Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘ওযু করে দোয়া-দুরুদ পড়েছি’

লঞ্চ ডুবির ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা পর লঞ্চের ভেতর থেকে সুমন বেপারী (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ডুবুরিরা। গত সোমবার রাত ১০টায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে যাওয়া মর্নিং বার্ড লঞ্চের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসাধীন সুমন বেপারী গতকাল সাংবাদিকদের জানান, মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ি উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামে তার বাড়ি। তিনি একজন ফল ব্যবসায়ী। সদরঘাটের বাদামতলী ফলের আড়তেই ব্যবসা করেন তিনি। ব্যবসার কাজেই ঢাকায় আসছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, লঞ্চ যখন ডোবে, তখন ঘুমাচ্ছিলাম। লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার সময় ঘুম ভাঙে। শুধু বুঝতে পারলাম, লঞ্চটি ধাক্কা খাইলো। আর কিছু খেয়াল নাই। কিসের মধ্যে ছিলাম আল্লাহ জানেন, তবে ভেতরে এক জায়গায় খাড়ায় ছিলাম রড ধইরা। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া লঞ্চটি গত সোমবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুন্সীগঞ্জ ছেড়ে আসে। সেসময় ইঞ্জিন রুমের সাইডে বসা ছিলাম। দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে সুমন বলেন, আমার কাছে মনে হইলো ১০ মিনিট ছিলাম, আল্লাহ যে কেমনে ১২-১৩ ঘণ্টা পার কইরা দিলো বলতে পারি না। আমি ভেতরে কিসের মধ্যে ছিলাম, কিচ্ছু বুঝতে পারি নাই। তবে পানির তলে ছিলাম এইটুক জানি।
সেখান থেকে বের হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আল্লাহ বাইর কইরা নিয়ে আসছে। বের হওয়ার সময় কিচ্ছু বুঝি নাই। বের হওয়ার পর আমারে উদ্ধার কইরা নিয়ে আসছে। পানির মধ্যে যখন ছিলাম। তখন সাঁতার কাটার ফোম দেখছিলাম চোখের সামনে, হাতরায় নিতে পারতে ছিলাম না, পরে লোহার রড ধরে বসে ছিলাম।
তিনি বলেন, লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পরেই পানির ভেতরে ছিলাম। পরে আল্লাহ আস্তে আস্তে আমাকে একটি জায়গায় নিয়ে আসছে সেখানে কোনো পানি ছিল না। পা পর্যন্ত একটু পানি ছিল। সেই পানি দিয়ে ওযু করেছি। এরপর দোয়া-দুরুদ পড়েছি।
ডুবুরিরা জানান, গত সোমবার রাতে যখন টিউবের মাধ্যমে লঞ্চটি ওপরে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল ঠিক তখন লঞ্চটির একাংশ ওপরে উঠে আসলেই সুমন বেপারী লঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসেন। ডুবুরিরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে লাইফ জ্যাকেটে ঢেকে এবং শরীর মেসেজ করে তার শরীর গরম করার চেষ্টা করেন। এরপর সুমন বেপারী চোখ মেলে তাকান। সেখান থেকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম এ সাত্তার সরকার বলেন, সুমনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে এখনও। তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছেন, কথাবার্তা বলছেন। কিছু টেস্ট করবো, তারপর সিদ্ধান্ত নেবো। সব কিছু ঠিক থাকলে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ