পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সেই বিতর্কিত তালিকা থেকেই ১৪৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গতকাল অধিদফতরের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত নিয়োগপত্র প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের জরুরি সেবা প্রদানে প্রেসিডেন্টের নির্দেশক্রমে ‘দি জেনারেল ক্যাজুয়াল এ্যাক্ট ১৮৯৭’ এর ১৫ ধারা মোতাবেক শিক্ষগত যোগ্যতা ছাড়া অন্যান্য যোগ্যতা ও স্বাভাবিক নিয়ম প্রমার্জনা করে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
জানা গেছে, করোনা আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার আওতা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১২শ’ মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রদানের নির্দেশের পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি অসাধু চক্র অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ১৮৩ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের তালিকা চ‚ড়ান্ত করেন।
তালিকায় নানা অসঙ্গতি থাকায় তালিকা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। উত্থাপিত অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত না করে গত ১৪ জুন ও ১৫ জুন তারিখে ১৮৩ জনকে স্বশরীরে হাজির হয়ে কাগজপত্র দাখিল করতে বলা হয়। ওই সময় ১৮৩ জনের মধ্যে ১৫৭ জন হাজির হয়ে কাগজপত্র জমা দেন। তাদের মধ্যে থেকেই ১৪৫ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হলো। বিএসসি মেডিকেল টেকনোলজি কোর্স পাশ করা ৯ জন, ডিপ্লোমা ইন ফার্মেসি কোর্স করা একজন, ডিপ্লোমা সনদবিহীন ২ জনসহ মোট ১২ জন বাদ দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ থেকে পাশ করা ৯৩ জন এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে পাশ করা ৫২ জন মোট ১৪৫ জন প্রার্থীকে চূড়ান্ত নিয়োগ প্রদান করা হলো। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে মধ্যে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. বেলাল হোসেন বলেন, তিনি ওপরের নির্দেশেই এই তালিকা প্রণয়ন ও নিয়োগ প্রদান করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জমাকৃত কাগজপত্র বাছাই করে দেখা গেছে রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ থেকে পাশ করা প্রার্থী রয়েছেন ৯৩, কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে পাশ করা ৫২, বিএসসি ইন হেলথ টেকনোলজি পাস ৯, সনদবিহীন প্রার্থী ২ এবং ডিপ্লোমা ইন ফার্মেসি পাশ করা প্রার্থী ১ জন। তালিকায় ডুপ্লিকেট হওয়া ১৪ জন প্রার্থীর নাম পাওয়া গেছে। এরা হলেন ক্রমিক নং ৪৯ ও ১৪২ এ একই ব্যক্তি মো. দাইমুল ইসলাম, ক্রমিক নং ৫০ ও ১৪৩ মো. আরাফাত হোসেন গনি, ক্রমিক নং ৫২ ও ১৪১ মো. কাফি আল মাহমুদ, ক্রমিক নং ৫৩ ও ১৪৪ মো. মশিউর রহমান, ক্রমিক নং ৬৩ ও ১৪৪ মো. হামিম, ক্রমিক নং ৭৮ ও ১৫৯ মো. আব্দুল কায়উম, ক্রমিক নং ৮২ ও ১৭৮ মো. জিন্নাতুল নাইম, ক্রমিক নং ৮৪ ও ১৭৭ মো. ইউসুফ আলী, ক্রমিক নং ৮৬ ও ১২৬ মো. শিমুল আহমেদ, ক্রমিক নং ৮৯ ও ১৮৩ মো. নিশাত রায়হান, ক্রমিক নং ৯৬ ও ১৩৩ মো. শাহিন আলম, ক্রমিক নং ১০০ ও ১৫৮ মো. খোকন সরকার, ক্রমিক ১০৮ ও ১৪৫ মো. মোরশেদ রায়হান, ক্রমিক নং ১২২ ও ১৩৪ মো. মাসুদ বিল্লাহ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বাছাইকৃত ১৫৭ জনের মধ্যে মো. আব্দুল কায়উম, শিমুল আহমেদ, মো. শাহিন আলম, মো. মোরশেদ রায়হান ছাড়া বাকি ১০ জনের নাম নিয়োগের চ‚ড়ান্ত তালিকায় আছে। এছাড়া গত ২৭ মে এনটিপি প্রেগামের বিশেষ প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত ২৭ জনের মধ্যে ৪ জন যারা কাজে যোগদান করেনি তাদের নাম ১৮৩ জনের তালিকায় রয়েছে। এরা হলেন ক্রমিক নং ৭০ ইসরাত জাহান, ক্রমিক নং ৭৫ মো. সিরাজুল ইসলাম, ক্রমিক নং ৮১ মাহমুদুল হাসান, ক্রমিক নং ১১০ প্রিন্সেস মেহের আফরোজ রুহানী। এরমধ্যে ইসরাত জাহানের নাম ১৫৭ জনের চ‚ড়ান্ত তালিকায় রয়েছে। এছাড়াও এনটিপি কর্মসূচির অধীনে ১৭ মে অস্থায়ী ভিত্তিতে ৩৩ জন নিয়োগ হয়। যারা ২৩ মে যোগদান করেন। একই কর্মসূচির অধীনে ২৭ মে আরও ২৭ জনের নিয়োগ হয়। তাদের অনেকে ১ জুন থেকে ৭ জুন যোগাদান করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এদের অনেকে কোভিড সংক্রান্ত কাজে যোগদানের পূর্বেই ২ জুন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) স্বাক্ষরিত ১৮৩ জনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। যা ৩ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, উপ সচিব ও অতিরিক্ত সচিবের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়।
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সরকারি পর্যায়ে কর্মরত টেকনোলজিস্টদের পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ চালিয়ে নেয়া নিতে এপ্রিল এবং মে মাসে প্রাদুর্ভাব মহামারী আকারে দেখা দিলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্বপ্রণোদিত হয়ে কিছু মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এই কাজে সম্পৃক্ত হয়। কিন্তু তাদের ১৮৩ জনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ৮ জুনে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ ছাড়পত্রে দেখা যায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে, প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমন ১৮৩ জনকে সৃষ্ট নতুন পদে সরাসরি স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হবে। কিন্তু ২ জুন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) প্রেরিত এবং ৩ জুন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব, যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব অনুমোদিত তালিকায় ঢাকার ১০টি কমিউনিটি সেন্টার, ৪টি বেসরকারি ক্লাব, ৪টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ৭টি বেসরকারি হাসপাতালে এনজিও ব্র্যাক নিয়োজিত কর্মচারীদের নাম রয়েছে। একইভাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইদেশি ৪, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ জন কর্মচারীর নাম ১৮৩ জনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এছাড়া তালিকায় আরও যে অসঙ্গতি রয়েছে তা হলো- পরিচালক (প্রশাসন) কার/কোন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ১৮৩ জনের নামের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন তার স্মারক উল্লেখ নেই। মহাপরিচালকের অনুমোদনের বিষয় উল্লেখ নেই। ১৮৩ জনকে সরাসরি স্থায়ী নিয়োগের কোন প্রস্তাব/সুপারিশ নেই। চিঠিতে যে সকল প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ রয়েছে তারমধ্যে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান/এনজিও’র নাম রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক টেকনোলজিস্ট নিয়োগের কোন ঘোষণা ছিল না। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার প্রধান হাসপাতাল বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে কর্মরতদের নাম নেই তালিকায়। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গত ৪-৫ বছর দরে দৈনিক ভিত্তিতে প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত চারজনসহ মোট ৬ জন টেকনোলজিস্ট কর্মরত আছেন। হাসপাতাল তাদের নিয়মিত করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরে নাম পাঠালেও ১৮৩ জনের তালিকায় তাদের নাম নেই। এছাড়া করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কেন্দ্রস্থল আইইডিসিআরের কর্মরতদের নামও তালিকায় নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।