Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন

এসএমই খাত পুনরুদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনা মহামারীর কারণে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বাংলাদেশের এসএমই খাত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ খাতের পুনরুদ্ধারে প্রয়োজন একটি সৃষ্টিশীল ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, যার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ও অর্থায়ন প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন করা যাবে এবং একুশ শতকের ব্যবসায় প্রেক্ষাপটে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলো মোকাবেলা করা যাবে। গতকাল রিসারজেন্ট বাংলাদেশ প্লাটফর্ম আয়োজিত ভার্র্চুয়াল সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়‚ন বলেন, সিএমএসএমই খাতের জন্য একটি সমন্বিত ডেটাবেজ প্রস্তুত করতে হবে। সিএমএসএমই খাতের প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতাধীন ঋণ সুবিধা পৗছাতে সহায়তা করবে একটি পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেজ। এসএমইকে অর্থনীতির চালিকাশক্তি উল্লেখ করে তিনি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরিতে সমন্বিত উদ্যোগ, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এসএমই খাতের পণ্যে বৈচিত্র্যকরণ, ঋণ বিতরণে শক্তিশালী মনিটরিং, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও করোনার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাঁটাই নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

বিল্ডের চেয়ারপার্সন আবুল কাসেম খান বলেন, করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এসএমইরা। এসএমইদের বর্তমান অবস্থার কোন পরিবর্তন না হলে বেকারত্ব বেড়ে যাবে এবং অর্থনীতি আকস্মিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

সংলাপে ‘কোভিড-১৯ ইকোনমিক ক্রাইসিস এ্যান্ড এসএমইজ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক কিনোট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বিল্ডের সিইও ফেরদৌস আরা বেগম। তিনি তাঁর প্রেজেন্টেশনে মহামারীর কারণে উদ্ভূত চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ।

বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মনজুর হোসেন বলেন, এসএমইরা ব্যবসা থেকে বের হয়ে গেলে তাদের ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। এসএমইদের রিটেইন্ড আর্নিংস কম হলেও, তারাই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, করোনা দেশের কর্মসংস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তা বাস্তবায়নে ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে, কেননা ব্যাংকগুলোর পক্ষে একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ের বেশি কিছু করা সম্ভব নয়।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম বলেন, সরকার তৈরি পোাশাক খাতের শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ বিতরণের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। একই ধরনের উদ্যোগ এসএমই খাতে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও গ্রহণ করা যেতে পারে।
এমসিসিআই প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের আকারের মধ্যকার বড় ধরনের পার্থক্যকে উপেক্ষা করে প্রায় সময় খাত দুটিকে একই শ্রেণীভুক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভবিষ্যতে এ বিষয়টিকে বিবেচনায় আনতে হবে।

ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, এসএমই খাতের সঙ্কট মোকাবেলায় খাতটির জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
ক্রিয়েশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল করিম মুন্না বলেন, অনানুষ্ঠানিক এসএমই খাতকে আনুষ্ঠানিক ও প্রথাগত ফিন্যান্সিয়াল চ্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।তরঙ্গের সিইও কোহিনূর ইয়াসমীন এসএমইদের সহায়তায় একটি গ্র্যান্ট উন্নয়নে উন্নয়ন সহযোগীদের একটি নির্দিষ্ট প্লাটফর্মে আসার পরামর্শ দেন। সাবেক মুখ্য সচিব ও পিকেএসএফের সাবেক প্রধান আবদুল করিম বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের সঠিক ব্যবহার এবং বিএসসিআইসি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রদানকৃত সুপারিশ শিগগিরই বাস্তবায়ন করতে হবে।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসিরুদ্দিন বলেন, এসএমইদের জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স ও টার্নওভার ট্যাক্স তুলনামূলক বেশি। দুই ধরনের ট্যাক্সই কমানোর বিষয়ে বিবেচনা করতে হবে। ব্যাংক ঋণের সুদহারও কমাতে হবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের ‘ক্রেডিট হোলসেল প্রোগ্রাম’ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ