যে ইতিহাসে নিজের আফ্রিকান-আমেরিকান পরিবারের স্থানকে নাটকীয় করে তোলেন মার্কিন ফাস্ট লেডি। তবে হোয়াইট হাউস নির্মাণে দাসদের, তথা আফ্রিকান-আমেরিকান কালো মানুষদের ইতিহাস তুলে আনায় তার বক্তব্য নিয়ে উপহাস ও অবিশ্বাসও করেছেন কেউ কেউ। তারা প্রশ্ন করছেন, আসলেই বিষয়টি সত্য কিনা? তারা আরও বলছেন, মিশেলের এ বক্তব্য দেশকে বর্ণবাদের ভিত্তিতে বিভক্ত করার একটি প্রয়াস মাত্র। হোয়াইট হাউস নির্মাণে দাসদের ভূমিকা ছিল এমন দাবি নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে খুব কমই বিতর্ক রয়েছে। হোয়াইট হাউস হিস্টোরিকাল অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, পরিকল্পনাকারীরা প্রাথমিকভাবে ইউরোপ থেকে শ্রমিক আমদানি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে ঝামেলায় পড়েন তারা। তাই প্রচুর পরিমাণে শ্রমের যোগানে তারা আফ্রিকান-আমেরিকান দাস ও স্বাধীন ব্যক্তিদের নিয়ে আসেন। এরাই যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে হোয়াইট হাউস এবং প্রথমদিককার সরকারি অন্যান্য ভবন নির্মাণ করেন।
অ্যাসোসিয়েশন জানায়, এ দাসরা অ্যাকুইয়াতে সরকারি খনিতে কাজ করেছিল। এখানে দাসরা হোয়াইট হাউসের দেয়ালের জন্য পাথর কাটার কাজ করেছে। হোয়াইট হাউসের এ নির্মাণ টিমে ম্যারিল্যান্ড ও ভার্জিনিয়ার সাদা শ্রমিকরাও ছিল। এছাড়া আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ইউরোপের অন্যান্য অংশ থেকে অভিবাসীরা শ্রমিকরাও নির্মাণ কাজে অংশ নেয়। ওয়াশিংটনভিত্তিক সাংবাদিক জেসি হল্যান্ড অদৃশ্য : হোয়াইট হাউসে আফ্রিকান-আমেরিকানদের না বলা গল্প শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লেখেন। বলেন, প্রেসিডেন্টের বাড়ি ও অন্যান্য সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবন কিভাবে নির্মাণ করা হয়েছে তা নিয়ে অধিকাংশ মানুষই কখনও চিন্তা করেন না। কিন্তু ইতিহাসবিদরা ঠিকই দাসদের ভূমিকা দীর্ঘদিন থেকেই স্বীকার করে আসছেন। হল্যান্ড এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তুমি যদি এ সম্পর্কে চিন্তা কর, অবশ্যই তা চমৎকার হবে। হোয়াইট হাউস নব্য ধ্রুপদি প্রাসাদ, যা দক্ষিণ অঞ্চলে দাসত্বের সময় নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে নির্মিত বেশিরভাগ প্রাসাদ দাসদের দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আমেরিকান হিসেবে আমাদের দেশের পুরকথা তৈরি করেছি এবং অনেক সময়ই আমরা এই সব পুরকথার পেছনে ফিরে দেখি না। আমার মতে, সত্য খুঁজে বের করা এবং এই দেশের নির্মাণে প্রত্যেকের অংশগ্রহণকে স্বীকৃতি দেয়া কেবল মাত্র আমাদের দেশকে আরও গরীয়ান করবে।
গত সোমবার মিশেল বলেন, এই দেশের গল্পই বলছি আপনাদের। সেই গল্প, যার কারণে আজকের এই রাতে আপনারা এই মঞ্চে আমাকে দেখছেন ফাস্ট লেডির ভূমিকায়। গল্পটা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে প্রবাহিত মার্কিন জনগোষ্ঠীর দাসত্বের কষাঘাত সম্পর্কিত অজানা ইতিহাসের। দাসত্ব থেকে জন্ম নেওয়া অধঃস্তনতার লজ্জার গল্প বলছি আমি। বলছি, মানুষে মানুষে পরস্পর-বিচ্ছিন্নতার হূল থেকে জন্ম নেওয়া এক গল্প। তবে সংগ্রাম, আশা আর তৎপরতার মধ্যদিয়ে সেই ইতিবাচকতা অর্জিত হয়েছে যা হওয়া উচিত। সেই অগ্রগতি আর প্রগতির কারণেই কৃষ্ণাঙ্গ হয়েও আমি প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ হিসেবে এমন একটা বাড়িতে প্রতিদিন ঘুম থেকে জাগছি, যেটি দাসদের তৈরি। আমি দেখছি, দাসদের তৈরি করা সেই বাড়িতে, সেই হোয়াইট হাউসের লনে কুকুরের সঙ্গে খেলা করছে দুজন সুন্দর-বুদ্ধিমতী কালো মেয়ে।
সামাজিক যোগাযেযাগের মাধমে অনেক রক্ষণশীল তার এ বক্তব্যের সমালোচনা ও উপহাস করেছেন। তাদের কেউ যুক্তি দিয়ে বলেছেন, হোয়াইট হাউস যেহেতু সাদা মানুষদের দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তাই এটা মিথ্যা এবং তাদের দিয়েই এর সংস্কার কাজ করা হয়েছে। ডানপন্থি সংবাদ ওয়েবসাইট ইনফোওয়ার্স এটাকে বর্ণবাদী নিগ্রহ বলে অবহিত করেছে।
প্রেসিডেন্ট ওবামাও হোয়াইট হাউস নির্মাণে দাসদের ভূমিকার কথা তুলে এনেছিলেন বছর খানেক আগে। তবে একেবারে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে করা মিশেলের মন্তব্য আলাদা তাৎপর্য নিয়ে হাজির হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এর মধ্যদিয়ে আমাদের চেনাজানা পরিসরের বাইরে লুকিয়ে থাকা এক সত্যিকারের জন-ইতিহাস উন্মোচনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিবিসি, রয়টার্স ও ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।