Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে বাসাভাড়া নিয়ে বিপাকে ব্যাচেলররা

প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীতে লাখ লাখ ব্যাচেলর বাসাভাড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে। ব্যাচেলরদের জন্য আবাসনের সমস্যা নতুন না হলেও গুলশান ও কল্যাণপুর ট্র্যাজেডির পর থেকে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। শত চেষ্টা করেও বাড়ির মালিকদের মন গলিয়ে বাসাভাড়া নিতে পারছেন না ব্যাচেলররা। নাম-পরিচয় যথাযথভাবে উপস্থাপন করেও ব্যাচেলর ভাড়াটিয়ারা মালিকদের সাথে ঠিক মতো কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে না। বরং ব্যাচেলর নাম শুনলেই বাড়ির দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে বাসার মালিকেরা। চাকরিজীবী ব্যাচেলরদের দু-একজন বাসা পেলেও শিক্ষার্থীরা তাও পাচ্ছে না।
এছাড়া ভাড়া নিয়ে যেসব শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন থেকে বাসায় অবস্থান করছে, তাদের অনেককেই বাসা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে মালিকেরা। ফরমের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশে তথ্য জানান দিলেও অনেক বাড়ির মালিক আস্থার অভাবে ব্যাচেলরদের বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে। এদিকে এই কমপ্লেক্সের কোনো ফ্ল্যাট ব্যাচেলর ভাড়াটিয়ার নিকট ভাড়া দেওয়া যাইবে না। প্রায় প্রতিটি কমপ্লেক্সে ঢোকার মুখেও এমন বিজ্ঞপ্তি ঝোলানো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর শেষ করে এখন একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করছেন তিনি। প্রায় দেড় মাস ধরে বাড়ি খুঁজছেন। তিনি বলেন, সব ব্যাচেলর তো আর একরকম হয় না।
কারও কারও সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাড়ির মালিকেরা ভাড়া দিতেই চান না। অনেকে এমনও বলেন যে পরিবার নিয়ে আসুন।
পুরান ঢাকার বকশীবাজারে একটি বাড়িতে মেস থাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবুল কালাম আজাদ। বন্ধুদের নিয়ে প্রায় পাঁচ বছর আগে থেকে ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছেন তিনি। ঈদের পর বাড়ি থেকে আসার পরই বাড়ির মালিক বাসা ছাড়ার নোটিশ হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির পর থেকেই এই বাড়িতে অবস্থান করছি। আগস্টের ১ তারিখেই বাড়ি ছাড়তে বলেছে। মালিকের সঙ্গে আমাদের সবারই ভালো সম্পর্ক। পুলিশের দেয়া ফরমে সম্প্রতি ব্যক্তিগত তথ্যও দিয়েছি। এরপরও বাসার মালিক স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, বাড়ি ছাড়ার জন্য।
তরুণ ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বলেন, এক মাস ধরে হাতিরপুল, কাঁঠালবাগান ও ভূতের গলি এলাকায় বাসা খুঁজছেন তিনি। কিন্তু পরিবার না থাকায় এখনো বাসা জোটেনি। তিনি বলেন, সবখানেই বাড়ির মালিকেরা ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দিতে ইস্তত করেন। অনেক সময় দেখা গেছে, বিজ্ঞপ্তি দেখে ফোন দেওয়ার পর ব্যাচেলর শুনেই লাইন কেটে দিয়েছেন। মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেওয়ার অভিজ্ঞতাও হয়েছে।
ব্যাচেলর নারীরা বাড়ি ভাড়া নিতে গেলে মুখোমুখি হন ভিন্ন বিড়ম্বনার। এমন একজন নারী জানান, এ কারণে কিছুদিন আগেই বাসায় ওঠার এক মাসের মধ্যে তাঁকে তা ছাড়তে হয়েছিল। তিনি বলেন, বাড়ির মালিক আমাদের হুট করেই বাসা ছাড়তে বলেন। আর ভাড়া নিতে গেলে তো শুনতে হয় অনেক অযাচিত প্রশ্ন। বেশির ভাগ মালিকই ভাড়া দিতে চান না।
এই বিষয়ে আজিবুল হক পার্থ নামের এক ব্যাচেলররা ফেইজবুকে ব্যাচেলরদের সমস্যা ও দাবি নিয়ে লিখেছেন। এখানে লেখাটি তুলে দেয়া হলো- সমস্যা নিয়ে ঢাকায় যদি ব্যাচলর বাসা না দেওয়া হয়। সব মেস উঠিয়ে দেওয়া হয় তাহলে কি জঙ্গিবাদ বন্ধ হয়ে যাবে যদি যায় তাহলে আমি শতভাগ এই সিদ্ধান্তের পক্ষে। তবে এই সিদ্ধান্তের আগে কিছু করার দরকার ছিল, সরকারি বেসরকারি সব চাকরির পরীক্ষা-ভাইভা জেলা শহরে নিতে হবে। বেকার যুবকদের অস্থায়ী ভিত্তিতে জেলায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রম শিল্প কারখানা সম বন্টনে দেশের সব জেলায় নিশ্চিত করতে হবে। দেশের যেকোন জেলা থেকে ঢাকায় দিন এসে দিনে ফেরত যাওয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের প্রত্যেকটি জেলা শহরে কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির যথাযথ সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজধানীতে বাসাভাড়া নিয়ে বিপাকে ব্যাচেলররা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ