পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। সব কিছু স্থিতিশীল রয়েছে। কোন কোন মহল এসব নিয়ে মিথ্যে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। তবে এ ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাদের এ আস্থাটা ফিরিয়ে আনতে হবে। আর আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে জঙ্গিবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ব্যবসায়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা দিতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা এ সব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি মাতলুব আহমাদ, মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, স্কয়ার গ্রুপের তপন চৌধুরী, বেক্সিমকো গ্রুপের সালমান এফ রহমান, বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান, বিজেএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মইন উদ্দিন মিন্টু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনাটিকে ‘বৈশ্বিক সমস্যা’ হিসেবে উল্লেখ করে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এখানে কোন রাজনীতি টেনে আনা উচিত নয়। সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য গণমাধ্যমের প্রতিও আহ্বান জানান তারা। সন্ত্রাস ও জঙ্গি মোকাবেলায় সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রশংসা করে ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, বিশ্ববাসী তাকিয়ে আছে এ ঘটনায় সরকার কী পদক্ষেপ নেয়। এটাই এখন মুখ্য বিষয়।
প্রারম্ভিক ও সমাপনী বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এসব জঙ্গি হামলার মূল কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করা। কিন্তু কোন কিছুই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে পারবে না। জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সারাদেশে জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠেছে। গ্রাম-গঞ্জের মানুষও এখন সচেতন। জঙ্গি ও সন্ত্রাস মোকাবেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী করা হচ্ছে। বিদেশীরা সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাইলে তাদের আরও বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
এফবিসিসিআই সভাপতি মাতলুব আহমাদ বলেন, পহেলা জুলাই যে ঘটনা ঘটেছে এতে আমরা সবাই বিস্মিত হয়েছি। এ ধরনের ঘটনা আমরা ইতোপূর্বে ফেস করিনি। এ ধরনের ঘটনার পর পৃথিবী দেখতে চায়- সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনায় যেভাবে তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়েছেন ও শক্তভাবে মোকাবেলা করেছেন এতে করে বিশ্ববাসীর কাছে এ ম্যাসেজ পৌঁছে গেছে যে, বাংলাদেশ জঙ্গিবাদকে কোন প্রশ্রয় দেবে না। তবে সিএনএন ও বিবিসি পহেলা জুলাইয়ের ঘটনায় বাংলাদেশকে যেভাবে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরেছে সেটা কাটিয়ে ওঠতে দেশীয় গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ দেশটা আমাদের। বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পূর্ণ স্বাভাবিক’ দাবি করে তিনি আরও বলেন, জঙ্গি হামলার ঘটনা পরিবহন খাতে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। বিদেশীরাও কাজ করছে স্বাভাবিকভাবেই।
মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, জুলাইয়ের এক তারিখে যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা আজকের সারা পৃথিবীর বাস্তবতা, এটা এখন বাংলাদেশে এসেছে। এতদিন এটা আমাদের মোকাবেলা করতে হয়নি, এখন করতে হচ্ছে। এ ঘটনায় বিদেশী ক্রেতারা যেটা দেখতে চাচ্ছে, সেটা হচ্ছে- আমাদের রেসপন্সটা কী এবং আগামীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমাদের রেসপন্সটা কেমন হবে? আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটাই সরকারকে খুব বড় করে তুলে ধরতে হবে।
বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, দেশের গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংস করার জন্যই এ শিল্পের ক্রেতাদেশের নাগরিকদের ওপর গুলশানে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে বলে আমি মনে করি। এ ঘটনার পর মায়াকান্না করে কেউ কেউ বলছেন, এতে করে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস ব্যবসা অন্যদেশে চলে যাবে। এ কথা যারা বলছেন, তারাই কি এটা করেছেন -এমন প্রশ্ন তুলেন তিনি। এ ঘটনায় দেশের পরিস্থিতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক নেতিবাচক প্রচারণা না করার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এতে আমাদের খুব বেশি ক্ষতি হবে না। কারণ আমরা উদ্যোক্তা আছি মাত্র ৫/৬ হাজার। অন্যদিকে এখানে কাজ করছে কোটি কোটি শ্রমিক। ক্ষতি তাদেরই হবে বেশি। এ ঘটনায় কোন রাজনীতি আসা উচিত নয়।
বিজিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মঈন উদ্দীন আহমেদ মিন্টু বলেন, আমাদের দরকার সরকারের রেসপন্স। এ রেসপন্স পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার, পাবলিক সেক্টর, প্রাইভেট সেক্টর ও মিডিয়া সবাইকে দেখাতে হবে। আমাদের গাজীপুরে ১০ হাজার বিদেশি কাজ করেন। আমরা তাদের বলেছি, আমরা তাদের পাশে আছি। প্রশাসন তাদের নিরাপত্তার উদ্যোগ নিয়েছে। মিডিয়াকেও তাদের অভয় দিতে হবে।
সালমান এফ রহমান সংবাদ সম্মেলনে জানান, ব্যবসা বন্ধ হয়নি। তবে বায়াররা আসতে ভয় পাচ্ছেন। তারা তৃতীয় দেশে আমাদের যেতে বলছেন। তবে আমরা তাদের নিরাপত্তার কথা বলে আসতে বলছি। পুলিশ বিমানবন্দর থেকে তাদের হোটেল এবং কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকলে সহসাই কালো মেঘ কেটে যাবে।
বিটিএমইএ’র সভাপতি তপন চৌধুরী বলেন, এ ধরনের ঘটনা যেকোনো দেশ ও সমাজের জন্য কষ্টের। তবে আমরা জাতি হিসেবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। কষ্ট হয় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কথা চিন্তা করে। ব্যবসা তো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেই। তবে তা ক্ষতি করতে পারবে না। কারণ, আমরা সঠিক পথেই আছি। আমাদের মোকাবেলা করার কৌশলই আমাদের বাঁচিয়ে দেবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।