পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটার ক্যাম্পাসের কার্যক্রম ও দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করায় বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। অনিয়ম-দুর্নীতি ও ‘সনদ বাণিজ্যের’ অভিযোগ ছাড়াও মূলত মালিকানা দ্বন্দ্বের কারণেই দীর্ঘদিন ধরেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টির বিষয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন ছিল। তবে হঠাৎ করেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করে দেয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বা তাদের শিক্ষা জীবন নিয়ে কোন ধরনের সিদ্ধান্ত না নিয়েই দারুল ইহসান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। বিশেষ করে যাদের শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার পথে ছিল তাদের শিক্ষা জীবনের ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে দেয়া হবে সে বিষয়েও চিন্তিত তারা। একই অবস্থা আউটার ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদেরও। যদিও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষতির দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা করে দাবি করতে পারবে বলেও জানান মন্ত্রী। গতকাল (বুধবার) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০১৬’ এর দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ একথা বলেন। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম (আউটার ক্যাম্পাসসহ) বন্ধ ঘোষণা করে গত সোমবার আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটার ক্যাম্পাসও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আইন লঙ্ঘনের জন্য দারুল ইহসান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ জন্য যার যে ক্ষতি হয়েছে সে ক্ষতির সমস্ত দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। যে ছাত্রের লেখাপড়া মাঝপথে থেমে গেছে তার জন্য সে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা দাবি করতে পারবে। সেটা পেলে সে অন্য জায়গায় পড়তে পারবে। এ ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা করব, যাতে সে অন্যখানে পড়তে পারে।’ দারুল ইহসান ও আউটার ক্যাম্পাস বন্ধ করার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আইনেই (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০) আছে কেউ আউটার ক্যাম্পাস করতে পারবে না। পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে সেখানে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করবে। সে যদি তার ক্যাম্পাস, ভিসিকে না চেনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সম্পর্কে পরিচিত না হয়, রাজশাহী থেকে একটা সার্টিফিকেট পেয়ে গেল, এতে পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা হলো না।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় একটাই হবে, এটা হবে অখ- জমির মধ্যে।’ আইন অমান্য করে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এগুলো করেছে। বন্ধ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টি এগুলো অসংখ্য খুলে রেখেছে। নানা ধরনের সার্টিফিকেট ব্যবসা করছিল। আমরা বন্ধ করে দিয়েছিলাম, তারা আবার স্টে (স্থগিতাদেশ) নিয়ে টিকে ছিল। এখন হাইকোর্ট সরাসরি রায় দিয়েছেন, জরিমানা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন।’ নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এগুলো কেউ চালু করতে পারবে না। আইনগতভাবে করা হয়েছে, দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার নয়। আইনে সেটা স্পষ্ট আছে, তারা আইন লঙ্ঘন করেছিলেন। আইন লঙ্ঘন করার কারণেই এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘বেআইনি কাজ করার জন্য যে শাস্তি হয়েছে আমি মনে করি আমাদের এটা হাইকোর্টের দূরদর্শিতা। আমরা খুবই শ্রদ্ধাশীল ও তাদের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ‘আপনারা ছেলেমেয়েকে ভর্তির আগে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জেনে নেবেন।’ অননুমোদিত শাখা ও ক্যাম্পাস পরিচালনা, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা বিচারাধীনসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও সমস্যায় জর্জরিত ছিল দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি যত্রতত্র শাখা খুলে সনদ বাণিজ্য ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকরা চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে চারটি মূল ক্যাম্পাসসহ অসংখ্য আউটার ক্যাম্পাস পরিচালনা করে আসছিল। বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২৫ অক্টোবর বিচার বিভাগীয় একটি কমিশন গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধের সুপারিশ করে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি অর্থের বিনিময়ে সনদ বিক্রি করছে এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করেছে। পরে আদালতে যায় বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভক্ত মালিকরা। অবশেষে সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বন্ধ করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।