Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৫ লাখ পোনা, জাল ও সরঞ্জাম জব্দ সাগরে চিংড়ি পোনা নিধন বন্ধে অভিযান

প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সীতাকুÐ উপজেলা সংবাদদাতা : সীতাকুÐের উপকূলীয় এলাকায় বঙ্গোপসাগর থেকে অবৈধ চিংড়ি আহরণ বন্ধে জোরালো অভিযান শুরু হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ইতিপূর্বে কয়েক দফা সফল অভিযানে চিংড়ি শিকারীদের কবল থেকে লাখ লাখ চিংড়ি উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ৫ লাখ বাগদা চিংড়ি, চরঘেরা জাল, চিংড়ি রাখার পাত্রসহ প্রচুর সরঞ্জাম জব্দ করা হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপকূলীয় উপজেলা সীতাকুÐে সলিমপুর থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত সর্বত্রই চিংড়ি পোনা পাচারকারী চক্র সক্রিয়। এসব চক্রের সদস্যরা স্থানীয়ভাবে সিন্ডিকেট গড়ে সাগর থেকে অবৈধভাবে বাগদা চিংড়ি আহরণ করে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করে আসছে। একসময় এসব চিংড়ি পোনা আহরণের বিষয়ে মৎস্য বিভাগের তেমন কোন পদক্ষেপ না থাকায় বিগত কয়েকদশকে এসব সিন্ডিকেটের জাল ছড়িয়ে গেছে অনেক দূর। এসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতিদিন লাখ লাখ চিংড়ি পোনা আহরণ ও পাচার করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। তবে বিগত কয়েকবছরে এ বিষয়ে মৎস্য বিভাগ বেশ নড়ে চড়ে বসেছে। এসময় মাঝে মধ্যেই চিংড়ি পোনা, জাটকা নিধনসহ অবৈধভাবে মাছ শিকারের বিরুদ্ধে অভিযান চলতে থাকে। ফলে জাটকা নিধনসহ অন্যান্য অনিয়ম কিছুটা কমে আসলেও বন্ধ হয়নি চিংড়ি আহরণ। তবে মোঃ সেলিম রেজা সীতাকুÐ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করার পর এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি চিংড়ি পোনা শিকারীদের বিরুদ্ধে বারবার অভিযান চালিয়ে লাখ লাখ মাছ উদ্ধার করে সাগরে অবমুক্ত করেছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গোপন সূত্রে উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া সাগর উপকূলে একটি চিংড়ি পাচারকারী চক্রের আস্তানার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল ইসলাম ভুইয়া, মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা ও পুলিশ সহযোগে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, অবৈধ চিংড়ি পোনা আহরণ, জাটকা নিধন, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাছ শিকার প্রভৃতি বিষয়ে আমি সবসময় কঠোর অবস্থানে আছি। এসব খবর পাওয়া মাত্রই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বাঁশবাড়ীয়ায় চিংড়ি শিকারীদের একটি আস্তানার খবর পেয়ে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল ইসলাম ভূইয়ার নেতৃত্বে অভিযান চালানো হলে ৫ লাখ বাগদা চিংড়ি পোনা, অন্তত ১০ হাজার মিটার চরঘেরা জাল, ৩০টি মাছ রাখার ড্রাম, ৩৪টি হাড়ি জব্দ করা হয়। অভিযানকালে চিংড়ি পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে ঐ ঘরটি ভেঙে দেবার চেষ্টা হলেও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকায় এদিন ঘরটি ভাঙা যায়নি। পরে সেটি ভেঙে দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল ইসলাম ভূইয়া স্থানীয়দের এভাবে চিংড়ি আহরণ ও পাচার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পরবর্তীতে কাউকে চিংড়িসহ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। এর কয়েকদিন আগেও গোপন সূত্রে খবর পেয়ে উপজেলার বারআউলিয়া এলাকা থেকে মৎস্য বিভাগ কয়েক লাখ চিংড়ি পোনা উদ্ধার করেছিলো। মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা আরো বলেন, এখন অবৈধভাবে মৎস্য নিধনকারী ও পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ