পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ অনুযায়ী একটি অধিকাংশ রেস্তোরাঁই মানছে না তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন। ঢাকা শহরের ৯৮ শতাংশ রেস্তোরাঁয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের চিত্র উঠে এসেছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন-এর এক জরিপে। সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের যৌথ উদ্যোগে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও ঢাকা শহরের রেস্তোরাঁয় আইন বাস্তবায়নের চিত্র পর্যবেক্ষণ জরিপের ফলাফল ও ভবিষ্যত করণীয়’ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনা সভায় জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সহকারি পরিচালক ও তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. মোখলেছুর রহমান।
২০১৯ সালের জুন মাসে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন তত্ত¡াবধায়নে ‘ঢাকা শহরের রেস্তেরাঁয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা’ যাচাইয়ের জন্য ‘ক্রস সেকশনাল’ পদ্ধতিতে জরিপটি পরিচালিত হয়। এই জরিপের উদ্দেশ্য হলো, ঢাকা শহরের রেস্তোরাঁয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থার পর্যবেক্ষণ ও আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসক, রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ, মালিক সমিতি এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের কাছে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রতিপালনের প্রমাণভিত্তিক তথ্য সরবরাহ করা।
ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার মোট ৩৭১টি (উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২১১টি এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১৬৬টি) রেস্তোরাঁয় পরিচালিত হয় এই জরিপ। যার মধ্যে ২৪৫টি রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স আছে আর বাকী ১২৬টি রেস্তোরাঁর কোন ট্রেড লাইসেন্স নেই। এই ৩৭১টি রেস্তোরাঁর ৯৮ শতাংশ-এ সামগ্রিকভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লক্সঘনের চিত্র উঠে আসে অর্থাৎ মাত্র ২ শতাংশ রেস্তোরাঁ যথাযথভাবে আইন বাস্তবায়ন করছে। আরো দেখা গিয়েছে যে ৩৪ শতাংশ রেস্তোরাঁয় ধূমপানের সামগ্রিক চিত্র পাওয়া যায়, ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ রেস্তোরাঁয় সরাসরি ধূমপানের দৃশ্য দেখা যায়; ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ রেস্তোরাঁয় সিগারেটের উচ্ছিষ্ট অংশ/ছাঁইদানি পাওয়া গিয়েছে এবং ২ দশমিক ৬ শতাংশ রেস্তোরাঁয় ধূমপানের গন্ধ পাওয়া গিয়েছে। ৯৮ শতাংশ রেস্তোরাঁয় আইন অনুযায়ী সতর্কতামূলক নোটিশ পাওয়া যায়নি এবং ৯২ শতাংশ রেস্তোরাঁয় কোনো ধরনের সতর্কতামূলক নোটিশ পাওয়া যায়নি। ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আইন লঙ্ঘনের হার যথাক্রমে ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ ও ৩৫ দশমিক ৬ শতাংশ। ট্রেড লাইসেন্স আছে এমন রেস্তোরাঁয় আইন লঙ্ঘনের হার ৩১ দশমিক ৪ এবং ট্রেড লাইসেন্সবিহীন রেস্তোরাঁয় হার ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. মোমিনুর রহমান মামুন। সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। এছাড়াও সভায় অংশ নেয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব, সকল বিভাগীয় প্রধান, সকল আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা, সকল সহকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সকল স্বাস্থ্য পরিদর্শকসহ অন্যান্য তামাকবিরোধী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ। সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন কাযক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে এবং রেস্তোরাঁসহ সকল পাবলিক প্লেসে যেন আইন আরো শক্তভাবে বাস্তবায়িত হয় সে বিষয় প্রস্তাবিত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নসহ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন আরো কঠোর পদক্ষেপ নিবে বলে জানান প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ তামাকমুক্ত হবে’। বাংলাদেশ সরকার ২০০৩ সালে এফসিটিসি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে এবং ২০০৪ সালে অনুস্বাক্ষর করে। বাংলাদেশ এই চুক্তির প্রথম সাক্ষরকারী দেশ এবং এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকার ২০০৫ সালে ধ‚মপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়ন করে ও পরে ২০১৩ সালে আইনটি সংশোধন করে এবং ২০১৫ সালে বিধি প্রনয়ণ করে। আইনের ধারা - ৪ অনুযায়ী, পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহণে ধূমপান নিষিদ্ধ; ধারা - ৭ (ক) অনুযায়ী, পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহনের মালিক/তত্ত্বাবধায়ক/ব্যবস্থাপক তার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহণকে ধ‚মপানমুক্ত রাখবেন; ধারা-৮ অনুযায়ী, সকল পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহণে সতর্কতামূলক নোটিশ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক এবং ধারা - ৫ অনুযায়ী, যে কোন উপায়ে তামাকজাতদ্রব্যের সকল ধরনের বিজ্ঞাপন, প্রচার-প্রচারণা ও প্রণোদনা নিষিদ্ধ। কিন্তু এ আইন মানছে না রেস্তোরাঁসমূহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।