পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ‘বিপদের মুখে’ আছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু প্রশ্ন রেখেছেন, জঙ্গিদের বাঁচিয়ে রেখে লাভ কী? জঙ্গিদের বাঁচাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার দলের নেতারা সন্দেহের বেলুন ওড়াচ্ছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, জঙ্গিদের তা-বে কঠিন দুর্দিনের মধ্যে আছি। বাংলাদেশ কঠিন বিপদের মধ্যে আছে। একটাই কথা, শত্রুদের মেরে ফেলতে হবে, তাদের বাঁচিয়ে লাভ কী?
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের আয়োজনে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি ওই প্রশ্ন করেন।
এদিকে গত বুধবার বেসরকারি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মুরব্বিরা বলেছেন, কথা বলার ক্ষেত্রে একটু কৌশলী হও। ক্ষমতায় থেকে সব সময় সব কথা বলতে নেই। জানি না কৌশলী হতে পারব কি না, তবে চোরকে চোরই বলব। এ সময় তিনি নিজের জীবন নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমি জানি, আমার পেছনে একটি বুলেট ঘুরতেছে। কিন্তু কিছু করার নাই, আরবিতে একটা প্রবাদ আছে- যা হওয়ার তাই হবে। এই পৃথিবীতে ৭০ বছর বাঁচলাম আর কতো!
গত রোববার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের প্রায় পুরোটাই চুরি হয় দাবি করে এজন্য জনপ্রতিনিধি-আমলা উভয়কে দায়ী করেন তথ্যমন্ত্রী। তার ওই বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাতে কেউ দুঃখ পেলে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি পাঠান মন্ত্রী। পরে মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিষয়টি উঠলে ওই বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে সংসদে সহকর্মীদের দাবির মুখে ক্ষমাও চান তিনি।
গত বুধবার নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ‘জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ মোর্চা’। মতবিনিময় সভায় জঙ্গি নির্মূলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে নজর দেয়ার পরামর্শ দেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি জানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিহ্নিত শিবির রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার শিক্ষকের ভেতরে অনেক শিক্ষক এক্কেবারে জামাতের রুকন। কই তাদেরকে তো ছাঁটাই করতে পারছেন না? আমি প্রকাশ্যেই বলি এসব কথা, এজন্য লোকে আমারে পছন্দ করে না। সবাই বলে আপনি গরম লোক। কিন্তু আমি আসলে ঠা-া মানুষ। আমি চোরকে চোর বলি। আমার অপরাধ এটা, রাজাকারকে রাজাকার বলি আর জঙ্গিকে জঙ্গি বলি।
আলোচনায় মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরে ইদানিং খুন করে পার পাওয়া যায় না। এজন্য আমি খুব খুশি। ৪০ বছর পরেও বিচার হয়। তাহলে আমাকে যদি কেউ হত্যা করে সেই খুনি বাংলার মাটিতে পার পাবে না। শান্তিতে কবরে থাকতে পারব। আমার সন্তানকে বলেছি- ভয় পেও না। জীবনকে যারা ভালোবাসে তারা মৃত্যুকে ভয় পায় না।
জঙ্গিবাদকে ইসলামবিরোধী ও মনগড়া মতবাদ আখ্যা দিয়ে হাসানুল হক ইনু বলেন, কোরআনে, হযরত মোহাম্মদ (সা.) বিদায় হজের ভাষণে এ ধরনের সন্ত্রাসকে ‘কুফরি’ বলেছেন।
বিদায় হজের ভাষণে নবী মোহাম্মদ (সা.) বলে গেছেন- আমার পরে তোমরা একভাই আরেক ভাইকে হত্যা করার মতো কুফরি কাজে লিপ্ত হবে না। সুতরাং জঙ্গিবাদ একটি মনগড়া ধারণা, ভ্রান্ত ব্যবস্থা।
জঙ্গি হামলার জন্য কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ না করার পরামর্শ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নর্থ-সাউথের ২২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ২/৪ জন ছেলের জঙ্গি হয়ে যাওয়াটাকে বড় করে দেখার কিছু নেই। এটা আমাদের সারাদেশের সমস্যার একটি চিত্র। শুধু নর্থ-সাউথ কিংবা মাদ্রাসার দোহাই দিচ্ছেন কেন? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক আগেই তো জামায়াত-শিবিরের রগকাটা বাহিনীর জন্ম দিয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে তো রগকাটা বাহিনীরা হলও দখল করেছিল। আমি প্রশাসনকে বলেছি- নজর যদি দিতে হয়, তাহলে সব সরকারি, বেসরকারি, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসায় নজর দিন; যাতে একটি ছেলেও জঙ্গিবাদের ভ্রান্ত ধারণায় না জড়ায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আলোচনা সভায় বিএনপিকে জঙ্গিদের দোসর উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা দেশে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। তাদের হাতে সাম্প্রদায়িক বিষের বাঁশি। জঙ্গিযুদ্ধে জিততে হলে তাদের দোসর, জঙ্গি উৎপাদনের কারখানা খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে ধ্বংস করতে হবে।
ইনু বলেন, খালেদা জিয়া এবং তার দল বিএনপিকে জঙ্গি, জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের কথা জিজ্ঞাসা করলেই তারা বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। এর জন্য জঙ্গিদের মা খালেদা জিয়া সম্পর্কে আগে পরিষ্কার হতে হবে। জঙ্গি, জামায়াত এবং যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে বিএনপি ও খালেদা জিয়ার নাম ঐক্যের খাতা থেকে কাটা পড়েছে। এখন আর কোনো মিটমাটের জায়গা নেই, একাত্তরের মতো তাদের ধ্বংস করে দিতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সভাপতি নৌ-মন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, আইডিইবির সভাপতি একেএমএ হামিদ, সংগঠক ইসমত কবীর গামা প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।